চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাবলুর মনোনয়নপত্র জমাদানে পাল্টে গেছে হিসেব-নিকেশ

মোহাম্মদ আলী

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-৮ আসনে গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয়পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। একইদিন মনোনয়নপত্র জমা দেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। দুইজনই মহাজোটের শরিকভুক্ত হওয়ায় এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে হিসাব-নিকেশ শুরু হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয়পার্টি জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও এ আসনে দুই দলই আলাদা প্রার্থী দিয়েছে। তাই ভোটের হিসেবে এসেছে পরিবর্তন। শেষ পর্যন্ত দুই দলের প্রার্থী মাঠে থাকলে বিএনপিসহ ত্রিমুখী লড়াই হবে এ আসনে। নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। এর আগে ২০১৮ সালে এ আসনে বিএনপি থেকে তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এবার উপ-নির্বাচনেও তিনি দল থেকে মনোনয়ন পান। গত বুধবার নির্বাচন অফিসে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা জানায়, মহাজোটের দুই প্রার্থী মাঠে থাকলে চট্টগ্রাম-৮ আসনে মূলত ভোট যুদ্ধ হবে ত্রিমুখী। আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, জাতীয়পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এবং বিএনপির আবু সুফিয়ানের মধ্যে এ লড়াই হবে।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী উপজেলা, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ আংশিক এলাকা) সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগকারী মোরশেদ খান। এর আগে তিনি এ আসন থেকে চারবার সংসদ সদস্য বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারও তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করা হয়েছিল। এ জন্য তিনি সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন। গতকাল শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমাদানের কথা ছিল তাঁর। কিন্তু পারিবারিক চাপের কারণে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেননি বলে তাঁর ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছেন। তিনি প্রার্থী হলে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে কিছুটা বেকায়দায় পড়তে হতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন আবু সুফিয়ান।

এদিকে মহাজোটের শরিক দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও জাতীয়পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে ঘিরে নতুন করে হিসেব-নিকেশ শুরু হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দুই প্রার্থী মাঠে থাকলে নির্বাচনে উত্তাপ ছড়াবে। কারণ জাতীয়পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এর আগে রাউজান ও চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। জাতীয়পার্টির সময়ে তিনি মন্ত্রীও হন। আওয়ামী লীগ ও জাতীয়পার্টিসহ অন্যান্য দলকে নিয়ে মহাজোট সৃষ্টিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এমনকি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে তিনি মহাজোটের ঐক্য ধরে রাখতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখেন। এ কারণে সেবার তাঁকে চট্টগ্রামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনে মহাজোট থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ওই নির্বাচনে তিনি বিজয়ীও হয়েছিলেন। নগরীর চান্দগাঁও, মোহরা, পাঁচলাইশ এবং বোয়ালখালীতে আত্মীয়তার সুবাদে তাঁর একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এর সাংগঠনিক অবস্থাও অত্যন্ত মজবুত। তৃণমূলে তাঁর শক্তিশালী ভিত্তি রয়েছে। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতিতে জড়িত থাকার ফলে তাঁর বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সংগঠক রয়েছেন। এ কারণে নাটকীয় কিছু না হলে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এবং আবু সুফিয়ানের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখার অপেক্ষা শুধু চট্টগ্রাম-৮ আসনের জনগণই নয়, পুরো দেশবাসী অধীর অপেক্ষায় থাকবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট