সাগরের তলদেশে পড়ে থাকা ‘টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ’ দেখতে গত রোববার আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে যায় একটি ডুবোজাহাজ। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই এটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখন জাহাজটি খুঁজে বের করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
সোমবার (১৯ জুন) সিবিএসের সাংবাদিক ডেভিড পোগ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, অতল গভীরে হারিয়ে যাওয়া ডুবোজাহাজটির ভেতর যারা আছেন, যদি তাদের খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে তারা কেউই বের হতে পারবেন না। কারণ বাইরে থেকে বেশ শক্তভাবে এটি বন্ধ করা আছে। যা ভেতর থেকে খোলা সম্ভব নয়।
ডেভিড পোগ গত বছর এ ডুবোজাহাজে করে টাইটানিক জাহাজটি দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছে, জাহাজটি খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি উদ্ধারকারীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
সাংবাদিক ডেভিড পোগ আরও জানিয়েছেন, যাত্রীদের বেশ কয়েকটি ভল্টের মাধ্যমে বাইরে থেকে আবদ্ধ করা হয়েছে এবং এগুলো বাইরে থেকেই খুলতে হবে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ওশেনগেটের টাইটান ডুবোজাহাজটিতে যে পোগ্রাম রয়েছে, জাহাজটি পুনরায় ভাসিয়ে তুলতে, এই পোগ্রামের আলাদা সাতটি কাজ রয়েছে এবং এটি ‘খুবই চিন্তার বিষয়’ যে এসব পোগ্রামের একটিও এখন পর্যন্ত কাজ করেনি।
যদি ডুবোজাহাজটি কোথাও আটকে যায় এবং লিক হয়ে পানি ঢুকে যায় তাহলে এটি উপরে ভাসানো যাবে না বলে জানিয়েছেন পোগ।
তিনি বলেছেন, ‘এটিতে কোনো ব্যাকআপ নেই, বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই। জাহাজটিকে ভেসে ওঠতে হবে অথবা যাত্রীদের মৃত্যুবরণ করতে হবে।’
উদ্ধারকারীরা এখন সময়ের সঙ্গে পাল্টা দিয়ে ডুবোজাহাজটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এটিতে সাধারণত চারদিনের অক্সিজেন মজুদ থাকে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড।
পানির নিচে জিপিএস অথবা রেডিও সিগন্যাল কাজ করে না। যার অর্থ এ মুহূর্তে ডুবোজাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো উপায়ই নেই। যা উদ্ধারকাজ আরও কঠিন করে দিয়েছে।
যখন কোনো সহায়তাকারী জাহাজ—ডুবোজাহাজটি উপরে থাকে তখন এটির কাছে বার্তা আদান-প্রদান করা যায়। কিন্তু বর্তমানে ওই ডুবোজাহাজ থেকে কোনো ফিরতি বার্তা আসছে না।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ছাড়াও অন্যান্য দেশের উদ্ধারকারীরা এখন ‘ট্রাকের সমান’ ডুবোজাহাজটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
এই ডুবোজাহাজে করে আটদিনের জন্য পানির নিচে গেলে একেকজন ট্যুরিস্টকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার খরচ করতে হয়। জানা গেছে, এবার জাহাজটিতে করে টাইটানিক জাহাজ দেখতে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ বিলিয়নিয়ার হামিস হার্ডিং। সূত্র: বিবিসি
পূর্বকোণ/এসি