চট্টগ্রাম রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণ বৃহস্পতিবার, গর্ভবতীদের কোনো প্রভাব ফেলে?

অনলাইন ডেস্ক

১৭ অক্টোবর, ২০২৪ | ১১:৩১ অপরাহ্ণ

চলতি বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণ হবে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর)। জানা গেছে, চন্দ্রগ্রহণটি বাংলাদেশ কেন কোনো জায়গা থেকে দৃশ্যমান হবে না। ২০২৪ সালের শেষ গ্রহণটি উপচ্ছায়া চন্দ্রগ্রহণ। চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে গর্ভবতী নারীরা ক্যালেন্ডারে দাগ দিতে থাকেন। কারণ ওইদিন তাদের নাকি অনেক কিছুই নিষেধ। এরকম অনেক ভ্রান্ত ধারণা আমাদের চারপাশে ঘুরতে থাকে।

আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে যে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীরা কিছু খেতে পারবে না। এ সময় তারা মাছ, তরিতরকারি বা এজাতীয় কোনো কিছু কাটাকাটিও করতে পারবে না। এ সময় কিছু খেলে কিংবা কাটাকাটি করলে গর্ভস্থ সন্তানের বিকলাঙ্গ হওয়ার অথবা যেকোনো ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

এ দু‘টি ধারণাই অমূলক ও কুসংস্কার। ইসলামি শরিয়তে এমন বিশ্বাসের কোনো সুযোগ নেই।

ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগের মানুষের বিশ্বাস ছিল, জগতের বৃহৎ কোনো পরিবর্তনের কারণে চাঁদ এবং সূর্যের গ্রহণ লাগে। যেমন বড় কারও জন্ম, মৃত্যু কিংবা দুর্ভিক্ষের আগমন ইত্যাদির কারণে প্রকৃতিতে এমন ঘটে।

রাসুল সা: তাদের এ ভুল বিশ্বাস খন্ডন করে বলেন, ‘সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ কারও জন্ম-মৃত্যুর কারণে হয় না, এগুলো আল্লাহর নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শন মাত্র। যখন তোমরা তা (সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ) দেখবে তখন নামাজে নিমগ্ন হবে।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস: ১০৪২, মুসলিম শরিফ, হাদিস: ৯১৪।-হাদিস দু‘টির ব্যাখ্যা লক্ষণীয়)

চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় কি করা উচিৎ, এ ব্যাপারে হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। রাসুল স: -এর জীবদ্দশায় একবার সূর্যগ্রহণ হলো। তখন তিনি লম্বা কেরাত ও লম্বা রুকু-সিজদার মাধ্যমে নামাজ আদায় করলেন। অতপর বললেন, ‘সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শন মাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। যখন তোমরা তা দেখবে তখন বেশি বেশি আল্লাহকে ডাকবে (দোয়া করবে), বেশি বেশি তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলবে, নামাজ পড়বে এবং সদকা করবে।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস: ১০৪৪)

নাসা অনুসারে, বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আমেরিকার সময় সকাল ৭টা ২৬ মিনিটে গ্রহণটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চাঁদ তিন দিন থাকবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এই বছরের অক্টোবরের পূর্ণিমাকে একটি সুপারমুন হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে, যেটি ঘটে যখন একটি চাঁদ তার কক্ষপথের নিকটতম বিন্দুতে বা তার কাছাকাছি থাকে, যার ফলে চাঁদ নাটকীয়ভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উজ্জ্বল এবং বড় দেখায়।

হান্টার মুন হবে টানা চারটি সুপারমুনের তৃতীয়, নাসা এবং থমাসের মতে এটি বছরের সবচেয়ে বড় এবং উজ্জ্বল সুপারমুন হবে।

এর আগে দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণ হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর। তবে আংশিক এ চন্দ্রগ্রহণটি বাংলাদেশ থেকে দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ থেকে এ গ্রহণ দেখা না গেলেও অ্যান্টার্কটিকা, পশ্চিম ভারত মহাসাগর, আফ্রিকা, ইউরোপ, আটলান্টিক মহাসাগর ও পলিনেশিয়া অঞ্চল থেকে আংশিকভাবে দৃশ্যমান হয়।

প্রসঙ্গত, পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে এলে চন্দ্রগ্রহণ হয়। সেই সময় পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপরে পড়ে।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট