চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শঙ্খচরের শীতকালীন সবজি

দোহাজারী রেলওয়ে বাজারে চড়াদামে বিক্রি

নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ

২৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:১২ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশ উপজেলার শঙ্খনদীর চরে উৎপাদিত শীতকালীন সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। দোহাজারী রেলওয়ে বাজারে প্রতিদিন সকালে চাষীরা শীতকালীন সবজি নিয়ে আসছেন অধিক লাভে বিক্রির আশায়।

শীতকালীন সবজির মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালংশাক, সরিষাশাক, মুলাশাক, লালশাক, লাউশাক প্রভৃতি। নানারকম শাক পাইকারি বাজারে দুই খাঁচা (আনুমানিক ৫০ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে ১৫শ টাকার মধ্যে। তা খুচরা বাজারে আঁটিভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। এছাড়া সবজির মধ্যে মুলা, বেগুন, শিম, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বরবটি, তিতা করলা, শসা ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মুলা (প্রকারভেদে) দুই খাঁচা ২ হাজার থেকে ৫ হাজার, বেগুন ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার, শিম প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বরবটি কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, তিতা করলা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুলা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, শিম ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, তিতা করলা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
শঙ্খচরের সবজি চাষী কবির আহমদ বলেন, এখানে ভাদ্র মাসের শুরু থেকেই মুলা, বেগুন, বরবটি ও শিম চাষ শুরু হয়। কার্তিক মাসের শুরু থেকেই বাজারে বিক্রি করা যায়। অধিক লাভের আশায় চাষিরা আগাম শীতকালীন সবজির চাষ করেন। এছাড়া শীতকালীন অন্যতম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি আশ্বিন মাসের শেষের দিকে রোপণ করা শুরু করে কৃষকেরা। এর আগে তারা মুলা বিক্রি করেন। আশ্বিন মাসের শেষদিকে ও অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকেই সকল প্রকার শীতকালীন সবজি বাজারে পুরোদমে বিক্রি করেন। দোহাজারী বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জাহেদ বলেন, দুই সপ্তাহ আগেও প্রতিটির সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি ছিল। বর্তমানে সরবরাহ একটু বেড়ে যাওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি শঙ্খচর থেকে আসে। পাশাপাশি বেগুন ও শিম পাওয়া যাচ্ছে। শীত বাড়ার সাথে সাথে সবজির সরবরাহও বাড়তে থাকবে। শীতে সকল প্রকার সবজি পাওয়া যাবে এ বাজারে।

দোহাজারী বাজারে সবজি কিনতে আসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকের হোসেন বলেন, শীতের সময়ে কেবল নানা প্রকৃৃতির সবজি পাওয়া যায় এবং একটু আরাম করে শাকসবজি খাওয়া যায়। তিনি বলেন, দোহাজারী বাজারটি শঙ্খচরের কাছে হওয়ায় তরতাজা সবজি পাওয়া যায়। এমনকি কৃষকরা সরাসরি জমি থেকে সবজি তুলে বাজারে নিয়ে এসে বিক্রি করেন। তাই দিনের সবজি দিনে কিনে খাওয়া যায়।

দোহাজারী রেলওয়ে মাঠে পাইকারি সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শঙ্খতীরবর্তী দোহাজারী, ধোপাছড়ি, চরবরমা, বৈলতলী এলাকা থেকে নৌকাযোগে চাষিরা নানাপদের শীতকালীন শাকসবজি নিয়ে আসেন এ বাজারে। সেখান থেকে পাইকারিরা ব্যবসায়ীরা দরদাম করে চাষিদের কাছ থেকে সবজি কিনে ট্রাক, পিক-আপসহ বিভিন্ন পরিবহনে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন সবজি বাজারে নিয়ে যায়।

সবজি চাষীরা জানান, শঙ্খতীরের মাটি যেকোন ধরনের সবজি চাষের জন্য আদর্শ। এখানে উৎপাদিত সবজি স্বাদেও অতুলনীয়। তাই শঙ্খচরের সবজির চাহিদা অন্যান্য এলাকা থেকে একটু বেশি। দামও পাওয়া যায় ভালো। এক্ষেত্রে অনেক সময় লাভবান হন আবার অনেক সময় ভারিবর্ষণে ক্ষতির শিকারও হন কৃষকেরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট