প্রচণ্ড গরমে শরীর উত্তপ্ত হয়ে দুর্বল, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণকে হিট স্ট্রোক বলে। এই অসুখ মূলত অত্যধিক গরম পড়ার কারণে হয়ে থাকে। তাই যাঁরা এই গরমে বাইরে বের হবেন তারা সতর্ক হন। আসলে আবহাওয়া তপ্ত হলে শরীর নিজের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। তখন এই জটিলতা তৈরি হয়।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সম্মুখীন হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
দেশের এই প্রেক্ষাপটে প্রচন্ড দাবদাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে দুপুর ১২টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত অর্থাৎ সূর্য মাথার উপর থাকা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া খোলা মাঠে বা রাস্তায় থাকা সীমিত করুন। বাইরে বের হলে ছাতা, রোদ চশমা ও পর্যাপ্ত পানি সঙ্গে রাখুন। এ ছাড়া নিচের খাবার এবং পানীয়গুলি নিয়মিত গ্রহণ করুন। পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ওষুধ গ্রহণ করুন।
ডাবের পানি: এটি ইলেক্ট্রোলাইটসমৃদ্ধ, তাই ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে হারিয়ে যাওয়া খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করে। মূত্রনালির প্রদাহ কমাতেও ডাবের পানি বেশ উপকারী।
তরমুজ: উচ্চ পানির উপাদানে হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া তরমুজে ভিটামিন এ এবং প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ করে ও শরীরে শক্তি উৎপাদন করে।
শসা: শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে শসা হতে পারে উপকারী খাদ্য। এটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। শরীরের ওজন হ্রাস করতেও এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
দই: দই এর মধ্যে উপকারী উপাদান প্রোবায়োটিক রয়েছে এবং দই ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। গরমে ভেজানো চিড়ার সাথে ঘরে পাতা দই , কলা ও অন্যান্য ফলের কুচি হতে পারে মুখরোচক ও পুষ্টিকর নাস্তা।
লেবুর শরবত: গরমে সতেজতা ধরে রাখতে আর প্রাণবন্ত থাকতে লেবুর শরবত এর জুড়ি নেই। এটি শরীরের ভিটামিন সি প্রদান করে এবং হাইড্রেশনে সহায়তা করে।
লেখক: পুষ্টিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
পূর্বকোণ/এএইচ