চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভালো নেই সংবাদপত্র হকাররা

মরিয়ম জাহান মুন্নী

৪ মে, ২০২০ | ১০:১১ অপরাহ্ণ

সূর্যের আলো ফোটার আগেই মানুষের বাসা-বাড়ি, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যায় খবরের কাগজ। এ রুটিন প্রতি দিনেরই, বছরের নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন ছুটি ছাড়া বন্ধ নেই কোনো সরকারি ছুটিতেও। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি সবরকম পরিবেশেই নিরলস পরিশ্রম করে হকাররা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় খবরের কাগজ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের থাবা পড়েছে তাদের সেই কর্মব্যস্ত জীবনের উপরেও। বর্তমানে গৃহবন্দী জীবন কাটাচ্ছে শহরের প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি সংবাদপত্র হকার। বন্ধ রয়েছে পত্রিকা বিলি করার সেই দায়িত্ব। কারণ করোনাভাইরাসের প্রভাবে বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন অফিস-আদালত, ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও পত্রিকা নিয়ে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না শহরের বড় বড় এপার্টমেন্টসহ ছোট-বড় বাসা বাড়িতে। এতে বন্ধ রয়েছে তাদের পত্রিকা বিলির কাজ। কিন্তু দীর্ঘ দিনের এ বন্ধের কারণে অভাব-অনটনে দিন কাটছে অনেক হকারের। তার উপর চলছে রমজান মাস।
এ অবস্থায় তারা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না কারো কাছ থেকে। এছাড়াও আগের মাসের বকেয়া টাকা রয়ে গেছে বিভিন্ন অফিস-আদালতসহ পত্রিকার পাঠকদের কাছে।
চকবাজার এলাকার সংবাদপত্র হকার মো. হাসান ও মো. শহিদ বলেন, ‘সরকার, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সবাই কম বেশি সহযোগিতা পাচ্ছে। কিন্তু আমরা সাংবাদপত্রের হকারদের কথা যেন কারো মাথায় নেই। অথচ প্রতিটি নাগরিক জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ আমরা। আমরাই মানুষের দ্বারে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দিচ্ছি। কিন্তু আজ আমরা যে কষ্টে আছি এদিকে কারোই খেয়াল নেই। আমরাতো কাজ করতে চাইছি। কিন্তু আমরা কাজ করতে পারছি না। আমাদেরকে মানুষ তাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে পত্রিকা দেয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। আবার সবার কাছে বিগত মাসের বকেয়া বিলও রয়ে গেছে। সেই বিল নেয়ার জন্যও ঢুকতে দিচ্ছে না বাসা-বাড়িগুলোতে। এছাড়া যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পত্রিকা বিলি করছে তারাও বিল নিতে পারছে না। কারণ পাঠকরা আমাদের সাথে কথা বলতে ও টাকা দিতে চাইছে না’।
চট্টগ্রাম সংবাদপত্র বিক্রেতা লীগের সদস্য মো. নুর নবী বলেন, ‘কাজ নেই, কিন্তু পেটতো আর বুঝে না। সংসারে ছেলে-মেয়ে, মা-বাবা ও স্ত্রী রয়েছে। তাদেরতো খাওয়াতে হয়। তার উপরে বাড়ি ভাড়া আছে। এছাড়া দেশের এমন পরিস্থিতিতে চার দিকে নানারকম রোগব্যাধি লেগে রয়েছে। সবার জন্যই ওষুধপত্রও লাগে, আবার চলছে রমজান মাস। সবরকম দ্রব্যমূল্যের দামও আকাশ চুম্বী। কিভাবে যে আমরা চলছি এক মাত্র আল্লাই ভালো জানে। আমাদের জন্যও ভাবা উচিৎ সরকারের। তাহলে আমরাও এই মহামারীর বিপদ কাটিয়ে পরিবার নিয়ে খেয়ে বাঁচতে পারবো। তাই আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। সবার মত আমাদেরও একটি তালিকা করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া হোক’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট