চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নগরী লকডাউন

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

৭ এপ্রিল, ২০২০ | ৮:৪৫ অপরাহ্ণ

ঢাকা চট্টগ্রাম রাজশাহী
নারায়ণগঞ্জসহ বেশ
কয়েকটি শহর ও উপশহর লকডাউন

গতকাল সোমবার ১০টা থেকে চট্টগ্রাম মহানগরী লকডাউন হয়ে গেছে। নগরীর পাঁচ প্রবেশমুখে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। সিএমপির সিদ্ধান্ত অনুসারে জরুরি সেবা ব্যতীত কোন লোক নগরী ত্যাগ এবং বাহির থেকে কেউ নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না। পরবর্তী নিদের্শ না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্র্রোপলিটন পুলিশ।

নগরীতে প্রবেশের পাঁচ পয়েন্ট হচ্ছে সিটি গেট, অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত ব্রিজ, কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও কালুরঘাট সেতু। জরুরি সেবার আওতায় থাকবে সংবাদপত্র, চিকিৎসা সেবা, ভোগ্যপণ্য ও রপ্তানিকাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহন। সিএমপির নির্দেশনা অনুসারে সন্ধ্যা ৬টার পর ওষুধের দোকান ব্যতীত সব দোকান বন্ধ থাকবে।

এদিকে বাংলাদেশের যেসব এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে সেসব ও পার্শ্ববর্তী এলাকা সম্পূর্ণ লকডাউন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়ি গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর এ নিদের্শনার পরেই চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ-সহ বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহর লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। রাজধানী ঢাকা অবশ্য একদিন আগেই লকডাউন করা হয়েছিল। এ সব শহর থেকে বিশেষ জরুরি কাজ ছাড়া নাগরিকদের বাইরে যাতায়ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, গতকাল থেকে বাংলাদেশের সব মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায়ে ৫ জন ও জুমার নামাজে ১০ জন অধিক ব্যক্তির জরো হওয়ার ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে জানায়, এই সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। একইসঙ্গে, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে পরবর্তি দিন সকাল পর্যন্ত কাঁচা বাজার ও সুপারশপে কেনাকাটা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে দেশের যেসব এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সেসব এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা সম্পূর্ণ লকডাউন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঢাকার বাইরে যেতে না পারেন এবং ঢাকায় কেউ ঢুকতে না পারেন, সেই নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এই সময়ের মধ্যে দেশের সব গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শুধু যেসব কারখানায় পিপিই, মাস্ক ও জরুরি মেডিকেল সরঞ্জাম উৎপাদন করা হয়ে থাকে, সেগুলো খোলা থাকবে। এ ছাড়া যেসব বন্দি দীর্ঘদিন ধরে কারাভোগ করছেন এবং লঘু অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত, তাদের মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে বাংলাদেশে এদিন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে ১৫ জেলায় সর্বমোট ১২৩ জন করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে রাজধানী ঢাকা থেকে। এরপরেই নারায়ণগঞ্জে ২৩ জনের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়। আর এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ১৩ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৩ জন। এদিন, মারা যাওয়া ৪ জনের মধ্যে একজন হচ্ছেন সরকারের উপ সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পরিচালক হিসেবে কর্মরত পরিচালক জালাল সাইফুর রহমান।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে সংক্রমণ বেড়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট