চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পরিবারের বয়োবৃদ্ধ সদস্যের মানসিক সুস্থতায়

তাহমিনা পলি

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:১২ পূর্বাহ্ণ

পরিবারের একদম বয়স্ক মানুষটি হন সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে কাছের ও ভালোবাসার। তার কাছেই যেন শত গল্প ও মায়ার ঝুলি জমে থাকে। কিন্তু বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে পড়া মানুষটিও একটা সময় পরে কেমন যেন দূরের হয়ে যান। হয়ে যান বিচ্ছিন্ন ও দুর্বোধ্য।

বয়স বৃদ্ধির সাথে অবধারিতভাবে দেখা দিতে শুরু করে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাড়ের ক্ষয়, কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তিজনিত সমস্যাসহ সাধারণ সমস্যাগুলোর সাথে যুক্ত হয় চেনা অথবা অচেনা ছোট-বড় আরও কয়েক ধরনের শারীরিক অসুস্থতা।

তবে বয়োবৃদ্ধদের শারীরিক সমস্যার সাথে দেখা দিতে শুরু করে মানসিক সমস্যাও। সেটা কেমন? খেয়াল করে দেখবেন, তারা সহজে কোন কিছু মনে রাখতে পারেন না। দুপুরে যদি জানতে চাওয়া হয়- সকালে কী খেয়েছেন, তবে সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারবেন না। একইসাথে মানুষের নাম, চেহারা ভুলে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয়। এছাড়া দেখা দেয় অকারণে ও আকস্মিক মেজাজের পরিবর্তন। পুরনো কোন কথা মনে করে অঝোরে কান্নাকাটি করা, সামান্য কোন সমস্যায় অতিরিক্ত রেগে যাওয়া, খুঁতখুঁত করা, একই কথা বারবার বলার মতো লক্ষণগুলো বয়স বৃদ্ধির সাথে স¤পর্কিত।
এ কারণে একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষের শারীরিক সুস্থতায় যত্ন নেওয়ার সঙ্গে মানসিক সুস্থতার জন্যেও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের প্রতি বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন।

খাদ্যাভ্যাস
নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাস ও খাবারের পুষ্টির উপরে মানসিক সুস্থতা অনেকখানি নির্ভর করে। বয়স্কদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কাজুবাদাম রাখা প্রয়োজন, যা মস্তিষ্কের সুস্থতায় অনেকখানি অবদান রাখে। এতে থাকা ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ অ্যাসিড সরাসরি মস্তিষ্কের সুস্থতা নিশ্চিতে কাজ করে। এছাড়া লো ফ্যাট খাদ্য উপাদান ও যথাসম্ভব প্রাকৃতিক উপাদান বেশি রাখার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

শরীরচর্চা
বয়স্কদের জন্য শরীরচর্চার বিষয়টি কঠিন মনে হলেও, একদম হালকা ঘরানার ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজও তাদের জন্য অনেক বড় উপকারিতা বহন করবে। এতে করে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকা, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকা, হাড়ের উপকারিতার মতো সুবিধার পাশপাশি মন প্রফুল্ল ও প্রশান্ত থাকবে। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি মনোযোগেও লক্ষণীয় পরিবর্তন আসবে।

যোগাযোগ
পাশ্চাত্যে একটি বিষয়ের প্রচলন রয়েছে। সমবয়সী অনেকে একসাথে দেখা করা, গল্প করা, সময় কাটানো, একেঅপরের সাথে যোগাযোগ করা। সামাজিকতার এই আয়োজনে অংশগ্রহণে বৃদ্ধদের আগ্রহী করা হয়।
এতে করে তাদের মন ভালো থাকে ও মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব পরে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে আমাদের দেশে বয়োবৃদ্ধরা বেশ একাকী সময় কাটান ও একা হয়ে পরেন। এতে করে তারা খুব অল্পতে বিষণè হয়ে পরেন এবং বৃদ্ধ বয়সের বিষণèতা থেকেই দেখা যায় মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলো। সেক্ষেত্রে পরিবারের সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে বয়োবৃদ্ধদের সাথে সময় কাটানো এবং তাদের একাকীত্ব দূর করার প্রতি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট