চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি ৬০ বছরেও

সিলিমপুর সিডিএ আবাসিক নেই গ্যাসসহ আধুনিক সুবিধা স্কুলের জায়গা, জলাশয় ও পাহাড়ে প্লট ১২৭৮টি প্লটে মাত্র ৪০-৫০টি বাড়ি

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু-

১০ মার্চ, ২০২০ | ২:১৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের সীতাকু-ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আওতাধীন সিলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকায় উল্লেখযোগ্য কোন উন্নয়ন হয়নি দীর্ঘ ৬০ বছরেও! এখানে ১২৭৮টি প্লট থাকলেও নেই কোন গ্যাস সংযোগ। উন্নয়ন হয়নি রাস্তা-ঘাটেরও। ফলে এত বিশাল এলাকায় বাড়ি নির্মাণ হয়েছে মোটে ৪০-৫০টি! অন্যদিকে এ অবস্থার পরিবর্তন না ঘটিয়ে উল্টো পরিকল্পিত এলাকার নকশার বাইরে গিয়ে স্কুলের জায়গা, শিশুপার্কের জায়গাসহ পাহাড় কেটে নতুন নতুন প্লট নির্মাণ করছে কর্তৃপক্ষ। প্লট বরাদ্দের পরিকল্পনা চলছে একমাত্র প্রাকৃতিক লেকটি ভরাট করেও। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের মানুষের আবাসন সমস্যা দূর করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ১৯৬০-৬১ সালে সীতাকু-ের সলিমপুর ইউনিয়নের পাহাড়ের তলদেশে গড়ে তোলে সিলিমপুর সিডিএ নামক আবাসিক এলাকা। সেসময় ১২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা প্রকল্পটি ছিলো সিডিএর সর্ববৃহৎ আবাসিক প্রকল্প। এরপর সেখানে প্লট বরাদ্দ শুরু হলে ১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ২০০২ সালে ১৯৬ একর জায়গায় ‘এ’ ও ‘বি’ ব্লকে ১ হাজার ২০৮টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। সেসময় এটি একটি আধুনিক আবাসিক এলাকা হবে বলে আশ^স্ত করা হলেও কালক্রমে সেখানে সিডিএর তেমন কোন উন্নয়ন কাজ দেখা যায়নি। প্লট বরাদ্দ দিলেও দেওয়া হয়নি কোন গ্যাস সংযোগ। গড়ে উঠেনি স্কুল, শিশুপার্কসহ নকশায় থাকা সৌন্দর্যবর্ধনের কিছুই। ফলে শুরু থেকেই এখানে প্লট গ্রহীতারা বাড়ি নির্মাণে আগ্রহ হারাতে থাকেন।
সিলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সভাপতি আরজু খান বলেন, সিডিএর মত প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০ বছরের একটি আবাসিক এলাকায় এখনো গ্যাস সংযোগ নেই, রাস্তাগুলোর কাংখিত উন্নয়ন নেই। এসব কারণে বাড়ি নির্মাণ হয়েছে মোটে ৪০-৪৫টি। সেসব দিকে নজর না দিয়ে সিডিএ শুধু প্লট বিক্রি করছে। ২০১৪ সালেও এখানে স্কুলের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা, শিশুপার্কের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা, খেলার মাঠ, কবরস্থান সব নির্ধারিত স্থানে প্লট করে বিক্রি করেছে। পাহাড় কাটা হয়েছে নির্বিচারে। এখন আবার এলাকার পূর্ব দিকে অবস্থিত একমাত্র জলাশয় প্রাকৃতিক লেকটিকে ভরাট করে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটকে প্লট বরাদ্দ দেবার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এই লেক ভরাট হলে ভবিষ্যতে অগ্নিকান্ডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনে এখানে পানি সংকটে বিপদে পড়বে স্থানীয়রা। এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। এটি কাউকে বরাদ্দ না দিয়ে সংরক্ষণ করার জন্য জোর দাবী জানান তিনি। এদিকে সিডিএর এই প্রকল্প নিয়ে হতাশ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মো. সালাউদ্দিন আজিজ। তিনি বলেন সিডিএ আমার এলাকার অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে সিলিমপুর আবাসিক এলাকা গড়ে তোলে। দেশ স্বাধীন হবার আগে এই প্রকল্পটি গ্রহন করে স্বাধীনের পর এটি বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এখানে কোন নাগরিক সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়নি। উল্টো অবহেলা অনাদরে, নিরাপত্তাহীনতায় থাকায় অনেক অপকর্ম হয় রাতের আঁধারে। তাই এখানে বিশাল এলাকায় বাড়ি করতে চায় না কেউ। এ দিকে সিডিএর দ্রুত দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. হাসান বলেন, সিডিএ ম্যাজিস্ট্রেট একটি প্লটের জন্য আবেদন করেছেন। প্লটটি লেকের পাড়ে পরিত্যক্ত জায়গায়। আমরা তা দেখেছি এবং পরিমাপ করেছি। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। লেক বা পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট