বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্যামা পূজা ও দীপাবলী আজ বৃহস্পতিবার। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সাধারণত কালীপূজা বা শ্যামাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। শক্তি ও শান্তির দেবী শ্যামা মায়ের আগমনে হিন্দু স¤প্রদায়ের ঘরে ঘরে এখন আনন্দ-উচ্ছ্বাস।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, কালী দেবী দুর্গারই আরেকটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে ‘শ্যামা’, ‘আদ্য মা’, ‘তারা মা’, ‘চামুণ্ডি’, ‘ভদ্রকালী’, ‘দেবী মহামায়া’সহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। কালীপূজার দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। একে বলা হয় দীপাবলি।
দিনভর উপবাসের পর রাতে অনুষ্ঠিত হবে শ্যামা মায়ের পূজা। হিন্দু লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামে শ্মশানকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। গোলপাহাড়, সদরঘাট, কাটগড়, উত্তর কাট্টলী, পাঞ্জাবি লেনসহ বিভিন্ন মন্দিরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শ্যামাপূজা। মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ : মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে জেএম সেন হলে নানা ধর্মীয় আয়োজনে পালিত হবে পূজা। এরমধ্যে রয়েছে সমবেত প্রার্থনা, ঢাক-ঢোলের মাধ্যমে মায়ের আরতি, মায়ের পূজা, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান। পরিষদের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে শ্যামাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে উৎসবে সকলকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এড. নিখিল কুমার নাথ।
পাশাপাশি শ্যামাপূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপন করতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, আনসারসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন, তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। তারা জানান, শ্যামাপূজাকে সফল ও স্বার্থক করার জন্য প্রশাসন ও নগরীর প্রত্যেক মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক, সিসি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত পরিমাণ আলোকায়ন ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেকোন প্রয়োজনে নগরীর ০১৮৩৪৫২৮৪২৬, ০১৮১৮০৯৯৬৯২, ০১৭১৪৪০৮৭৪৯, ০১৮১৯৬১৬০২৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গোলপাহাড় কালী মন্দির : গোলপাহাড় মহাশ্মশান পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে শ্যামাপূজার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে মায়ের আহ্বান ও বাল্যভোগ, সমবেত গীতা পাঠ, চণ্ডীপাঠ, শ্যামা সঙ্গীত, মায়ের পূজা ও ভোগ নিবেদনসহ নানা আয়োজন। ধর্মসম্মেলনের উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী শক্তিনাথানন্দজী মহারাজ। প্রধান বক্তা থাকবেন পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
ধর্মতত্ত্ব পরিবেশন করবেন নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শ্রীপাদ তারা নিত্যানন্দ প্রভু ও ধর্মতত্ত্ববিদ উত্তম কুমার চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য সভাপতি দোদুল কুমার দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ দাশ অনুরোধ জানিয়েছেন।
পূর্বকোণ/ইব