যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অনুসন্ধান যান ওসাইরাস-রেক্স ঐতিহাসিক অভিযান শেষে উৎক্ষেপণের সাত বছর পর বেন্নু গ্রহাণুর ‘মাটি’ নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে ।
রবিবার স্থানীয় সময় সকালে গ্রহাণুর মাটিসহ যানটির বিশেষ ক্যাপসুল যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যের মরুভূমিতে ল্যান্ড করে।
রবিবার এ খবর জানায় বার্তাসংস্থা আল জাজিরা এবং রয়টার্স।
এ পর্যন্ত মহাকাশের কোনো গ্রহাণু থেকে সংগ্রহ করা এটাই সবচেয়ে বড় নমুনা। আর নাসা এই প্রথম কোনো গ্রহাণুর নমুনা সংগ্রহ করল। তাই মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই একে খুব বড় সাফল্য হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
সাত বছর পর গ্রহাণুর মাটি নিয়ে ফিরলো নাসার ক্যাপসুল
ক্যাপসুলটি উটাহ অঙ্গরাজ্যে অবতরণের পর প্রথমেই এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
ক্যাপসুলে থাকা গ্রহাণুর নমুনাগুলো সোমবার হিউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারের একটি নতুন ল্যাবে পাঠানো হবে। ল্যাবটিতে প্রায় ৪০০ কেজি (842lb) চাঁদের শিলা রয়েছে যা প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে অ্যাপোলো মহাকাশচারীদের দ্বারা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
সাত বছর পর গ্রহাণুর মাটি নিয়ে ফিরলো নাসার ক্যাপসুল
মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী, অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দান্তে লরেটা নমুনাগুলির সাথে টেক্সাসে যাবেন। হিউস্টনে ক্যাপসুল খোলার পর জানা যাবে সব তথ্য। আশা করা হচ্ছে, নমুনাটির মাধ্যমে ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে সৌরজগতের গঠন এবং আমাদের পৃথিবীতে কীভাবে জীবন শুরু হয়েছিল তা সম্পর্কে নতুন অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে।
এর আগে জাপানের মহাকাশযান দু’বার গ্রহাণু থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরেছিল। তবে বেন্নু থেকে ওসিরিস এক্স-এর আনা নমুনার তুলনায় তা ছিল খুবই কম।
১৯৯৯ সালে বেন্নু গ্রহাণু প্রথমবারের মতো আবিষ্কৃত হয়। এটি ছোট একটি গ্রহাণু। এই গ্রহাণুর বিশদ জানতে ওসিরিস রেক্স নামক মহাকাশযান পাঠিয়েছিল নাসা। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বেন্নুর মাটি খুঁড়ে নমুনা সংগ্রহ করেছিল ওসিরিস।
সাত বছর পর গ্রহাণুর মাটি নিয়ে ফিরলো নাসার ক্যাপসুল
এই গ্রহাণু একটি ধ্বংসস্তূপের মতো পাথরের আলগা সংগ্রহ দিয়ে তৈরি বলে মনে করা হয়। প্রতি ছয় বছরে একবার পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসে গ্রহাণুটি। এটি নিউ ইয়র্কের সুউচ্চ এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের উচ্চতার (৪৪৩ মিটার) চেয়েও বড়। আগামী শতাব্দীর শেষের দিকে এর পৃথিবীতে আঘাত হানার ক্ষীণ একটি আশঙ্কা রয়েছে।
এটি প্রায় ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত করেছিল এবং ডাইনোসরদের নিশ্চিহ্ন করার পেছনে এই গ্রহাণু দায়ী বলছেন বিজ্ঞানীরা।
এদিকে বিজ্ঞানীদের শঙ্কা পৃথিবির দিকে ধেয়ে আসা এই বেন্নু গ্রহাণু আগামী শতাব্দীতে পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। আকারে ছোট হলেও এ ধরনের গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবীর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
পূর্বকোণ/এসি