চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

উপকূল সুরক্ষিত হয়নি ৩২ বছরেও

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:৫৫ অপরাহ্ণ

স্বাধীনতার পর ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে ফেলেছিল বাংলাদেশকে। ওই এক ঝড়েই মৃত্যু হয়েছিল প্রায় দেড় লাখ মানুষের। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলের মানুষের জন্য ভয়ানক ওই রাতের ৩২ বছর পার হলেও এখনও সুরক্ষিত হয়নি উপকূল।

 

ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই দ্বীপের ১৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এখনও অরক্ষিত। প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে  ১৭ দশমিক ৪৮৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশন থেকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। পরে সেটির দৈর্ঘ্য কমিয়ে ৮ কিলোমিটার করে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবারো পাঠানো হয়েছে।

 

পুরোপুরি সুরক্ষিত হয়ে উঠেনি চট্টগ্রাম শহরের সাথে লাগোয়া সীতাকু-ের উপকূলীয় এলাকা। বরং নিয়মিত বৃক্ষ নিধন ও সংস্কার বিহীন বেড়িবাঁধের কারণে বর্ষা ও দুর্যোগপূর্ণ আবাহাওয়ায় আতঙ্কে এখনো নির্ঘুম রাত যাপন করেন স্থানীয়রা। এখানে যে বেড়িবাঁধ আছে সেটি ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ১৯ কি.মি. বেড়িবাঁধের মধ্যে ৪ কি.মি. প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

 

১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘ম্যারি এন’ তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় আনোয়ারা উপকূল। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষা আনোয়ারাকে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষায় উপকূল জুড়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেন ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ৫৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ভূমিমন্ত্রীর এই উদ্যোগে স্থানীয়দের মধ্যে আশার সঞ্চার হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রহমানিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং বেড়িবাঁধের ব্লক তৈরিতে সাগরের লবণাক্ত পানি ব্যবহারসহ নি¤œমানের ইট দিয়ে সড়কের কাজ করছে। মিঠা পানির পরিবর্তে লবণাক্ত পানি ব্যবহার করায় এসব ব্লকের স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

 

ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি থেকে বাঁচাতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশখালীর ৭টি ইউনিয়নে স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে ছনুয়া ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় এখনও আতঙ্কের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন এখানকার আট গ্রামের মানুষ । গত বছরও ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে ৮-১০ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট