চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

ক্লিন সিটি গড়ার বাধা দূর করতে অভিযান শুরু হচ্ছে কাল
চসিকের লোগো

ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাবেন চসিকের ম্যাজিস্ট্রেট

ক্লিন সিটি গড়ার বাধা দূর করতে অভিযান শুরু হচ্ছে কাল

ইমরান বিন ছবুর

১৪ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতার পেছনে ময়লা-আবর্জনাকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়। নগরীকে ক্লিন সিটি হিসেবে গড়তেও বড় বাধা এটি। তবে এবার যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা ঠেকাতে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে অভিযানে নামছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে তাদের অভিযান শুরু হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান- নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত ও ক্লিন সিটি হিসেবে গড়তে সম্প্রতি একগুচ্ছ পরিকল্পনা হাতে নেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে চসিক। তবে ক্লিন সিটি গড়তে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দায়ীদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চসিকের গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে- নগরীর পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৪১টি ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালিত হবে। নগরবাসীকে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলা এবং খাল-নালা-রাস্তায় ময়লা না ফেলার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারো বাসার সামনে ময়লা পাওয়া গেলে অথবা যত্রতত্র ময়লা ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এছাড়া, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সামনে বাধ্যতামূলকভাবে বর্জ্যের বিন রাখা এবং কোন প্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা পাওয়া গেলে অথবা কাঁচাবাজার, কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল, রেস্তোরা, হাসপাতাল ইত্যাদির আবর্জনা যত্রতত্র ফেললে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ জেল-জরিমানা করা হবে।

নগরীর পরিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে পলিথিন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ১৫ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অভিযান পরিচালনা করবে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়- ফুটপাত ও সরকারি জমি দখল ও উক্ত স্থানে স্থাপনা নির্মাণ থেকে বিরত থাকা। ফুটপাত, সড়ক ও নালা-খাল অবৈধ দখল মুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান চলবে। নির্মাণ সামগ্রী রাস্তায় রেখে চলাচলের পথ সংকীর্ণ করলে মালামাল জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। যথাসময়ে গৃহকর পরিশোধ পরিশোধ না করলে হোল্ডিং নম্বর বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাইলিং এর মাটি নালায় ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকানের সামনে মালামাল রেখে ফুটপাত সংকীর্ণ বা বন্ধ করলে মালামাল জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গত তিনমাস ধরে নগরবাসীকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করছি। এখনো যারা সচেতন হচ্ছে না তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। যে কোন উপায়ে নগরীকে পরিচ্ছন্ন ও জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বুঝিয়ে হোক বা আইন প্রয়োগ করে হোক যে কোন উপায়ে আমাদের নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে হবে। সম্প্রতি বাকলিয়া কৃষিখালসহ বেশ কয়েকটি খাল আমরা পরিষ্কার করেছি কিন্তু কিছু মানুষের অসচেতনতার কারণে আবার খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। তাই যারা যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবে তাদের আইনের আওতায় আনার বিকল্প নেই।

এদিকে, গত বছরের ৫ নভেম্বর চসিকের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে খাল-নালায় ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে নগরবাসীকে আহ্বান জানান। অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এবার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে পাঁচটি থেকে সভা হয়েছে। এসব সভায় নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রামের সেবা সংস্থাগুলোর করণীয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে মে মাস পর্যন্ত।

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট