চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ রাত লাইলাতুল কদর সমাগত

রায়হান আজাদ 

১৬ এপ্রিল, ২০২৩ | ১:১৬ অপরাহ্ণ

লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত্রি হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামত। ইসলামে এ রাত্রির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। পবিত্র কুরআনুল কারিমে এ রাতের গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ পাক একটি  ছোট্ট সুরা নাজিল করেন। লাইলাতুল কদর রমজান মাসে হওয়ায় পুরো মাসের গুরুত্বও অনেকখানি বেড়ে গেছে। সুরাতুল কদরে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, “১. আমি একে (আল কুরআনকে) নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। ২. হে নবী, আপনি কি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানেন? ৩. লাইলাতুল কদর  হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ রাত। ৪. এতে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ এবং রূহ (জিবরাইল আমিন) অবতীর্ণ হন তাঁর পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। ৫. এ রাতের প্রত্যেকটি বিষয়ে রয়েছে শান্তি; ভোর পর্যন্ত তা বিদ্যমান থাকে।”

এ সুরাটি নাজিলের একটি প্রেক্ষাপট রয়েছে। একদা নবী করিম (সা.) সাহাবিদের কাছে বনী ইসরাঈলের জনৈক মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন যিনি এক হাজার মাস পর্যন্ত আল্লাহর পথে জিহাদে মশগুল থাকেন। কখনো ক্লান্তি প্রদর্শন করেননি। মুসলমানগণ এ কথা শুনে বিস্মিত হলে সুরা কদর নাজিল হয়। অন্য একটি বর্ণনা মতে, বনী ইসরাইলের চারজন ইবাদতগুজার ব্যক্তি প্রত্যেকে ৮০ বছর ধরে সর্বক্ষণ আল্লাহ পাকের ধ্যানে কাটান। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম বিস্ময় ও হতাশা ব্যক্ত করেন। কারণ তারা সে জামানার ইবাদতকারী লোকদের মত দীর্ঘ হায়াত লাভ করেন না। তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআন নাজিলের এ রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ঘোষণা দিয়ে আলোচ্য সুরাটি নাজিল করেন।

লাইলাতুল কদরে আল কুরআন নাজিল হওয়া প্রসঙ্গে একইভাবে আল কুরআনের সুরা দুখানে এসেছে, “হা-মীম, শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। নিশ্চয় আমি আল কোরআন নাজিল করেছি এক বরকতময় রজনীতে। নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থির হয় (সুরা আদ্ধসঢ়; দুখান, আয়াত : ১-৪)।”

লাইলাতুল কদর তথা সৌভাগ্য রজনীর শব্দগত তাৎপর্য নিয়ে দুটি মত রয়েছে। কেউ বলেছেন, এখানে কদর অর্থ তাকদির ও আদেশ, আবার কেউ বলেছেন, কদর মানে সম্মান। দুটি অর্থই বিশ্লেষণ করে বলা যেতে পারে যে, যে ব্যক্তি ইতোপূর্বে ইবাদত বন্দেগি করে কদর বা সম্মানের অধিকারী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে সে ব্যক্তি এ রাতে তাওবা-ইস্তিগফার-অনুশোচনা এবং ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক ইবাদত করলে কদর বা সম্মানের অধিকারী হতে পারবেন।  কদর শব্দের অর্থ তাকদির বা আদেশ এজন্য যে এ রাতে পরবর্তী এক বছরের অবধারিত বিধিলিপি দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপক ও প্রয়োগকারী ফেরেশতাদের হস্তান্তর করা হয়। এতে বান্দার রিজক, বয়স, জন্ম-মৃত্যু-বৃষ্টি সবই লিখে দেয়া হয়। প্রধান প্রধান ফিরিশতাগণ এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট