বর্তমান সময়ে ইসলামবিরোধী চক্রগুলোর অপপ্রচার এবং তাদের কিছু ইসলামের মুখোসধারী এজেন্টের জঙ্গিবাদী তৎপরতার কারণে বিশ্বে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ ও ভীতি বাড়ছে। সুইডেনে পবিত্র কোরানে আগুন দেয়া, নিউজিল্যান্ডে একটি মসজিদে জুমার নামাজরত মুসল্লিদের ওপর পৈশাচিক কায়দায় গুলি চালিয়ে শতাধিক নিরীহ মুসলমানকে হত্যা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের ওপর হামলা, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নানা কৌশলে মুসলমানদের ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও ঘৃণা ছড়ানো, মিয়ানমারে শুধু ইসলামধর্মের অনুসারী হওয়ায় রোহিঙ্গাদের ওপর পাশবিক কায়দায় গণহত্যা ও স্বদেশ থেকে বিতাড়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া খ্যাত অবৈধ জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের ওপর পৈশাচিক কায়দায় গণহত্যা এবং শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় বিশ্বসম্প্রদায় কোনো উদ্যোগ না নেয়াসহ নানা ঘটনাপ্রবাহ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তায় চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে মুসলিমবিদ্বেষী চক্রগুলো ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে চরম মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের মাধ্যমে ঘৃণা ও ভীতি ছড়িয়ে মুসলমানদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। এরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে ইসলামধর্মকে একটি সন্ত্রাসী ও মানবতাবিরোধী ধর্ম হিসেবে চিহ্নিত করতে এবং মুসলমানদের একটি সন্ত্রাসী জাতি হিসেবে চিহ্নিত করে এই জনগোষ্ঠীকে অন্যদের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করতে। এ জন্যে তারা ইসলামের নামে জঙ্গি তৎপরতায় অর্থায়ন, ইসলাম ও মুসলমানবিরোধী লেখালেখি ও অপপ্রচারসহ নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। পরিণামে বিশ্বব্যাপী বাড়ছে মুসলমানদের ওপর হামলা এবং ঘৃণা ও বিদ্বেষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রস্তাবের আলোকে জাতিসংঘ সম্প্রতি ‘ইসলামফোবিয়া’ দূরীকরণে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করতে উদ্যোগ নেয়। সময়ের প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক বলতে হবে। বিশ্বব্যাপী ‘ইসলামফোবিয়া’ দূরীকরণে এমন পদক্ষেপ কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে, সন্দেহ নেই।
ইসলামোফোবিয়া ঘৃণামূলক অপরাধ, মৌখিক অপব্যবহার, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য এবং মৌলিক অধিকার অস্বীকারসহ বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পায়। ইসলামোফোবিয়া শুধুমাত্র স্বতন্ত্র মুসলমানদেরই প্রভাবিত করে না বরং সামাজিক সংহতি ও বহুত্ববাদকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি সাম্য, সহনশীলতা এবং মানবাধিকারের নীতিগুলোকে ক্ষয় করে। এটি সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে, সামাজিক সংহতিকে বাধাগ্রস্ত করে এবং ভয় ও অবিশ্বাসের পরিবেশকে স্থায়ী করে। উল্লেখ্য, ২০২২ খ্রিস্টাব্দে ‘ইসলামফোবিয়া’ বা ইসলামভীতি নিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। সেখানে ইসলামভীতি মোকাবেলায় ১৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর তিনবছর আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চে দু’টি মসজিদে গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত হন অর্ধশতাধিক মুসল্লি। এখন পশ্চিমাবিশ্বসহ সারাবিশ্বে মুসলিমবিদ্বেষ ও বৈষম্য বেড়ে যাওয়ায়, বিশেষ করে ভারতে দিন দিন মুসলিম বিদ্ধেষ ও নিপীড়ন বেড়ে চলার প্রেক্ষিতে চলতিবছর ১৫ মার্চ পাকিস্তান চিনের সহায়তায় ‘ইসলামফোবিয়া’ দূরীকরণে জাতিসংঘের পদক্ষেপ কামনা করে একটি প্রস্তাব আনে। ইসলামভীতির পাশাপাশি, হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ এবং অন্য যেসব ধর্ম এই ধরনের বিদ্বেষ, বৈষম্য এবং হিংসার শিকার হয়, তারও উল্লেখ ছিল প্রস্তাবে। কিন্তু এই প্রস্তাবে ভারত ভোটদানে বিরত থাকে। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের সাধারণ সভায় ‘মেজার টু কমব্যাট ইসলামোফোবিয়া’ (ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পদক্ষেপ) শীর্ষক ওই প্রস্তাবনায় ১১৫টি দেশ পক্ষে ভোট দেয়। কোনও দেশ এই প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে ভোট না দিলেও, ভারত, ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ইউক্রেন, বৃটেনসহ ৪৪টি দেশ এই প্রস্তাবনায় ভোটদান থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি পেশ করতে গিয়ে সেদিন পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুনির আক্রম ইসলামভীতি, মুসলিমবিরোধী মনোভাব ও বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। বলেন, শুধু ইসলামধর্ম নয়, বিদ্বেষের শিকার প্রত্যেক ধর্মের মানুষের নিরাপত্তার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে প্রস্তাবে। একইসঙ্গে জাতিসংঘে পাকিস্তান সিএএ ও অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রসঙ্গ তুলে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে। ভোটদান থেকে বিরত থাকার কারণ হিসেবে জাতিসংঘে ভারতের হয়ে বিবৃতি দেন সেখানকার দিল্লির প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ। তিনি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে প্রমাণ মিলেছে যে যারা আব্রাহমিক ধর্ম অনুসরণ করে না, তারাও ধর্মীয় ভীতির শিকার হয়। হিন্দুবিরোধী, বৌদ্ধবিরোধী ও শিখবিরোধী মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে। খ্রিস্টানভীতি ও ইসলামভীতির জেরে সমস্ত পদক্ষেপের নিন্দা করলেও, ইসলামের গ-ি পেরিয়ে সমস্ত ধর্মীয় ভীতিকেই স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’ রুচিরা আরও বলেন, পৃথিবীতে হিন্দুধর্মে বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা ১২০ কোটি। বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ৫৩.৫ কোটি, শিখধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ৩ কোটি। এরা প্রত্যেকেই ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার। তাই শুধুমাত্র একটি ধর্মের কথা বলা অনুচিত। তাঁর মতে, ‘শুধুমাত্র ইসলামভীতির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে, একই সমস্যায় জর্জরিত অন্য ধর্মগুলিকে উপেক্ষা করলে, অসাম্য এবং একঘরে হয়ে যাওয়ার অনুভূতি গ্রাস করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভারত এ বিষয়েও জোর দিয়েছে যে ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে এমন নজির স্থাপন করা উচিত হবে না, যাতে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ভীতিকে কেন্দ্র করে অসংখ্য প্রস্তাব তোলা যায় ও বিভিন্ন ধর্মীয় শিবিরে জাতিসঙ্ঘের বিভক্ত হয়ে পড়ার শঙ্কার সৃষ্টি হয়। এ রকম ধর্মীয় বিষয়ের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের অবস্থান বজায় রাখা জাতিসঙ্ঘের জন্য জরুরি। সেটি না হলে তা বিশ্ববাসীকে একটি পরিবার হিসেবে থাকা এবং শান্তি ও সম্প্রীতির ব্যানারে আমাদের একত্র করার পরিবর্তে বিভক্ত করে ফেলতে পারে।’ রুচিরা কম্বোজ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ইসলামভীতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, অন্যান্য ধর্মের মানুষও বৈষম্য সহিংসতার সম্মুখীন। শুধু ইসলামভীতি মোকাবেলায় মনোযোগ নিবদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের সাথে যুক্ত সাদৃশ্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো উপেক্ষা করা হলে তাঁদের মধ্যে ‘বর্জন ও অসমতার’ অনুভূতি অজান্তেই স্থায়ী হতে পারে।’
এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, পৃথিবীতে সব ধর্মের মানুষই নানাকারণে নানাভাবে বিদ্বেষ ও বৈষম্যের শিকার। তবে, ইসলাম ও মুসলমানদের মতো নয়। বিশ্বের যে দিকে তাকাই সে দিকেই পৈশাচিক কায়দায় মুসলিম নির্যাতনের চিত্র দেখা যায়। ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রীয় ইন্ধনেও ইসলাম ও মুসলিমবিরোধী তৎপরতা দেখতে পারা যায়। ভারত, মিয়ানমার, ইসরায়েল, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ রাষ্ট্রীয়ভাবেই মুসলমানদের প্রতি নিপীড়ন ও বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। মুসলমানদের প্রতি সাধারণ মানুষের মনে ঘৃণা ও ক্ষোভ তৈরির নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী গোষ্ঠীগুলো মুসলমানদের সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা অপপ্রচারের পাশাপাশি পরোক্ষে কিছু মুসলমানকে দিয়ে সন্ত্রাসী হামলাসহ এমন কিছু অপকর্ম করাচ্ছে যা ইসলাম অনুমোদন করে না। অথচ তারা কৌশলে কিছু তরুণের ব্রেন ওয়াশ করে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, যাতে অন্যদের মনে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ তৈরি করছে। পশ্চিমাবিশ্বে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে মিডিয়াও ভূমিকা রাখছে। শুধু তাই নয়, কোনো দেশ মুসলমানদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন হলে সেসব দেশে মুসলমান নামধারী ভাড়াটিয়াদের দ্বারা সন্ত্রাসী হামলাসহ নানাঘটনার জন্ম দিচ্ছে। সম্প্রতি রাশিয়ায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ আছে, এ ঘটনার পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাবিশ্বের হাত আছে। কিন্তু সাধারণ চোখে এসবের বিচার-বিশ্লেষণ কঠিন। ফলে অন্যধর্মের সাধারণ মানুষ ইসলাম ও মুসলমানদের ভুল বুঝছে। তাদের অনেকেই মুসলমানদের ওপর হামলাও চালাচ্ছে। তবে সমীক্ষায় দেখা গেছে, মুসলিম পুরুষদের তুলনায় মুসলিম নারীরা ইসলামোফোবিয়ার শিকার হয় বেশি। উদাহরণ স্বরূপ, ফ্রান্সে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম নারীদের জন্য কর্মস্থলে এবং প্রকাশ্য জনবহুল স্থানে হিজাব (মস্তকাবরণী, ঘোমটা, ধর্মীয় পোশাক) পরা নিষিদ্ধ করা হয়, যাকে অনেকেই ইসলামোফোবিয়ার ফলশ্রুতি হিসেবে দেখে থাকেন। কিন্তু একটি সৌহার্দ্যময় নিরাপদ বিশ্ব গড়তে এমন পরিস্থিতির অবসান জরুরি। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘ প্রস্তাব ভূমিকা রাখতে পারে।
তবে চূড়ান্তভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, ঘৃণা, বিদ্বেষ ও বৈষম্য দূরীকরণে মুসলমানদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। ইসলামবিরোধী যেসব অপপ্রচার হচ্ছে কাজে-কর্মে-কথায়-আচরণে এবং লেখালেখি ও যুক্তিতর্কে তার জবাব দিতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমাবিশে^ মুসলিম সংখ্যা বাড়ার কারণে অনেকে মুসলমানদেরকে ভবিষ্যতের জন্য হুমকি ভাবছে। এ ভাবনা যে অমূলক তা প্রমাণের দায়িত্ব নিতে হবে মুসলিমসমাজকে। মুসলিমনেতারা নানাভাবে পশ্চিমাদের বুঝাতে হবে, মুসলিম উপস্থিতি পশ্চিমাসমাজের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে অবদান রেখেছে। নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, ঐতিহ্য, এবং শিল্প, বিজ্ঞান, সাহিত্য ও রন্ধনপ্রণালীর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং রাখছে। এই বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করে আরো নতুনত্ব এবং একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ট্যাপেস্ট্রির দিকে নিয়ে যেতে কাজ করতে হবে একত্রে। তাছাড়া ইসলামী মূল্যবোধ সামাজিক ন্যায়বিচার, সহানুভূতি এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার উপর জোর দেয়। পশ্চিমাবিশ্বের মুসলমানরা সমতা, অন্তর্ভুক্তি এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, যা কেবল তাদের নিজস্ব সম্প্রদায়ের জন্যই নয় বরং সামগ্রিকভাবে সমাজকে উপকৃত করতে পারে। একইসঙ্গে মুসলিম উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীরা পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে। তাদের দক্ষতা এবং উদ্যোক্তা উদ্যোগগুলো উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এবং চাকরির সুযোগ তৈরি করে, মুসলিম এবং বৃহত্তর সমাজ উভয়েরই উপকার করে। পশ্চিমাবিশ্বে ইসলামের উপস্থিতি আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও বোঝাপড়ার পথ খুলে দেয়। গঠনমূলক কথোপকথনের মাধ্যমে, ভুলধারণাগুলো দূর করা যেতে পারে, বিভিন্ন ধর্মীয়সম্প্রদায়ের মধ্যে সহনশীলতা, সহানুভূতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে পারে। বুঝাতে হবে পশ্চিমাবিশে^ ইসলাম এবং মুসলমানদের উপস্থিতি শান্তি-স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন-প্রগতি ও সমৃদ্ধির সহায়ক। ইসলাম সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। অন্য সব ধর্মীয় বিশ^াসকে সম্মান করে। প্রকৃত মুসলমান কখনো সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেয় না। বরং সবধরনের অমানবিক কর্মকা-কে ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যান করে। তাছাড়া ইসলাম, এর মূল্যবোধ এবং সমাজে এর অবদান সম্পর্কে প্রচার, অজ্ঞতার বিরুদ্ধে ইসলামের লড়াই এবং অমুসলিমদের মধ্যে আরও সূক্ষ্ম বোঝাপড়া গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে উৎসাহমূলক আন্তঃধর্মীয় কথোপকথন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে হাইলাইট করে এমন স্কুলপাঠ্যক্রম এবং মুসলমানদের সঠিকভাবে চিত্রিত করে এমন মিডিয়া উপস্থাপনা। আর শুধু পশ্চিমাবিশ্বে নয়, ভারতসহ সারাবিশ্বেই অন্য ধর্মাবলম্বীদের সামনে ইসলামের প্রকৃত শান্তি ও মানবিক দিকটি তুলে ধরতে সব মুসলমানকেই কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সব ইতিবাচক উপায়ই অবলম্বন করতে হবে। সঠিকভাবে ইসলামের প্রকৃত রূপটি উপস্থাপিত হলে ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে ভুলবোঝাবুঝি দূরীভূত হবে। এতে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ ও বৈষম্য দূর হওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।
পূর্বকোণ/পিআর