চট্টগ্রাম সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সর্বশেষ:

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন : কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন

২২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল কক্সবাজার জেলায় মহেশখালী পৌরসভাসহ আটটি ইউনিয়ন নিয়ে ৩৮৮ বর্গ কিমি বিস্তৃত মহেশখালী উপজেলা। আদিনাথের পাহাড়, শুটকিপল্লীসহ কতিপয় ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান নিয়ে মহেশখালী উপজেলা বাংলাদেশের একটি অনুন্নত ও অবহেলিত অঞ্চল। ওই এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের উন্নয়নের মূলধারায় সংযুক্ত করবার জন্যে বাংলাদেশ ও জাপান সরকার যৌথভাবে গত একদশক ধরে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে জাপান সরকারের প্রস্তাবিত বে অফ বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট ইনিসিয়েটিভ মূলত বিগ বি নামে পরিচিত। ২০১৪ সালের মে মাসে জাপানে অনুষ্ঠিত জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথসভায় ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার (বেল্ট) এলাকায় শিল্পায়নকে সামনে রেখে এই বিগ বি উদ্যোগটির পরিকল্পনা করা হয়। বিগ বি ধারণাটি তিনটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আছে। স্তম্ভসমূহ যথাক্রমে শিল্প ও বাণিজ্য, জ্বালানি এবং পরিবহন ব্যবস্থা। ধারণাটির অন্যতম স্তম্ভ শিল্প ও বাণিজ্যকে প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরকে সরকার কর্তৃক বন্দর সুবিধাদি সম্প্রসারণের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের তত্ত্বাবধানে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তা বাণিজ্যিক সদরদরজা হিসেবে এই অঞ্চলে কাজ করবে। মহেশখালী উপজেলায় সার্বিক উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ সমন্বয় করার জন্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ‘মহেশখালী-মাতারবাড়ী ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’ (মিডি) কাজ করে যাচ্ছে। উন্নয়নের মহাপরিকল্পনায় এবার কুতুবদিয়া অঞ্চলকে সম্পৃক্ত করে সরকার নির্দেশিত মহেশখালী-মাতারবাড়ী ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (মিডি) ১৮ হাজার একর উপকূলীয় বা নদীমুখ এলাকা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে।

মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়ন মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (স্টেজ ১) বাস্তবায়নের জন্যে নির্ধারিত। ধলঘাটা ইউনিয়নে প্রস্তাবিত বন্দরের নাম পার্শবর্তী মাতারবাড়ি ইউনিয়নের নামে হওয়ায় এলাকায় জনপ্রতিনিধিসহ জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ পরিলক্ষলিত হয়। এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্রকল্পসংশ্লিষ্ট অনাপত্তি গ্রহণেও বিপত্তি বেঁধে যায়। তথাপি জাপান বাংলাদেশ দুদেশের সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, আন্তর্জাতিক ম-লে মাতারবাড়ি বন্দর নামের প্রসারণ, ঋণচুক্তির ডকুমেন্টেশনে উক্ত নামে প্রকল্প অনুমোদনের কারণে নাম পরিবর্তনে উদ্ভুত জটিলতার বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণসহ সাধারণ জনগণ মৌনতা অবলম্বন করলেও সময়ে সময়ে স্থানীয় মিছিল, সমাবেশ বা আন্দোলনে সরকারের কাছে অন্যতম দাবিতে প্রকল্পের নাম পরিবর্তনের বিষয় স্থান পেয়ে থাকে। এ অঞ্চলের সিংহভাগ অংশে স্থানীয়রা বংশপরম্পরায় মূলত গ্রীষ্মকালে চিংড়িচাষ এবং শীতকালে লবণচাষ করে থাকে। প্রকৃতির দানে এ অঞ্চলের মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে, যা বিশ্বব্যাংকের পরিবেশগত এবং সামাজিক পরিভাষায় ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস রূপে চিহ্নিত করা হয়। ইকোসিস্টেম পরিষেবা হলো সেসব সুবিধা যা মানুষ বাস্তুতন্ত্র হতে পেয়ে থাকে। ইকোসিস্টেম পরিষেবাগুলি পরিষেবার চারটি বিস্তৃত বিভাগে বিভক্ত: প্রাকৃতিক পরিষেবা, নিয়ন্ত্রক পরিষেবা, সাংস্কৃতিক পরিষেবা এবং সহায়ক পরিষেবা। প্রাকৃতিক পরিষেবা বলতে সমুদ্রের পানি হতে আহরিত মিনারেলস বা লবণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাজারব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। গ্রীষ্মকালে চিংড়ি ও মৎস্যচাষে স্থানীয় ও দেশ-বিদেশে চিংড়ি ও আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। ধলঘাটা ও মাতারবাড়ি ইউনিয়নসহ কতিপয় মহেশখালী উপজেলাধীন ইউনিয়ন নিয়ে জাইকা কর্তৃক একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ণ করা হয়েছে যা ২০১৯ সালে অনুমোদিত হয়েছে। বর্তমানে অনুমোদিত মাস্টারপ্লানটি হালনাগাদ করণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উদ্দেশ্য হলো মহেশখালী উপজেলায় গঠনমূলক ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরি করে করে উক্ত এলাকাকে একটি শিল্পাঞ্চলে রূপান্তর করে বিগ বি ধারণাকে বাস্তবে রূপায়ণ করা। উক্ত শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, পোর্ট লজিস্টিকস হাব তৈরি হবে, এলএনজি, এলপিজি টার্মিনালসহ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আঞ্চলিক অবকাঠামো স্থাপন করা হবে। সুলভ পরিবহণ ব্যবস্থা এই অঞ্চলের উন্নয়নের সুফলসমূহকে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহে ছড়িয়ে দিবে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।

যে কোনো উন্নয়ন অবকাঠামো বিনির্মাণে প্রথমত প্রয়োজন প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ বা বন্দোবস্তি। জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন কর্মপরিকল্পনা তৈরি এবং বাস্তবায়ন একটি সময়সাপেক্ষ ও জটিল কাজ। উপমহাদেশের জমি নিয়ে প্রথাগত জটিলতা ও বিরোধ অধিগ্রহণ কার্যক্রমকে আরও সময়সাপেক্ষ করে তুলে। সাধারণত উক্ত অঞ্চলে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিসমূহ অধিগ্রহণের এবং খাসজমি বন্দোবস্তির মাধ্যমে প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হয়। অধিগ্রহণে ২০১৭ সালের ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ও সংশ্লিষ্ট নির্দেশাবলী অনুসৃত হচ্ছে এবং বন্দোবস্তির ক্ষেত্রে কৃষি খাসজমি ব্যবস্থা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা ১৯৯৭ অনুসরণ করা হয়। উক্ত আইনে ভূমি অধিগ্রহণে স্বত্তবান ব্যক্তিবর্গকে ক্ষতিগ্রস্ত বিবেচনা করে জেলা প্রশাসন কর্তৃক বিধি নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ প্রাক্কলন করা হয়। এছাড়া জাইকার আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে পরিবেশগত ও সামাজিক বিষয়াদি বিবেচনায় জাইকার গাইডলাইন ২০১০ ও ২০২২ অনুসরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া উক্ত কাজে নিরপেক্ষ এনজিও নিয়োগের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার সামাজিক ও পরিবেশগত বিবেচনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে এন্টাইটলমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক ও ক্ষতিপূরণ ম্যাট্রিক্স তৈরি করে প্রতিবেদন প্রদান করতে হয়। নিয়োজিত এনজিও উক্ত কাজে দেশের প্রচলিত আইনের ব্যত্তয় না করে জাইকা গাইডলাইন অনুসরণে কার্য নির্বাহ করে থাকে। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ অনুসরণে প্রণীত পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ সমীক্ষা প্রণয়ন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়নে জাইকার গাইডলাইন সমন্বয় করতে হয়। পুনর্বাসন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন কাজে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ক্ষতিগ্রত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনসহ দক্ষজনবলে রূপান্তর করে পরিবর্তিত উন্নয়নে তাদের সংযুক্ত করা হয়ে থাকে যা সোশ্যাল ইন্টিগ্রেশন নামে পরিচিত। উদাহরণ স্বরূপ চলমান অন্যতম একটি প্রকল্পের নাম মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নাধীন মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১ হাজার ২২৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করা হয়। মিডির মাস্টারপ্ল্যানে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্যে ১ হাজার ৩১ একর জমি অধিগ্রহণের বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বরাদ্দকৃত ১ হাজার ৩১ একর জমি হতে ২৮৩ একর জমি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১৬২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের বিনিময়ে অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। অধিগ্রহণ আইনে বন্দর কর্তৃক প্রদেয় প্রাক্কলিত অর্থ জেলাপ্রশাসন কক্সবাজার কর্তৃক চিহ্নিত প্রায় আইনী স্বত্ত্ববান ৩ হাজার ২৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বরাবরে বণ্টন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০% ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের অর্থ জেলাপ্রশাসন কার্যালয় হতে গ্রহণ করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে জানানো হয়েছে। এছাড়া আইনগত স্বত্বহীন অথচ পরিবেশ এবং সামাজিক ভাবে (ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস) যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদেরকে রিহাবিলিটেশনের আওতায় পুনর্বাসনের লক্ষ্যে জাইকার গাইডলাইন অনুযায়ী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক একাধিক সদস্যবিশিষ্ট দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বন্দরের প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রতিনিধি, জেলাপ্রশাসনের প্রতিনিধিসহ মাঠপর্যায়ে কর্মরত এনজিও প্রতিনিধির সমন্বয়ে নির্ধারিত জয়েন্ট ভেরিফিকেশন টিম ও প্রপার্টি ভ্যালুয়েশন এন্ড এসেসমেন্ট টিম নামীয় কমিটি দ্বয়ে সুনির্দিষ্ট কার্যপরিধি নির্ধারিত রয়েছে।

গঠিত কমিটিদ্বয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে নিযুক্ত এনজিওর প্রস্তাবনা ও এনটাইটেলমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক সরকার কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে জেলাপ্রশাসন কর্তৃক যারা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্যে বিবেচিত হন নি। যেমন বর্গাচাষী, শ্রমিক, স্কোয়াটার্স বা খাস জমিতে বসবাসকারী ব্যক্তিবর্গকে পুনর্বাসনের আওতায় জাইকা ও বিশ্ব ব্যাংক এর অনুশাসন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ অর্থ প্রদান করতে হয়। মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের অপারেশন কাজে সংযুক্ত করবার লক্ষ্যে দক্ষ জনবলে রূপান্তর করার নিমিত্তে বন্দর কর্তৃক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। সাধারণত স্থানীয় জনসাধারণ শীতকালে লবন চাষ এবং গ্রীষ্মকালে চিংড়ি চাষ করে থাকে। উক্ত এলাকা শিল্পনগরে রূপান্তরিত হলে এমন কৃষিদক্ষতাকে জীবনমুখী দক্ষতায় পরিণত করে প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা পূরণের কাজে লাগানোর বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কম্পিউটার ব্যবহার জ্ঞান, ওয়েল্ডিং, সেলাই কাজ, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্স মেরামত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে।

মিডির মাস্টারপ্ল্যানে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় অসংখ্য গুচ্ছগ্রাম বিদ্যমান রয়েছে। যে সব গুচ্ছগ্রামের বয়স কয়েকশত বছর বলেও জানা যায়। অধিগ্রহণ প্রস্তাবনায় বাস্তুহারা এসব লোকজন ক্ষতিপূরণ বাবদ হারানো জমির বাজারমূল্যের তিনগুণ মূল্য পেলেও তারা অনেক সময় তাদের পূর্বপুরুষের বসতভিটি হারাতে চায় না। সম্পত্তি অর্জন, ধারণ ইত্যাদি যেমন একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, অনুরূপভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অধিগ্রহণ কার্যক্রমকে সাংবিধানিক সুরক্ষা দিয়েছে। অনেক বাস্তুহারা ব্যক্তি পারিবারিক স্মৃতিটুকু নিয়ে বাঁচতে চান। নিজের ভিটির পাশে বাবা মায়ের কবরকে অশ্রুভারে আগলে রেখেছেন যুগান্তরে। অনেক আদিবাসী সম্প্রদায় ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে সগোত্রীয় সমাজে বাস করার জমি কিনে নিতে পারছেন না। পর্যাপ্ত টাকা পেয়েও একটুকরা জমি খুঁজে পেতে অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন দালাল চক্রের কাছে। পুরুষহীন পরিবারে পর্দানশীন মহিলারা প্রাপ্ত অর্থের বিনিময়ে জমি কেনার সাহস করতে পারছেন না। সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় মিডির মাস্টারপ্ল্যানে বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীর জন্যে ক্রয়মুলে জমি কেনার সুযোগ তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন। স্থানীয় বাস্তুহারাদের আবাসনের জন্যে চিহ্নিত এলাকায় দুই বা তিন কাঠা পরিমাপের প্লট তৈরি করে আগ্রহী বাস্তুহারাদের আবাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতে পারে। প্রয়োজনীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠান যেমন উপাসনালয়, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শ্মশান, আশ্রয়কেন্দ্র, স্ব্যস্থসেবা কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির সংস্থান রেখে আবাসন ব্যবস্থা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা যেতে পারে। যেহেতু শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠায় বন্দর কর্তৃক সম্প্রসারিত চ্যানেল ব্যবহারের ফলে অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহ অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার প্রহর গুণছেন, সেহেতু বন্দরের জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম সর্বোচ্চ গুরুত্বপ্রদানের কোনো বিকল্প নেই। বন্দরের অধিগৃহীত জমিতে চ্যানেল তৈরি হলে, পণ্য বোঝাই করা দেশি বিদেশি জাহাজ ভিড়বে আর বার্থিং নিবে জেটিতে। দেশের আমদানি রপ্তানির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে জলে-স্থলের পরিবহনে। সেই স্বপ্ন বাস্তয়নের মহাসড়কে আজ বাংলাদেশ।

মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন
ভূমি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট