চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নিরাপদ খাদ্য আইনের কর্মশালায় খাদ্যমন্ত্রী

সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে নিরাপদ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:২২ পূর্বাহ্ণ

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেছেন, সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে নিরাপদ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবারের প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে খাদ্যের মান বজায় রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু আইন ও মোবাইল কোর্ট দিয়ে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর একটি হোটেলে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ বাস্তবায়নে জনসচেতনতা’ শীর্ষক কমর্শালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সন্তানদের কী আমরা ভেজাল খাবার খেতে দেব। একজন শ্রমিক বা ব্যবসায়ী আরেক জায়গায় ভোক্তা। যেখানেই খাদ্য উৎপাদন সেখানেই ভেজাল। শ্রমিকরা সচেতন হলে আমরা বিষমুক্ত খাবার পেতে পারি। মানব ধ্বংসকারী ভেজাল খাবার আমরা বর্জন করবো। আগামীতে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমাদের সন্তানদের বাঁচাবো। ফসল উৎপাদনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কীটনাশকে এখন পোকা মরে না। পালিয়ে যায়। বিধিবিধান মেনে কীটনাশক ব্যবহার করলে ক্ষতি

নেই। কৃষকদের বোঝাতে হবে, কৃষক নিজে যা ফলাচ্ছেন, এর প্রভাব তার ছেলের ওপরও পড়তে পারে। জনসচেতনতার মাধ্যমেই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব দাবি করে মন্ত্রী সাধন চন্দ্র বলেন, মসজিদের ইমাম, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের এক মিনিট করে মাদকবিরোধী ও নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে মানুষদের সচেতন করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বার, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সবাই সোচ্চার হলে ভেজালমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এক সময় বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে ছিল। সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সেই ঝুঁকি আমরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। এখন আমরা নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করার কাজ করছি।
খাদ্যে ভেজালরোধে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এ উল্লেখিত শাস্তি শুধু নয়, এর বিরুদ্ধে দ-বিধিতে নির্দিষ্ট শাস্তির পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এ মৃত্যুদ-ের বিধান রয়েছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট অভিযান জোরদার করতে হবে।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা। নিরাপদ খাদ্য পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। নিরাপদ খাদ্যের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহাবুদ্দিন বলেন, মানুষের জন্য নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গীকার। তিনি বলেন, সরকার গঠনের পর দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ভেজাল খাবাররোধেও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান বলেন, নিরাপদ খাদ্য আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। দেশের মানুষের খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামীর সভাপতিত্বে ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা আফরিন মুস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম (অতিরিক্ত সচিব)। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব সমীর কুমার বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল, চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, ক্যাব’র সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী প্রমুখ।

মন্ত্রী সকাল সাড়ে ৯টায় সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেন। র‌্যালি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে হোটেল সৈকত গিয়ে শেষ হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট