চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বৃত্তি পাবে মোট এক লাখ ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী

ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে!

শিবু কান্তি দাশ হ ঢাকা অফিস

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান সরকার শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ, এমপিও ভুক্তিকরণ, শিক্ষার মানোন্নয়নেসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বৃত্তির সংখ্যা ও অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ করা হচ্ছে। বর্তমানে সারাদেশে প্রথম শ্রেণির বৃত্তি (ট্যালেন্টপুল) ও সাধারণ কোটায় ৮২ হাজার ৫০০ জনকে বৃত্তি দেয়া হয়। আগামী বছর থেকে এ সংখ্যা বাড়িয়ে এক লাখ ৬৫ হাজার করা হবে। ফলে দ্বিগুণ হচ্ছে বৃত্তির সংখ্যা। একই সঙ্গে অর্থের পরিমাণও দ্বিগুণ করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার আরো কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতে এমন প্রস্তাব দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে চলতি বছর প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে নতুন বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সংখ্যা এবং এ বাবদ অর্থ দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে গত আগস্ট মাসে এক সভায় এ প্রস্তাব তোলা হয়। সবাই এ প্রস্তাবে সম্মতি দেন এবং ডিপিই ও মাদরাসা বোর্ডকে প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়। পরে গত সপ্তাহে ওই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে সারাদেশে ৩৩ হাজার ট্যালেন্টপুল ও ৪৯ হাজার ৫০০ জনকে সাধারণ কোটায় অর্থাৎ মোট ৮২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৬০ হাজার শিক্ষার্থীকে ওই দুই কোটায় বৃত্তি দেয়া হয়।
ইবতেদায়িতে সাত হাজার ৫০০ জনকে ট্যালেন্টপুল এবং ১৫ হাজার শিক্ষার্থীকে সাধারণসহ মোট ২২ হাজার ৫০০ জনকে বৃত্তি দেয়া হয়। এসব শিক্ষার্থীর বৃত্তিবাবদ ট্যালেন্টপুলে মাসিক জনপ্রতি ৩০০ টাকা, সাধারণ বৃত্তিবাবদ মাসিক জনপ্রতি ২২৫ টাকা দেয়া হয়।

ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, এক লাখ ৬৫ হাজার জনের মধ্যে ট্যালেন্টপুল কোটায় ১ লাখ ২০ হাজার এবং সাধারণ কোটায় ৪৫ হাজার জনকে বৃত্তি দেয়া হবে। পাশাপাশি বর্তমানে ট্যালেন্টপুল কোটায় মাসিক ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা ও সাধারণ কোটায় ২২৫ টাকার বদলে ৪৫০ টাকা দেয়া হবে।
জানা গেছে, সাধারণ কোটায় ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতি ওয়ার্ডে ছয়জনকে বৃত্তি দেয়া হয়। এর মধ্যে তিনজন ছাত্রী ও তিনজন ছাত্র থাকবে। এছাড়া ওয়ার্ড পর্যায়ে বৃত্তি দেয়ার পর অবশিষ্ট বৃত্তি থেকে প্রতি উপজেলায় বা থানায় দুজন ছাত্র ও দুজন ছাত্রীকে বৃত্তি দেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতি বিভাগ থেকে তিনজন করে ২৪ জনকে সাধারণ বৃত্তি দেয়ার পর চারজনের সাধারণ বৃত্তি সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে

নতুন প্রস্তাব কার্যকর হলে ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রতি ওয়ার্ডে ১২ জনকে বৃত্তি দেয়া হবে। এছাড়া ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতি উপজেলায় বা থানায় চারজন ছাত্র ও চারজন ছাত্রীকে বৃত্তি দেয়া হবে। প্রতি বিভাগে ছয়জন করে ৪৮ জনকে সাধারণ বৃত্তি দেয়ার পর আটটি সাধারণ বৃত্তি সংরক্ষণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিই মহাপরিচালক এফ এম মনজুর কাদির বলেন, প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তির সংখ্যা ও অর্থ দ্বিগুণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের এক সভায় প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ সবাই সম্মতি জানিয়েছেন। ওই সভার পর অধিদফতর ও মাদরাসা বোর্ডকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আমরা যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা তৈরি করি। চলতি সপ্তাহে সেটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। যেহেতু প্রতি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, বিপুল শিক্ষার্থী ভালো ফল করছে। অনেকে ভালো ফল করলেও তাদের বৃত্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট