চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

সংশোধিত ওয়াকফ আইন বিতর্ক : কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা

আবসার মাহফুজ

৩ জুন, ২০২৫ | ৪:২৭ অপরাহ্ণ

ইংরেজদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত তার সংবিধানে ‘বহুত্ববাদ’ শব্দটি গ্রহণ করেছে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই সমান অধিকার ভোগ করার কথা বলা আছে সংবিধানে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে- তা কখনো মানা হয়নি। শুরু থেকেই ভারতের শাসকগোষ্ঠী অঘোষিতভাবে মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি অনুসরণ করে আসছে। সরকারি চাকরি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ কোনো ক্ষেত্রেই মুসলমানদের সংখ্যানুপাতিক অধিকার দেওয়া হয়নি। জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলমান হলেও সরকারি চাকরিতে ২ শতাংশের বেশি মুসলমানের অস্তিত্ব ছিল না কোনো কালেই। শুধু সরকারি চাকরি নয়, রাষ্ট্রের সবক্ষেত্রেই ন্যায্য অধিকার থেকে নানাভাবেই বঞ্চিত করা হয়েছে মুসলমানদের। বিভিন্ন সময় সরকারি-বেসরকারি নানা রিপোর্টে তা স্পষ্ট হয়েছে। এসবের মধ্যে সাচার রিপোর্ট ভারতে মুসলিম বঞ্চনার এক ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। উল্লেখ্য, ৯ মার্চ ২০০৫, ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এক উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠন করে এবং ভারতে মুসলমানদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত অবস্থার উপর এক রিপোর্ট তৈরি করার দায়িত্ব সেই কমিশনের হাতে অর্পণ করে। এই কমিশনের সভাপতি ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি রাজেন্দ্র সাচার। কমিশনের কাছে সরকারি বিজ্ঞপ্তি যে কাজগুলো করতে বলে সেগুলেঅ হল- কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তর এবং রাজ্য সরকারি দপ্তর থেকে তথ্য সংগ্রহ করা এবং প্রকাশিত সংখ্যাগণিত, গবেষণাপত্র ও পুস্তকাদি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে রাজ্য, অঞ্চল ও জেলাস্তরে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগতক্ষেত্রে মুসলমানদের আপেক্ষিক অবস্থা বিচার করা। ইংরাজিতে লেখা ৪৫০ পাতার এই রিপোর্টে মুসলমানদের প্রতি রাষ্ট্র কর্তৃক বহুমাত্রিক বঞ্চনার চিত্র ফুটে উঠেছে।

 

ভারতে মুসলমান অধ্যুষিত গ্রামে ডাক-তার যোগাযোগ, স্কুল, হাসপাতাল, পাকারাস্তা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা কি রকম, মুসলমানদের বাসস্থান কি রকম- এই প্রশ্নগুলো খুঁটিয়ে বিচার করে সাচার কমিশন দেখেছে- যে গ্রামে মুসলমানদের বাস যত বেশি, সই সব গ্রামে ডাক-তার যোগাযোগ, স্কুল, হাসপাতাল ও পাকারাস্তার অস্তিত্ব তত কম। পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে ১০০০ মুসলমানপ্রধান গ্রাম রয়েছে যেগুলোতে কোনো স্কুল নেই, উত্তরপ্রদেশে এরকম গ্রামের সংখ্যা ১৯৪৩। পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে ৩০০০ মুসলমানপ্রধান গ্রামে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই, উত্তরপ্রদেশে এরকম গ্রামের সংখ্যা ৫০০০। গ্রামাঞ্চলে গোটা দেশেই কলের জল পান করে খুব কম লোক- প্রায় এক-চতুর্থাংশ। কিন্তু মুসলমানদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা অন্যান্য সামাজিক-ধর্মীয় গোষ্ঠী অপেক্ষা অনেক কম। রিপোর্টে বলা হয়েছে- মুসলমানপ্রধান গ্রামগুলোর এক-তৃতীয়াংশে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। ৪০ শতাংশ মুসলমানপ্রধান গ্রামে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। মুসলমানরা যেসব এলাকায় বসবাস করেন সেসব এলাকায় পরিকাঠামো অত্যন্ত দুর্বল। মুসলমানদের বাসগৃহের অবস্থা তপশীলি জাতি-জনজাতি এবং ওবিসিদের মতই। কলের জল, বিদ্যুৎ ও আধুনিক জ্বালানি (এলপিজি) ব্যবহারের ক্ষেত্রে মুসলমানরা অনেক পিছিয়ে। হিন্দুপ্রধান এলাকায় অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন হলেও মুসলমানপ্রধান এলাকায় নামমাত্র উন্নয়নও হয়নি। সরকারি চাকরি, চিকিৎসা ও শিক্ষার অধিকারসহ সবক্ষেত্রেই মুসলমানদের বঞ্চনার করুণচিত্র এসেছে সাচার রিপোর্টে। সাচার রিপোর্ট অনুযায়ী, মুসলমানসমাজ সামাজিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে সুবিধাবঞ্চিত একটি গোষ্ঠী। এই পশ্চাদপদতা রাষ্ট্র কর্তৃক অনুসৃত বৈষম্যের নীতির ফল। রাষ্ট্র তার নীতি বদল না করলে এ পশ্চাদপদতা বা আপেক্ষিক পশ্চাদপদতা দূর হতে পারে না। প্রতিটি পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর জন্য জনসংখ্যার অনুপাতে শিক্ষা, চাকরি, ব্যাংক-ঋণ ও সামাজিক পরিষেবার ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করে এই বৈষম্যের নীতির অভিমুখ পাল্টে ফেলা যাবে না। কমিশন যে রিপোর্ট উপস্থিত করেছে, তাতে মুসলমানদের পশ্চাদপদতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।

সাচার কমিশনের রিপোর্টে বঞ্চনার পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিয়ে মুসলমানদের ‘মূলস্রোতে’ নিয়ে আসার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় মুসলমানদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ব্যবস্থা করা, শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো, মাদ্রাসাশিক্ষার যথাযথ গুরুত্ব, ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থায় ঋণের সুবন্দোবস্ত, সরকারি ও আধাসরকারি চাকরিতে মুসলমানদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং তাদের জন্য পরিকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সাচার রিপোর্টকে আমলে নিয়ে মুসলমানদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় কোনো সরকারই উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি। উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারগুলো তো নয়ই, ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার সরকারগুলোও মুসলমানদের কল্যাণে কিছুই করেনি, উল্টো মুসলমানদের কোণঠাসা করা হয়েছে নানা কৌশলে। তাদের সহায়-সম্পদ লুট করা হয়েছে, পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা-দীক্ষা সবক্ষেত্রেই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, নানা আজগুবি গল্প হাজির করে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মারক স্থাপনাগুলোতে আঘাত করা হয়েছে, নানা অছিলায় নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে। তবে ভারতে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর মুসলমানদের অবস্থা আরো করুণ রূপ নিয়েছে। এ সরকার শুরু থেকেই ভারতের সবচেয়ে বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মুসলমানদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন, নানা অজুহাতে সহায়-সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া, মুসলমানদের বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা, মুসলমানদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে ঘৃণা ছড়ানোসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মোদির তিন মেয়াদের শাসনামলে সরকারের কোনো কার্যকলাপে মুসলমানদের প্রতি আন্তরিকতা দেখা যায়নি; বরং প্রতিনিয়ত বাড়ছে ঘৃণা, বিদ্বেষ আর বিভাজনের রাজনীতি। গরু রক্ষার নামে গণপিটুনি, লাভ জিহাদ বা করোনা জিহাদের মতো কাল্পনিক ধোঁয়া তুলে মুসলমানদের হয়রানি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় সরকার বরাবর নীরব থেকেছে, উল্টো নানা কায়দায় উস্কে দিয়েছে উগ্রবাদীদের। উত্তর প্রদেশে বুলডোজার এখন সরকারিভাবে শাস্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। মসজিদের নিচে মন্দির খোঁজার নামে হিন্দুত্ববাদী বাহিনীরা প্রশাসনের প্রশ্রয়ে যা খুশি তাই করছে। ভারতের প্রাচীনত মসজিদ ‘বাবরি মসজিদ’ ভেঙে মন্দির বানানো হয়েছে। অন্য প্রাচীন মসজিদগুলোও একই কায়দায় গুড়িয়ে দিয়ে মন্দির বানানোর অপচেষ্টা চলছে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায়। ভারতের পর্যটনখাতের প্রধান উৎস সপ্তাচার্যের অন্যতম তাজমহল এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের পরম শ্রদ্ধেয় সুফিসাধক হযরত খাজা মঈনুদ্দিনের (রা.) মাজারের নিচেও মন্দির থাকার দাবি তোলা হয়েছে। সরকারের প্রশ্রয়ে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী এসব বিষয়ে আদালতে মামলাও দায়ের করেছে। নির্বাচনের সময় মুসলিমবিদ্বেষী ভাষা ব্যবহার এখন যেন স্বাভাবিক ব্যাপার। মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য চালু থাকা বৃত্তি প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মুসলমান ব্যবসায়ীদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে এবং হচ্ছে। পার্কে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ পড়লেও পুলিশ গ্রেপ্তার করছে। এমনকি ঈদের নামাজ রাস্তায় পড়াও অনেক জায়গায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নামাজরত মুসল্লিদের ওপর পুলিশের পৈশাচিক হামলা বিশ^গণমাধ্যমের কল্যাণে কারো অজানা নয়। ভারতে বিজেপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তরুণদের একটি বড় অংশই এখন উগ্রবাদী চিন্তা-চেতনায় বেড়ে উঠছে। সর্বশেষ মুসলমানদের ওয়াক্ফ সম্পত্তিতে হাত দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সরকার। মুসলমানদের কল্যাণের নামে ওয়াক্ফ আইন সংশোধন করে এমন সব শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা রাষ্ট্র কর্তৃক জবরদখলের পথ প্রশস্ত করে দেয়, এবং হিন্দুত্ববাদী উদ্দেশ্য সহজেই চরিতার্থ হয়।

 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা যাচ্ছে, ভারতে মুসলিমসম্প্রদায় ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র আপত্তির মুখেও গত ২ এপ্রিল ২০২৫ লোকসভায় পাশ হয় বিতর্কিত ‘ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল ২০২৫’। লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও মোদির বিজেপি মিত্রদলগুলোর সমর্থনে বিলটি পাস করাতে সক্ষম হয়েছে। টানা ১২ ঘণ্টা বিতর্কের পর সেদিন গভীর রাতের ভোটাভুটিতে এর পক্ষে ভোট পড়ে ২৮৮টি এবং বিপক্ষে পড়ে ২৩২টি। এরপর রাজ্যসভায় যায় বিলটি। রাজ্যসভায় টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে হয়েছে তীব্র বাগ্বিতণ্ডা। বিরোধীদল কংগ্রেস বলেছে, এই বিল অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক। শেষপর্যন্ত সেখানেও বিতর্কিত বিলটি পাস হয়। রাজ্যসভায় ১২৮ জন বিলের পক্ষে ও ৯৫ জন এর বিরুদ্ধে ভোট দেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াক্ফ বিল পাস হওয়ার ঘটনাটিকে দেশের জন্য ‘ওয়াটারশেড মোমেন্ট’ বা এক পালাবদলের মুহুর্ত বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি এটিকে সামাজিক ন্যায়বিচার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে এক ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। অন্যদিকে কংগ্রেস এই বিলকে সংবিধানের মূলনীতি, ধারা ও চর্চার ওপর আঘাত বলে নিন্দা করেছে। সেই সঙ্গে তারা সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরপর বিলটি আইনে পরিণত করতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। তিনিও বিনাবাক্যে সই করে দেন ‘ইউনিফায়েড ওয়াক্ফ ম্যানেজমেন্ট, এমপাওয়ারমেন্ট, এফিশিয়েন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিল’-এ। এর মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়ে গেলো। ফলে বদলে গেলো ৭০ বছরের পুরনো ওয়াক্ফ আইন। পরে অবশ্য মুসলিমসম্প্রদায় এবং বিরোধীদলের মামলার প্রেক্ষিতে তা সুপ্রিমকোর্টে যায়। তবে ভারতের ওয়াক্ফ সংশোধিত আইনে স্থগিতাদেশ দেননি দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সংশোধনীর দুটি বিতর্কিত ক্ষেত্র- ওয়াক্ফ বাই ইউজার সম্পত্তিতে পরিবর্তন ও ওয়াক্ফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুধু দেশটির শীর্ষ আদালত। সাতদিনের মধ্যে কেন্দ্র ও সব রাজ্যকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৫ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছেন, যেসব সম্পত্তি ব্যবহারে ওয়াক্ফ বা ওয়াক্ফ ব্যবহারকারী (ওয়াক্ফ-বাই-ইউজার) হিসেবে নিবন্ধিত বা নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ঘোষিত হয়েছে, সেখানে কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। রাজ্যের ওয়াক্ফ বোর্ড বা ওয়াক্ফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্যপদে কোনো নিয়োগ হবে না। ৫ মে পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত এই নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে। ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কঠিন কিছু প্রশ্নও ছুড়ে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এই আইনের বিরুদ্ধে ৭৩টি পিটিশনের শুনানি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ ও কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্য নিয়োগের বিষয়ে সরকারের জবাব চেয়েছেন। আদালতে প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি প্রশ্ন রাখেন, ‘হিন্দু দেবোত্তর বোর্ডের সদস্য হিসেবে কোনো মুসলিমকে সদস্য হতে দেবে সরকার? খোলাখুলি বলুন। যদি না দেয়, তবে ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু কেন’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।’ প্রসঙ্গত, আইনটির পক্ষ নিয়ে উগ্রহিন্দুত্ববাদীরা মাঠে নামার কারণে মুসলিমদের সাথে ভারতের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে আইনটির বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভে তিনজন নিহত হন। উল্লেখ্য, ভারত ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে ওয়াক্ফ সম্পত্তি বিষয়ে একটি আইন করেছিল। পরে সে আইনকে সংশোধন করে ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে ওয়াক্ফ বোর্ডের ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু ৩০ বছর পরে যে সংশোধনে সিলমোহর দিল ভারতীয় সংসদ, তাতে বোর্ডের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতার হস্তক্ষেপে বদলে যেতে চলেছে সেই আইন। (চলবে)

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট