চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

ওদের হাতে লাল-সবুজের পতাকা, হৃদয়ে বাংলাদেশ

বিদেশের মাটিতে দেশের প্রতিনিধিত্বে চট্টগ্রামের ক্যাডেট তাহমিদ-জামিল

মরিয়ম জাহান মুন্নী

১৫ অক্টোবর, ২০১৯ | ৩:২০ পূর্বাহ্ণ

দেশকে ভালোবেসে দেশের জন্য কাজ করার মধ্যে আছে অন্যরমক ভালোলাগা। আর যদি আমার মত একজন বৃহৎ পরিসরে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে তাহলেতো কোন কথাই থাকে না। অনেকগুলো দেশের পতাকার মধ্যে নিজ দেশের পতাকা নিয়ে দাঁড়ানোর মধ্যে আছে ভিন্ন এক অনুভূতি। আমি সেই গৌরবের অংশীদার হতে পেরে সত্যি গর্বিত। আর আমাকে এ সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)। কথাগুলো বলেন (কর্ণফুলী রেজিমেন্ট) বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের ক্যাডেট সার্জেন্ট মুবতাসিম তাহমিদ। এ বছরের জানুয়ারি মাসে বিএনসিসি থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ১১ জন ক্যাডেট এম্বেসেডর হয়ে ভারতের দিল্লী সফরে যায়। সেখানে চট্টগ্রাম থেকে মুবতাসিম তাহমিদ ও চট্টগ্রাম কলেজের ক্যাডেট জামিল সামস এ সুযোগ পেয়েছিলেন।

বিএনসিসি মূলত এমন একটি মাধ্যম যেখানে একজন ক্যাডেট জীবনের অনেক গুরত্বপূর্ণ বিষয় শিখতে পারে। এখানে একজন ক্যাডেটকে অস্ত্র ধারণের শিক্ষা দেয়া থেকে শুরু করে অগ্নিনির্বাপণ, প্রাথকিম চিকিৎসা, মাদকের কুফল, ইভটিজিং, ভূমিকম্পে করণীয়, শরীরচর্চা, অস্ত্র প্রশিক্ষণ, ফায়ারিং ম্যাপ রিডিং, ফাঁদ, টহল, হানা, ছদ্মবেশ ও গোপনীয়তার মত সামরিক বিষয় হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এভাবে একজন ক্যাডেট দেশ সেবার মহান ব্রত অন্তরে ধারণ করে সুনাগরিক হয়ে উঠেন। প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য ক্যাডেটদের বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করা হয়। বিশেষ করে সার্কভুক্ত দেশগুলো এ সুযোগ পেয়ে থাকে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড, ভুটান, চায়না, হংকং, মালদ্বিপ ও ভারত। এ ক্যাডেটদের বিশ্ব ভ্রমণে এসব দেশের সামরিক ব্যবস্থার সাথে পরিচিত করা হয়।

তাহমিদ বলেন, আমি যখন ৭ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করি তখনই আমাদের বিদ্যালয়ের বিএনসিসি শাখার কথা জানতে পারি। এমনিতে সেনাবাহিনীতে কাজ করা আমার স্বপ্ন ছিল। কারণ এ পেশায় থেকে দেশের জন্য কাজ করা যায়। তার উপর সিনিয়র ভাইদের দেখতাম প্রতিদিন পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন ট্রেনিং করতে। এসবই আমাকে টানতে থাকে। তাই ২০১৩ সালে বিএনসিসি জুনিয়র ডিভিশনে প্রথম যোগদান করি। সেখান থেকে আমি বিএনসিসির অনেকগুলো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি।

এভাবে বাংলাদেশ আর্মিদের আন্ডারে অনেকগুলো ট্রেনিংও করি। এতে আমার মধ্যে বিএনসিসির প্রতি আরো আগ্রহ জন্মায়। আবার এখানে আরো ভালোলাগার বড় কারণ হচ্ছে আমরা বিএনসিসির ক্যাডেটরা যেকোন দুর্যোগে মানুষের জন্য কাজ করতে পারি। আবার বড় সমস্যাগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীদের সাথেও কাজ করতে পারি। আর এতে আমার মধ্যে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। বর্তমানে আমি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ি ও সিনিয়র ডিভিশন ক্যাডেট হিসেবেও আছি। আমরা ক্যাডেটরা ২০১৮ সালে প্লাটুন লিখিত পরীক্ষার, ব্যাটালিয়ন লিখিত পরীক্ষা, রেজিমেন্ট লিখিত পরীক্ষা, রেজিমেন্ট কমান্ডারের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যে নির্বাচিত হয়ে সরাসরি ঢাকায় ডিজির কাছে পরীক্ষা দিয়েছি। এভাবে সারা বাংলাদেশের বিএনসিসির পাঁচটি রেজিমেন্ট থেকে আমাদের ১১ জনকে সিলেকশন করা হয়। পরবর্তীতে আমরা ১১ জন এ বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতের দিল্লী ক্যান্টনমেন্টে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের টিমলিডার ছিলেন মেজর হামিদ আব্দুল ওয়াদুদ। ১৪ দিনের এ সফর বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট