চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হাটহাজারীকেন্দ্রিক থাকবেতো হেফাজতের নেতৃত্ব?

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৪:১৪ অপরাহ্ণ

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নেতৃত্ব হাটহাজারীকেন্দ্রিক থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বছরের পর বছর কওমী ধারার নেতৃত্ব হাটহাজারীর মাদ্রাসা কেন্দ্রিক থাকলেও শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর নেতৃত্বে কোন পথে যাচ্ছে তা জানতে আরো বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আদৌ হেফাজত পুনর্গঠন হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। তবে হেফাজতে আল্লামা আহমদ শফীর পরবর্তী প্রজন্মের কেউ আসছে না তা অনেকটা নিশ্চিত। শফীপুত্র আনাস মাদানী বর্তমানে হেফাজতের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। বাবার মৃত্যুর পর থেকে তিনি অনেকটা আত্মগোপনে আছেন।

টানা ৩৪ বছরের বেশি সময় ধরে হাটহাজারী মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তার নেতৃত্বে কওমীধারার আলেমসমাজ ছিল অনেকটা এক ছাতার নিচে। গতকাল বুধবার দুপুরে বড় ছেলে মাওলানা ইউসুপ বাবার দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত জিনিসপত্র হাটহাজারী মাদ্রাসার কক্ষ থেকে বের করে বাসায় নিয়ে যান। এতে আহমদ শফীর ব্যবহৃত কোন স্মৃতি হাটহাজারী মাদ্রাসায় থাকলো না।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানান, হুজুর (আল্লামা আহমদ শফী) সকলের মুরব্বি। তার পরবর্তী হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে কে আসবেন তা এখনো ঠিক হয়নি।
তবে আহমদ শফীর মৃত্যু পরবর্তী হেফাজতের নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলতে কওমী আলেমদের কেউ তেমন আগ্রহী নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হেফাজত নেতা জানান, রাজনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়ে কওমী আলেমদের তেমন আগ্রহ কখনো ছিলো না। রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের দক্ষতাও তেমন নেই তাদের। হাটহাজারী মাদ্রাসাসহ পরিচালকের দায়িত্বে বর্তমানে যে তিনজন আলেম রয়েছেন তারাও রাজনীতির পক্ষে নয়।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীরের দায়িত্বে রয়েছেন পটিয়ার মুফতী আহমদুল্লাহ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি রাজনীতির কিছু বুঝি না। ওসব বিষয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই। কিতাব নিয়ে থাকি-কিতাবই ভাল বুঝি।
হেফাজতের কমিটি নয়। এ মুহূর্তে পুনর্গঠন করা হবে হাটহাজারী মাদ্রাসার শূরা কমিটি। কওমী ধারার নেতৃত্বে হাটহাজারী মাদ্রাসা কেন্দ্রিক থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। হেফাজত আমীরের পদে কে আসছেন অথবা হেফাজতে ঠিক থাকবে কিনা তা জানতে অপেক্ষা করতে আরো কয়দিন। তবে শফীপুত্র আনাস মাদানির অনুসারী কেউ হেফাজত কিংবা মাদ্রাসার সাথে সম্পৃক্ত থাকছে না তা অনেকটা নিশ্চিত।
হেফাজতে ইসলামের একজন নেতা জানান, ১৫ বছর আগেও দাওরা হাদিস (মাস্টার্স) পড়ার তেমন কোথাও ব্যবস্থা ছিল না। সেই সময় অধিকাংশ ছাত্র শাহ আহমদ শফীর কাছে পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে দেশের অনেক কওমী মাদ্রাসায় দাওরা হাদিস রয়েছে। সেই সব মাদ্রাসায় পরিচালকের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে শতকরা ৯০ শতাংশ আল্লামা আহমদ শফীর ছাত্র। তিনি জীবিত থাকাকালে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পরবর্তীতে কে আসবে তার কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। তার মৃত্যুর পর এসব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের নেতৃত্বে কে আসবে তা নিয়েই মূলত আলেমদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট