চট্টগ্রাম রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামের ৬০ গ্রামসহ সারাদেশে সহস্রাধিক গ্রামে ঈদুল ফিতর পালিত

চন্দনাইশ সংবাদদাতা

১০ এপ্রিল, ২০২৪ | ৪:০০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ ও সাতকানিয়া মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬০ গ্রামসহ সারাদেশে সহস্রাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফি মাজহাবের মতে বিশ্বের যে কোন দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে প্রায় দুইশত বছর পূর্ব হইতে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাসহ সকল মুসলিম ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে আসছে।

 

সৌদি আরবের সাথে সঙ্গতি রেখে বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া রবার শরীফ মাঠে এবং সাতকানিয়া মির্জাখীল দরবার শরীফ মাঠে সকাল ৯টায় পৃথক পৃথক ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।

 

জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফে ঈদ জামাতে ইমামতি করেন দরবার শরীফের পীরে কামেল আলহাজ মাওলানা হযরত শাহ্ছুফি সৈয়্যদ মোহাম্মদ আলী শাহ্ (মা.জি.আ.)। এছাড়া দরবার শরীফ পরিচালিত ‘শাহ্সুফি মমতাজিয়া ইমাম কল্যাণ সোসাইটি’র উদ্যেগে দেশের বিভিন্ন জেলায় আরও দেড় শতাধিক মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।

 

চট্টগ্রামের যে সকল স্থানে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে চন্দনাইশের পশ্চিম এলাহাবা, কাঞ্চননগর, মাইজপাড়া, জুনিঘোনা, আব্বাস পাড়া, দিঘিরপাড়া, কাঞ্চন নগর স্টেশন, কেন্দুয়ারপাড়া, মাঝের পাড়া, দক্ষিণ কাঞ্চননগর, সৈয়দাবা, খুনিয়ার পাড়া, হাশিমপুর, কেশুয়া, সাতবাড়িয়া, মোহাম্মপুর, হারালা, বাইনজুড়ি, বরকল, বরমা, চৈধুরীপাড়া, কষাইপাড়া, ফকিরপাড়া, পটিয়ার মল্লাপাড়া, হাইদগাঁও, শ্রীমাই, কাগজিপাড়া, বিনানীহারা, শান্তিরহাট, কালারপুল, শিকলবাহা, চরকানাই, বাশঁখালীর জল, কালিপুর, গুনাগড়ি, গন্ডামারার মিঞ্জিরিতলা, ছনুয়া, সাধনপুর, আনোয়ারার তৈলার দ্বীপ, বাথুয়া, বারখাইন, বোয়ালখালির চরনদ্বীপ, খরনদ্বীপ, লোহাগাড়ার আমিরাবাদ, চুনতি, বরহাতিয়া, পুটিবিলা, উত্তর সুখছড়ি, আদুনগর, সাতকানিয়ার মির্জাখিল, বাংলাবাজার, মইশামুড়া, খোয়াছপাড়া, বাজালিয়া, কাঞ্চনা, গাঠিয়াডাঙ্গা, পুরাণগর, মলেয়াবাদ, রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া, খুরুশিয়া গ্রামসহ চট্টগ্রামের ৬০ গ্রামে ঈদুল ফিতরের পৃথক পৃথক জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

 

এছাড়াও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, মীরসরাই, হাটহাজারী, উখিয়া, বান্দরবান, আলী কদম এলাকায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় আড়াইশ বছর ধরে সৌি আরবের সময় অনুসরণ করে ঈদ, রোজা, কোরবানি পালন করে আসছেন এই রবারের অনুসারীরা। চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা বরিশাল জেলায় ৮০ গ্রামে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি পরিবার ঈ উৎসব পালন করবে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তিনটি জামায়াতের মধ্যে প্রধান ও বৃহত্তম ঈদুল ফিতরের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে ২৩নং ওয়ার্ডে “তাজকাঠি জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া জামে মসজিদ” প্রাঙ্গণে।

 

দরবার সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবারের দু’জন খলিফা হযরত আতিক উল্লাহ শাহ্ সাহেব (রঃ) এবং হযরত আবুল হোসেন (রঃ) প্রায় ১২৫ বছর পূর্ব থেকে অত্র এলাকায় তাহাঁদের পীরানে পীরের নির্শে ও মাজহাব মতে পৃথিবীর কোথাও চাঁদ খোর উপর ভিত্তি করে সকল মুসলিম ধর্মীয় কার্যক্রম পালন করে আসছেন।

 

বাকেরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরকাঠি গ্রামের সুন্দরকাঠি দরবার শরীফের শাহজাদা শেখ মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমার বাবা চট্টগ্রাম জেলার চ›নাইশ উপজেলার জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের একজন খলিফা ছিলেন। তিনি বলেন অত্র দরবারের কয়েক হাজার ভক্তবৃন্দ প্রতিবছর একই দিনে আমাদের উপরোক্ত’ দরবারের নিয়মানুসারে রোজা ও কোরবানির ঈদসহ সকল ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে আসছে।

 

উল্লেখ্য, প্রায় আড়াইশ বছর আগে সাতকানিয়া মির্জাখিল গ্রামে হযরত মাও. মোখলেছুর রহমান জাহাঁগিরি (রঃ) হানাফী মাজহাবের ফতোয়া অনুযায়ী পৃথিবীর যে কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলে রোজা, ঈদ, ঈদুল আজহাসহ সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করার ফতোয়া দিয়েছেন। তাঁরই উত্তরসুরি হযরত মাওলানা আবদুল হাই জাহাঁগীরির অন্যতম প্রধান খলিফা চন্দনাইশ শাহ্ছুফি দরবারের পীর হযরত মাওলানা শাহ্ছুফি আমজা আলী (রঃ) মুরিদ ও অনুসারিরা একই নিয়মে সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট