চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম কাস্টমস: আলোর মুখ দেখেনি ই-অকশন

সারোয়ার আহমদ 

২ আগস্ট, ২০২১ | ১২:৩৫ অপরাহ্ণ

নিলাম কার্যক্রমকে অধিকতর স্বচ্ছ, আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে গত বছরের অক্টোবরে ই-অকশন কার্যক্রম চালু করেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। তবে এই কার্যক্রম শুরু হলেও গত ৯ মাসে ই-অকশন হয়েছে মাত্র দুটি এবং গত ৬ মাসে হয়নি একটিও ই-অকশন। সর্বশেষ গত ২০ জানুয়ারি ২০ লটে ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৫১৯ কেজি পেঁয়াজ নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল চট্টগ্রাম কাস্টমসের দ্বিতীয় ই-অকশন। এর আগে গত বছরের ২০ অক্টোবর ১৬ লট পণ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম নিলাম।

এদিকে ই-অকশন না হলেও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে প্রতি মাসেই ম্যানুয়াল নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় প্রতি মাসে দুটি এবং কোন মাসে তিনটিও ম্যানুয়াল নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৯ মাসে ম্যানুয়াল নিলাম হয়েছে ১৪টি। এমনকি কঠোর লকডাউনেও বাদ পড়েনি নিলাম কার্যক্রম। তবে এই সময়ে ই-অকশন হয় দুটি এবং গত ৬ মাসে নেই একটিও ই-নিলাম কার্যক্রম।

প্রসঙ্গত, ই-অকশনের নিলাম কার্যক্রম শুরু হয় গত বছরের ১৭ অক্টোবর। সেদিন দুপুরে ই-অকশন সফটওয়ারের উদ্বোধন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কাস্টমস নিরীক্ষা, আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য) খন্দকার আমিনুর রহমান।

ই-অকশনে একজন দরদাতা কিভাবে বা কোন প্রক্রিয়ায় দরপত্র জমা দিবেন এবং আনুসঙ্গিক দলিলাদি জমা দিবেন তা হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিতে ফ্রি কর্মশালার আয়োজন করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। এর পাশাপাশি ই-অকশন সংক্রান্ত বুকলেট চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের ওয়েবসাইটে, চট্টগ্রাম বন্দর স্টেডিয়ামের বিপরীতে কাস্টমস অকশন শেডের নীচতলায় ও সরকারি নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কে এম কর্পোরেশনের অফিস থেকে বিতরণ করা হয়।

গ্রাহকদের কাছে ই-অকশন পুরোপুরি সহজবোধ্য হয়ে গেলে সব অকশনই অনলাইন ভিত্তিক করার পরিকল্পনা রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের।

নিলাম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ই-অকশন কার্যক্রম অনলাইনভিত্তিক হলেও একজন বিডারকে ব্যাংকে গিয়ে নিলামের পূর্বেই টাকা জমা দিয়ে আসতে হয়। এরপর অনলাইনে ই-নিলামের আবেদন করে বাকি সব কাজ ম্যান্যুয়ালিই করতে হয়। তাই অনেকেই ই-অকশনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেনি। তবে তারা যদি অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং নিয়মিত ই-অকশনে অংশগ্রহণ করে তাহলে এই কার্যক্রম তাদের কাছে ম্যানুয়াাল নিলামের চেয়েও সহজ মনে হবে। একই সাথে ই-অকশনের সুফল তারা পাবে।

ই-অকশন প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার (নিলাম) আল আমিন পূর্বকোণকে বলেন, ই-অকশনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো প্রতিটি পণ্যের ছবি তুলে অনলাইনে আপলোড করতে হয়। এছাড়া অনলাইন ই-অকশনের ওয়েব বেইজড সফওয়ারটি এখনো ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়নি। এসব কারণে ই-অকশন এখনো জনপ্রিয় হয়নি। তবে খুব শীগ্রই সফওয়ারটি আরো আধুনিক করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও ঢাকার বাইরের জেলাগুলোর মানুষও যেন নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

নিলাম কার্যক্রমের অন্যান্য সীমাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি নিলামে আগে নিলামযোগ্য পণ্যের ইনভেন্ট্রি করতে হয়। এজন্য বন্দরের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। নিলামযোগ্য কনটেইনারের অবস্থান বন্দর থেকে খুজে দেওয়া হয়। সেটি নামিয়ে দেওয়ার পর কনটেইনার খুলে কাস্টমস কর্মকর্তারা পণ্যের ইনভেন্ট্রি করে। এরপর সেই পণ্য কাস্টমসের গ্রুপ ভিত্তিক কর্মকর্তারা মূল্য নির্ধারণ করেন এবং সেটি নিলাম কমিটি আবার যাচাই করে সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করেন। এসব কার্যক্রম করতে হয় প্রতিটি নিলামের প্রতিটি লটের পণ্যের। যা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। সময়ের মধ্যে এই কাজ করতে বন্ধের দিনেও শনিবার ক্রাশ প্রোগ্রাম রাখা হয়। তাই প্রতিটি ম্যানুয়াল নিলামের কাজ করতে করতেই ই-অকশনের কাজ করে ওঠা সীমিত জনবলের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে আগস্টে একটি ই-অকশন দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট