চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পতন থেকে নাগালের বাইরে পেঁয়াজের বাজার

হ পাইকারি মোকামে গত তিন দিনে দুই দফায় বেড়েছে ২০ টাকা হ চাহিদার তুলনায় ভালোমানের পেঁয়াজের সরবরাহ কম : দাবি আড়তদারদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:৫২ পূর্বাহ্ণ

 

শেয়ার বাজারের মতো উত্থান-পতন খেলা চলছে পেঁয়াজের বাজারে। গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম পাইকারি মোকামে ৯০-৯৫ টাকা পর্যন্ত ওঠেছিল। তা থেকে নেমে ৫৫-৬০ টাকায় ঠেকেছিল। সর্বশেষ গত তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দুই দফায় বেড়েছে।

চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আহসান খালেদ পূর্বকোণকে বলেন, বাজারে ভালোমানের পেঁয়াজের সংকট রয়েছে। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের অর্ধেকই পচে যাচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। তাই ভালোমানের পেঁয়াজের দাম ফের বেড়ে যাচ্ছে। তবে পচা পেঁয়াজ ফেলে দিতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের পেঁয়াজ কিছুটা নষ্ট হলেও খাওয়ার উপযোগী থাকে। কিন্তু মিয়ানমারের পেঁয়াজ পচে গেলে তা ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

তিনি আরও বলেন, বাজার এখন মিয়ানমারের পেঁয়াজের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তুরস্ক ও মিশর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে প্রভাব ফেলতে পারছে না।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি মোকাম চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৭৫-৮০ টাকা। গত বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ বেড়েই চলেছে। কয়েকদিন আগে এই পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মিয়ানমারের পেঁয়াজ আরেক ধাপ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। কয়েকদিন আগে তা বিক্রি হয়েছিল ৪০-৪৫ টাকায়। মিশরের আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা ও চায়না পেঁয়াজ (বড় আকার) ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তুরস্কের আমদানি করা পেঁয়াজে বাজারে অপ্রতুল। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান আড়তদাররা। পাইকারি মোকামে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খুচরা বাজারেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

খাতুনগঞ্জ হামিদ উল্লাহ মার্কেটের আড়তদার মো. জাবেদ ইকবাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি অনেকটা কমে গেছে। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ না থাকায় উন্নতমানের পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় বাজারে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তিনি।

তিনিও বলেন, মিয়ানমারের পেঁয়াজে বেশির ভাগই পচে যাচ্ছে। পচা ও নি¤œমানের এসব পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে।’
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি মো. জাহাঙ্গীর আলম পূর্বকোণকে বলেন, ভারতীয় আমদানিকারকেরা পুরোনো এলসি’র পেঁয়াজ সরবরাহ করায় বাজারে স্বস্তি ফিরেছিল। বর্তমানে এখন কোনো এলসি নেই। পেঁয়াজের বাজার এখন মিয়ানমারের পেঁয়াজ-নির্ভর হয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ী নেতা জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় সারাদেশের ব্যবসায়ীরা এখন চট্টগ্রাম ও টেকনাফমুখী হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে আমদানিকারকেরাও কৌশলে টেকনাফ থেকে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন। টেকনাফ থেকে সরাসরি ঢাকাসহ সারাদেশে চলে যাচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেকটা কমে যাওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের দাম ফের বাড়তে শুরু করেছে।

সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর সরকার টিসিবি’র মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিলে বাজার অনেকটা স্থিতিশীল থাকত। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগে পেঁয়াজ আমদানির দাবি করেছেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট