চট্টগ্রাম রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঐতিহ্যের জলকদর এখন বিপন্ন

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ৫:৫০ অপরাহ্ণ

বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১৫২৫ সালে নুসরত শাহ আরাকানের কাছ থেকে চট্টগ্রাম পুনর্দখল করে খোদাবখশ্ খানকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শাসক নিয়োগ করেন। চকরিয়া ছিল তার শাসককেন্দ্র। গিয়াস উদ্দীন মাহমুদ শাহ’র রাজত্বকাল (১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর্যন্ত তা স্থায়ী হয়েছিল। (চট্টগ্রামের ইতিহাস, ড. আমহদ শরীফ)। বাঁশখালী নামক ভূ-খণ্ডটি খোদাবখশ্ খানের রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 

অন্যদিকে, ইতিহাস গবেষক ড. সুনীতি ভূষণ কানুনগোর মতে, ১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ’র শাসনামলে দেয়াঙে পর্তুগিজ বাণিজ্যকুঠির স্থাপন করে। বাঁশখালীর সমুদ্র তীরবর্তী অঙ্গারখালী নামক স্থানে আরেকটি পর্তুগিজ শহর ছিল। (বন্দর শহর চট্টগ্রাম, আবদুল হক চৌধুরী)।

 

পাহাড়, নদী ও সাগর ঘেরা বাঁশখালীর বাঁকে বাঁকে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস। অন্তত ৫শ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য। যার নিদর্শন, ঐতিহ্যের স্মৃতি নিয়ে ৪৫৫ বছর ধরে এখনো দাঁড়িয়ে আছে ইলশা গ্রামের বখশি হামিদ মসজিদ। বাঁশখালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য ও শিল্প-সংস্কৃতির ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে জলকদর খাল। কতো রাজা-বাদশা, জমিদার-জোতদার ও প্রজার ভ্রমণ আর স্মৃতিতে উজ্জ্বল্য হয়ে রয়েছে এই একটি খাল। জলকদরের সোনালি ইতিহাসের খোঁজে সরেজমিন দেখা হয়। কথা হয় নবীন-প্রবীণ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে।

 

খানখানাবাদ ইউনিয়নের রায়ছটা এলাকার প্রবীণ দুই ব্যক্তি মোহাম্মদ ইউনুছ (৭৫) ও ফয়েজ আহমদ (৭৮) জলকদর খাল নিয়ে বাল্য-শৈশবকালের স্মৃতি রোমন্থন করেন চৌধুরীঘাট সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে। ইউনুছ বলেন, ‘এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই জলকদর খাল। বড় বড় লঞ্চ-স্টিমার, নৌকা-সাম্পানযোগে চট্টগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করতো। দিন-রাত মুখর থাকতো চৌধুরীঘাট। এখন কিছুই নেই। দখল আর ভরাট হয়ে সরু ও মরা খালে পরিণত হয়েছে।’

 

আর ফয়েজ আহমদ বললেন, ‘জলকদর খালে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। ২০-২৫ কেজি ওজনের বোয়াল মাছ পাওয়া যেত। গরু চরাতে যাওয়ার সময় চিংড়ি ও ছোট মাছ ভূনা করে দিতেন মায়েরা। সেদিন এখন আর নেই।’ দেড়-দুইশ ফুট প্রস্থের খালটি কালক্রমে দখল ও খাল ভরাট হয়ে এখন ২৫-৩০ ফুটে দাঁড়িয়েছে- বললেন দুজনে। রায়ছটা সেতুর কিয়ংদূরে মিশেছে কুমারি খাল-ছড়া। পুকুরিয়া পাহাড় থেকে সৃষ্ট ছড়াটি এখানে এসে জলকদরে মিশেছে। এসময় চিড়া-চ্যাপ্টা খালে ঠেলেটুলে বাঁশের চালি ঢোকাচ্ছেন দুই ব্যক্তি। ভাটার সময় পানি কম থাকায় চালি, নৌকা-সাম্পান চলাচল করা যায় না। অপর দিকে দাঁড়িয়েছে ব্রিটিশ আমলের নির্মিত পরিত্যক্ত একটি সেতুর হাড্ডিসার।

 

রায়ছটা থেকে সোয়া কিলোমিটার গেলেই জলকদর আর সাঙ্গু নদীর মিলনস্থল। ঈশ্বরবাবুর হাট থেকে খানখানাবাদ ও সাধনপুরকে দু’ভাগ করে এখন থেকে বয়ে গেছে জলকদর। এই হাটকে বাঁশখালী ক্লিয়ারিং হাউস বলা হতো। বড় বড় সওদাগরি নৌকা ভেড়াতেন ব্যবসায়ীরা। ধান-চাল ও অন্যান্য পণ্য কিনে ফিরতেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ভাঙা-গড়ার খেলায় হাটটি বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। নামডাক ছাড়া হাটের অস্থিত্ব নেই।

 

ঈশ্বরবাবুর হাটে কথা হয় খালের তীরের জেলেপাড়ার বাসিন্দা কালি কুমার দাম, অনিল জলদাসের সঙ্গে। তারা বললেন, ‘সাঙ্গুর ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়ে অনেকেই উদ্বাস্তু হয়ে অন্য জায়গা চলে গেছে। মোহনায় দেড়-দুইশ ফুটের প্রশস্ত খালটি এখন ৪০-৫০ ফুট দাঁড়িয়ে আছে।’

 

ট্যাক্সি ও ব্যাটারি রিকশা চেপে খালের পাড় উজানের দিকে গেলে দেখা যায়, ঝোপঝাঁড় আর লতাগুল্মে খালের অস্তিত্ব পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ভরাট হয়ে জেগে ওঠেছে চর। চর ও বাঁধ দখল করে গড়ে ওঠেছে ঘরবাড়ি। বাহারছড়া ইউনিয়নের করিম বাজার এলাকায় খালের অস্তিত্ব নেই। প্রায় দেড়শ ফুট প্রশস্ত খালটি এখন তিন-পাঁচ ফুটে ঠেকেছে। দু’পাড় দখল করে গড়ে ওঠেছে ঘরবাড়ি, খামার ও নানা স্থাপনা। স্থানীয় বাসিন্দা আবু সালেহ (৭০) বলেন, ‘এই ঘাট থেকে লঞ্চে চড়ে আমরা শহরে যেতাম।’ একাধিক কয়েকজন মহিলা বলেন, বাস্তুহারা হয়ে অন্য জায়গা থেকে এসে চর জাগা জমিতে ঘরবাড়ি বেঁধে বসবাস করে আসছেন তারা।বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের তাজুল ইসলাম খান জানান, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ইজারা নিয়ে বশির উল্লাহ বাজার ও মোশাররফ আলী হাট এলাকায় দুই তীরে দোকানপাট ও ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে।’

 

বাহারছড়া ও খানখানাবাদ ইউনিয়নকে দুই ভাগ করে বয়ে চলেছে জলকদর। মোশাররফ আলী বাজারে খালের অবস্থা অত্যন্ত করুণ হয়ে পড়েছে। খালের তীর দখল করে গড়ে ওঠেছে অন্তত দুই শতাধিক কাঁচাপাকা স্থাপনা। অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা দীন মোহাম্মদ (৮৮) জানান, ‘এখানে বড় ঘাট ছিল। স্টিমার-লঞ্চ চলাচল করত। ১৯৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ে ঘাট ভেঙে যায়। এখন পাকা ব্রিজ হয়েছে।’ প্রায় দুইশ ফুট প্রশস্ত খালটি দখল আর ভরাটে এখন ২০-৩০ ফুটে দাঁড়িয়েছে। তাতেও চলছে দখলদারিত্ব।

 

এলাকাবাসী জানান, শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ অংশ হতে গন্ডামারা খাটখালী মুখ বঙ্গোপসাগরে মিলিত হওয়ায় মোহনা হিসেবে পরিচিত। কুতুবদিয়া, মহেশখালী লাখ লাখ মানুষ জলকদর খাল ব্যবহার করে এক সময়ে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করতেন। খাল দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে দোকানপাট। বাহারছড়া থেকে খানখানাবাদ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বন্ধ হয়ে পড়েছে। শুধু বশির উল্লাহ বাজার থেকে দক্ষিণে ফাঁড়ির মুখ হয়ে নৌযান চলাচল করতে পারে। ওই অংশে ভাটার সময়েও খালে পানি থাকে। জাইল্যাখালী বাজার, বাংলা বাজার, সরকারহাট ও শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ বাজার মাছ বেচাকেনায় জমজমাট থাকে। খালের এসব অংশে পানি প্রবাহ থাকায় মাছের বোট ও নৌকা-সাম্পান চলাচল রয়েছে। আবার এসব এলাকায় দখলও বেশি হয়েছে। খালের তীরে গড়ে ওঠেছে বহুতল ভবন। সরল ও বাহারছড়া এলাকায় খালের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠেছে ইটভাটা।

 

শেখেরখীল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও মাছ ব্যবসায়ী এয়ার আলী বলেন, ছনুয়া সীমানা হতে খানখানাবাদের চৌধুরীঘাট ঈশ্বরবাবুর হাট পর্যন্ত জলকদর খালটি ১৫০ থেকে ২০০ ফুট প্রশস্ত ছিল। নৌকা-সাম্পান, স্টিমারে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত ছিল। ৪০ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় নৌযান চলাচল বন্ধ হয়েছে।

 

স্থানীয়রা জানান, বাঁশখালী ছাড়াও কুতুবদিয়া, চকরিয়া, দোহাজারীসহ আশপাশ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম বড় মাধ্যম ছিল এ খালটি। দেশ স্বাধীনের পরও জলকদরের কদর ছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ার পর থেকে এ খালের কদর ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।

 

জলকদরের নামকরণ : জলকদর খালের উৎপত্তি ও ইতিহাস নিয়ে বিশদ জানা যায়নি। তবে আবদুল হক চৌধুরীর ‘বন্দর শহর চট্টগ্রাম’ বইয়ে বলা হয়েছে, নবাব জলকদর খান সম্ভবত ১৭৩৬-১৭৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চট্টগ্রামের নবাব বা শাসনকর্তা ছিলেন। বাঁশখালীর জলকদর খাল তাঁর একটি মহৎ কীর্তি বলা হয়েছে। ইতিহাসবিদ আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ‘ইসলামাবাদ’ বইয়ে জোলকদর খাঁ বলা হয়েছে। রাজ্য শাসনকাল ১৭৩৭-১৭৩৯ খ্রিষ্টাব্দ বলা হয়েছে।

 

জলকদরের সোনালি ইতিহাস আর রূপ-যৌবন মুগ্ধ করেছিল কবি-সাহিত্যিকদের। ষাট দশকে কবি আল মাহমুদ সাম্পানযোগে চাক্তাই থেকে শঙ্খ-জলকদর হয়ে কুতুবদিয়া যাওয়ার সময় ‘আকাশ নিয়ে’ কবিতায় লিখেন, ‘জল কদরের খাল পেরিয়ে জল পায়রার ঝাঁক/উড়তে থাকে লক্ষ্য রেখে শঙ্খ নদীর বাঁক …’।

 

খালের গতি-প্রকৃতি : পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, উত্তরে সাঙ্গু নদীর ঈশ^রবাবুর হাট থেকে শুরু হয়ে খালটি এঁকেবেঁকে ৩২ কিলোমিটার দূরে গন্ডামারার কাটখালীতে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মিশেছে। তবে ছনুয়া ও শেখেরখীল এলাকার কাটখালী মোহনা থেকে ভিন্ন নাম ধারণ করে দুটি খাল সাগরে মিশেছে। রেজাউল করিম ডক সংলগ্ন সরল্যাবাজার থেকে ছনুয়া খাল নামে ১২ দশমিক ৫ কিলোমিটার বেয়ে ছোট ছনুয়া-পেকুয়া সীমান্তে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। অপর অংশটি গোবিন্দ বা হরিখাল নামধারণ করে বহদ্দারহাট এলাকায় পাহাড়ি ছড়ায় সংযুক্ত হয়েছে। তবে এলাকাবাসী ছনুয়া খালকে জলকদর বলে অভিহিত করেন। প্রধান খালগুলোর সঙ্গে ছড়িয়ে-ছিড়িয়ে মিলিত হয়েছে অন্তত শতাধিক খাল-শাখা খাল। গুগলচিত্রে তা পরিলক্ষিত হয়।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা বলেন, ‘২০২০-২১ সালে জলকদর খাল খননের জন্য সমীক্ষা করা হয়। সাঙ্গু মোহনা থেকে ১৬ কিলোমিটার অংশ অত্যন্ত করুণ হয়ে পড়েছে। তা খনন করা হলে নৌকা-সাম্পান চলাচল উপযোগী হয়ে যাবে। তিনি বলেন, সাঙ্গু মোহনা এলাকায় দুইশ ফুট ও দক্ষিণে ২৫০ ফুট প্রশস্ত ছিল। আর ১৭ ফুট গভীরতা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

 

দখলদার তালিকা করে উচ্ছেদ আদেশ হাইকোর্টের : গত বছরের (২০২২ সাল) ৫ ডিসেম্বর জলকদর খালের দখল ও ভরাট বন্ধ করার আদেশ দেন হাইকোর্ট। হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) আইনজীবী মনজিল মোরসেদের দায়ের করা রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিত এই রায় দেন হাইকোর্ট। সিএস ও আরএস খতিয়ান মতে দখলদার চিহ্নিত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান এবং বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশের কপি এখনো পাইনি। কপি পাওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা মতে কাজ করবো।’

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী সীবেন্দু খাস্তগীর বলেন, ‘অবৈধ দখলদারের তালিকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমা দেওয়া আছে। তারপরও আদালতের নির্দেশনা পেলে নতুন করে তালিকা প্রস্তুত করা হবে।’

 

অর্থনীতিতে জলকদর : বাঁশখালীবাসীর দাবি, খালটি খনন করে পুনরুদ্ধার করা হলে হাজার হাজার একর জমি চাষাবাদের আওতায় আসবে। কৃষিপণ্য, লবণ চাষ ও মাছ উৎপাদন এবং পর্যটনের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। বাঁশখালী নয়, দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে অতীতের মতো বড় অবদান রাখবে এই জলকদর খাল।

 

বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, মোগল আমল থেকেই এই খাল দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ লঞ্চ-স্টিমার ও সাম্পানযোগে দেশ-বিদেশে যাতায়াত ছিল। স্বাধীনতা-পরবর্তীসময়ে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়ন হওয়ার পর খালের গুরুত্ব গৌণ হয়ে পড়ে। খালটি খননের প্রস্তাবনা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জলকদরের হৃদ-গৌবর ফিরে আসবে বলে আশা করছি।

 

লেখক : নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক পূর্বকোণ

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট