চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রতিবন্ধীদের বৈষম্য পদে পদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১:০১ অপরাহ্ণ

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমাজের বিশেষ ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এত উদ্যোগের পারও সুবর্ণ নাগরিকদের ভাগ্যের উন্নয়ন খুব একটা হয়নি। সরকারের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি সংস্থা অপ্রতিবন্ধী নারীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও সেই কার্যক্রমে প্রতিবন্ধী নারীরা অবহেলিত।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত ২ দশকে সার্বিকভাবে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হলেও তাদের পরিসংখ্যানগত অবস্থান বিবেচনায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল এখনো অর্জিত হয়নি। তাই এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের। বিভিন্ন পরিসংখ্যা ও গবেষণার তথ্য বলছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান, সামাজিক সহযোগিতা ও সামাজিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার থেকে প্রায় সময়ই বঞ্চিত হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে নারী প্রতিবন্ধীরা বিভিন্ন পরিসরে দ্বিগুণ বৈষম্য, দারিদ্র্য এবং যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

 

তথ্য বলছে, দেশের ৯৯ শতাংশ প্রতিবন্ধী নারী দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। প্রতিবন্ধী নারীদের ৯৬ শতাংশই মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। আর ১ শতাংশেরও কম প্রতিবন্ধী মেয়েশিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী শিশুদের উপস্থিতির হার মাত্র ৪০ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩ ভাগের ১ ভাগ প্রতিবন্ধী দরিদ্রতার কারণে চিকিৎসাসেবা নিতে পারে না। প্রতিবন্ধীদের মধ্যে বিয়ের হার অপ্রতিবন্ধীদের তুলনায় অনেক কম, আবার বিয়ে-বিচ্ছেদের হার বেশি।

 

আর পুরুষ প্রতিবন্ধীর তুলনায় নারী প্রতিবন্ধীর ক্ষেত্রে এসব মৌলিক চাহিদা প্রাপ্তিতে অসমতার হার বেশি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় বলা হয়, প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ঘাটতি থাকায় দেশের অধিকাংশ প্রতিবন্ধী মৌলিক মানবাধিকার ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

 

এছাড়া রাষ্ট্রীয় বাজেটে প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ অর্থ বাস্তবসম্মত ও যথেষ্ট নয় এবং যে বরাদ্দ দেয়া হয় তাও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে যথাযথভাবে তাদের কাছে পৌঁছায় না। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান, পরিবহন, সার্বিক অবকাঠামো, সম্পদের ওপর সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতির কারণে উন্নয়নে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।

 

পূর্বকোণ/আর

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট