চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঝুঁকিতে মাছ ঘাটের শ্রমিকেরা

নাজিম মুহাম্মদ

৬ এপ্রিল, ২০২০ | ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

  • সারাদেশে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ঘাটের কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে : জেলা প্রশাসক

দেশে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে করোনার ঝুঁকিতেও কাজ করছে হাজারো নারী-পুরুষ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যথারীতি শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। কেউ মাঝ নদীতে থাকা জাহাজ থেকে ইঞ্জিন বোটে মাছ তুলছে আবার কেউ নৌকা থেকে প্যাকেটভর্তি মাছ মাথায় তুলে নিয়ে যাচ্ছে হিমাগারে। অনেকে কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে থাকা ট্রলার থেকে সরাসরি ইঞ্জিন বোটে মাছ নিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলায়। এ যেন প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিক চিত্র। গতকাল (রবিবার) নগরীর সদরঘাটের কর্ণফুলী ঘাট ও কোতোয়ালী থানার ফিশারিঘাটে গিয়ে এ চিত্রের দেখা মেলে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, সারাদেশে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চট্টগ্রামের ফিশারিঘাট, কর্ণফুলী ঘাটসহ নগরীর বিভিন্নঘাটের কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। করোনার ঝুঁকি এড়াতে শ্রমিকদের সচেতন রাখার বিষয়ে আমরা নজরদারি রেখেছি।
জেলা প্রশাসক বলেন, খাদ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না থাকলে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। আর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেলে মানুষের মাঝে অস্থিরতা বেড়ে যাবে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে দাম স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কোথাও দাম বেশি নিচ্ছে এমন সংবাদ পেলে সাথে সাথে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, জাহাজ থেকে মাছ উত্তোলনের ঘাট কিংবা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের মতো জায়গাগুলোতে কখনো কাজ বন্ধ করা যাবে না। কারণ চট্টগ্রামের এসব স্থান থেকে সারাদেশের খাদ্যের চাহিদা মেটানো হয়। তবে কোন গলিতে কিংবা অহেতুর কোন লোক জড়ো হয়ে আড্ডা দিচ্ছে এমন খবর ফেলে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।
কর্ণফুলী ফিশ মার্কেট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সামুদ্রিক মাছ রপ্তানিকারক শাহেদুল রহমান শাহেদ জানান, করোনার ঝুঁকিতেও সাগরে মাছ ধরা বন্ধ নেই। কর্ণফুলী ঘাট থেকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার টন সামুদ্রিক বিভিন্ন মাছ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। গড়ে পাঁচটি ফিশিং ট্রলারে প্রতিদিন মাছ নিলাম হচ্ছে। এক একটি ট্রলারে একশো থেকে দেড়শো টন মাছ থাকে।
দেশের অধিকাংশ এলাকায় নি¤œ মধ্যবিক্ত ও প্রান্তিক মানুষের সামুদ্রিক মাছের চাহিদা পূরণ হয় কর্ণফুলী ঘাট দিয়ে উঠা মাছের মাধ্যমে। বিশেষ করে ঢাকার আবদুল্লাহপুর, গাজিপুর, বাইসেল, যাত্রাবাড়ি, সোয়ারিঘাট, গাবতলি, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, বগুড়ার মহাস্থানগড়, নীলফামারি, খুলনা, বরিশাল, সিলেটসহ বিভিন্ন এলকায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ঘাট থেকে মাছ সরবরাহ করা হয়। নি¤œবিত্ত ও প্রান্তিক মানুষের সামুদ্রিক মাছের চাহিদা মেটাতে চট্টগ্রাম থেকে মাছের সরবরাহের বিকল্প নেই।
মাছ রপ্তানিকারক শাহেদুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রে মাছ তেমন বেশি ধরা পড়ছে না। অধিকাংশ ফিশিং ট্রলারে আশানুরূপ মাছ ধরা না পড়ায় লোকসানও দিচ্ছে। তারপরও আমরা সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছি। যাতে বাজারে কোন ঘাটতি না হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট