নগরীতে পাইকারি চালের দাম বস্তা প্রতি বেড়েছে ২০০ টাকা। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। মাছের দামও কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে। তবে মসলার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর ২ নম্বর গেট কর্ণফুলী বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
চট্টগ্রাম নগরীর পাইকারি বাজারে খবর নিয়ে জানা গেছে, কোয়ালিটি চালের দামই বেড়েছে। বাজারে বর্তমানে মিনিকেট ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, জিরাশাইল ৬৭ থেকে ৬৯ টাকা আর পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগের চেয়ে কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা বেশি। মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৪৯ টাকা কেজি দরে।
চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঈদুল আজহায় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেড়েছে চালের দাম। পাইকারিতে বস্তা প্রতি বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে তা আরও বেশি হতে পারে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মোটা চালের দাম। কর্ণফুলী মার্কেটের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজিই এখন ৬০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ৭০ টাকার নিচে পছন্দের কোনো সবজি মিলছে না। হাতে গোনা কয়েকটি সবজি এর ব্যতিক্রম।
গতকাল বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ৪০-৪৫ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, বেগুন ৭০-১০০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, চিচিঙা ৬০-৮০ টাকা, কচুরলতি ৬০-৭০ টাকা, কাঁকরোল ৭৫ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৭০ টাকা, ঝিঙে ৭০-৮০ টাকা এবং টমেটো ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে পেঁপে ৪০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, শসা ৫০-৬৫ টাকা, পটল ৩০-৪০ টাকা এবং সজনেডাটা ১২০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি চালকুমড়া ৪০-৫০ টাকা এবং লাউ ৪০-৬০, লেবু ডজন ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজার এবং সবজির মান আকারভেদে দাম কমবেশি ছিল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখনো পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় এবং ঈদুল আজহার বন্ধের কারণে সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেশি। মাছের বাজার ঘুরে প্রতিকেজি চাষের চিংড়ি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। দেখা যায়, প্রতিকেজি চাষের রুই, কাতলা ৩০০-৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকা, লইট্টা মাছ ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া কেজি আদা ১১০-১২০ টাকা, রসুন ১৬০-১৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা, শুকনো মরিচ ৩৩০ টাকা, হলুদ ২৬০ টাকা, চিনি ১১৩-১২০ টাকা, এলাচি ৪৩৫০ টাকা, চনার ডাল ১১৫ টাকা, খেসারি ১০০-১১০ টাকা, মসুর ডাল ১০০-১৪০ টাকা, মুগডাল ১২৫ টাকা, বুটের ডাল ৬৫ টাকা, ছোলা ১০৫-১১০ টাকা, সয়াবিন তেল লিটার (বোতল) ১৮০ ও খোলা ১৬০ টাকা, সরিষার তেল ২৩০ কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতো রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি হাড়সহ গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা, হাড় ছাড়া ১০০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি কেজি ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া দেশি মুরগি ৬০০-৬২০ টাকা, লাল লেয়ার ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। হাঁসের দাম জাতভেদে প্রতি পিস ৬০০-৭০০ টাকা।
এছাড়াও ফার্মের মুরগির ডিম ডজন ১২৫-১৩০ টাকা, দেশি হাঁসের ডিম ২০০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকা এবং কোয়েল পাখির ডিম বক্স ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক ধরেই এই দামের আশপাশে রয়েছে সব ধরনের ডিমের দাম।
পূর্বকোণ/ইবনুর