চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

পাইকারি বাজারে কমলেও খুচরায় প্রভাব নেই

হ পাইকারিতে ৮০ টাকা পর্যন্ত কমলেও খুচরা বাজারে এখনও ২২০-২৪০ টাকা হ আজ থেকে টিসিবি নগরীর ছয় স্পটে ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করবে

ইমরান বিন ছবুর

১৯ নভেম্বর, ২০১৯ | ৩:০৩ পূর্বাহ্ণ

পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা পর্যন্ত কমলেও এখনো তার কোন প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। গত শনিবার মিশর এবং চীন যে পেঁয়াজ পাইকারিতে ১৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে। দুইদিনের ব্যবধানে গতকাল সোমবার বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। কিন্তু খুচরা বাজারে এখনো তার প্রভাব পড়েনি। গতকাল খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। এছাড়া, পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করায় খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে কেনা-বেচায় ভাটা পড়েছে। শীঘ্রই খুচরা বাজারেও পেঁয়াজের দাম কমে আসবে এবং আজ থেকে নগরীর ছয়টি স্পটে টিসিবির মাধ্যমে প্রতিদিন ছয় টন পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনো তার প্রভাব পড়েনি। মিশর ও চীন থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ গতকাল সোমবার পাইকারিতে ১০০ টাকা বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হয়েছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ। বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির কারণ জানতে চাইলে খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের পেঁয়াজ আগের দামে কেনা। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

নগরীর বাকলিয়া থানাধীন মিয়াখান নগর এলাকার শাবনুর স্টোর মুদির দোকানে দেখা যায়, মিশর ও চীনের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকায়।

পাইকারিতে ১০০ টাকার এ পেঁয়াজ খুচরা ২২০ টাকায় কেন বিক্রি করা হচ্ছে জানতে চাইলে দোকানদার মো. সাকিব জানান, এগুলো কয়েকদিন আগের কেনা ছিল। তাই আমাদের আগের দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, পেঁয়াজের দাম আস্তে আস্তে সহনশীল পর্যায়ে চলে আসা শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার থেকে টিসিবির মাধ্যমে নগরীর ৬টি স্পটে ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। প্রতি স্পটে একটন করে প্রতিদিন মোট ছয় টন পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ এককেজি পেঁয়াজ ক্রয় করতে পারবে। থানার আশপাশের এলাকায় এসব পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। যাতে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়। এছাড়া, কার্গোর পেঁয়াজ এসে পৌঁছলে কয়েকদিনের মধ্যে খুচরা বাজারেও ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাবে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা এখনো পেঁয়াজ হাতে পাইনি। শুনেছি পেঁয়াজ আসছে। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে, পেঁয়াজ পেলেই আমরা বিক্রি শুরু করবো।’
খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার ঘুরে জানা যায়, গতকাল সোমবার চীন এবং মিশনের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। যা শনিবার ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায়। যা গত শনিবার বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। দুই দিনের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের পাইকারি বাজার। এসময় অনেক দোকানদারকে অলস সময় পার করতে দেখা যায়।

এ সম্পর্কে খাতুনগঞ্জের মো. ফিরোজ নামের এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন যেখান ৩০০ থেকে ৪০০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হতো, সেখানে গতকাল সোমবার মাত্র ১৫ বস্তার মত পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। এস আলম গ্রুপের পেঁয়াজ আসছে এবং সরকার বিমানে পেঁয়াজ আনছে, এই সংবাদে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কেনা-বেচা একেবারে কমে এসেছে।

তিনি আরো বলেন, হঠাৎ পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার ফলে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার বাইরের ব্যবসায়ীরা খাতুনগঞ্জ থেকে পেঁয়াজ কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। কয়েকদিন আগেও ঢাকা, চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা খাতুনগঞ্জ থেকে পেঁয়াজ নিয়ে গেলেও এখন তা বন্ধ করে দিয়েছে। দাম আরো কমতে পারে এই আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ ক্রয় বন্ধ রেখেছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট