চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

চার থানার আতঙ্ক সাজ্জাদ

দুই মাসে তিন খুন সাজ্জাদের হাতে

নাজিম মুহাম্মদ

২২ অক্টোবর, ২০২৪ | ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ

পঁচিশ বছরের যুবক সাজ্জাদ হোসেন। কথায় কথায় গুলি ছোঁড়া এ যুবক বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও হাটহাজারী থানার এলাকার মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। গত দুই মাসে গুলি করে তিনজনকে হত্যা করেছে সাজ্জাদ ও তার অনুসারীরা।

 

সর্বশেষ গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটায় আফতাব উদ্দিন তাহসীন (২৭) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে সাজ্জাদ। একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটালেও সাজ্জাদের নাগাল পাচ্ছে না পুলিশ। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হত্যাকাণ্ড ঘটলেও সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ঘটনার ব্যাপারে তেমন কিছু জানে না বলে জানান চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন। তিনি বলেন, শুনেছি গুলিতে একজন নিহত হয়েছে। কী কারণে খুনের ঘটনা ঘটেছে তা খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

 

এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সাজ্জাদ তার দুই সহযোগীদের নিয়ে গুলি করেন। এ ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে উঠে আসে। ভয়ে ভবন মালিকেরা কেউ মামলা করেনি। দুই খুন: ২৯ আগস্ট দুজনকে হত্যা করে সাজ্জাদ ও তার অনুসারীরা। নিহতরা হলেন হাটহাজারীর পশ্চিম কুয়াইশ গ্রামের মো. আনিস ও তার বন্ধু মাসুদ কায়সার।আনিস হত্যায় বায়েজিদ থানায় ৩০ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করেন আনিসের স্ত্রী শামিম আকতার মনি। মাসুদ হত্যায়ও হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মো.আরিফ। দুটি মামলায় সুনির্দিষ্ট চারজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন মো. আরমান বাচ্চু, মো. জাহাঙ্গীর, শিকারপুরের মো. জামালের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২৫) ও মো. হাসান (৩৫)। আনিস ইট বালির ব্যবসা করতেন।

 

গত ২৯ আগস্ট সকাল আনুমানিক ১০টার সময় বন্ধু মাসুদকে নিয়ে ব্যবসায়িক কাজে কুয়াইশ মোড়ে যান আনিস। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় আনিসকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এলাকার লোকজন আহত আনিসকে যখন উদ্ধার করতে বের হয় তখন মাসুদের সঙ্গে হাটহাজারী পশ্চিম কুয়াইশ ফারুকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাদের দেখা হয়। তখন মাসুদ তাদের বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় (২৯ আগস্ট) আনিসসহ একটি অটোরিকশা করে বায়েজিদ বোস্তামি কুয়াইশ-অক্সিজেন রোডের নাহার গার্ডেনের পূর্ব দিকে পৌঁছালে তিন চারজন যুবক আনিসকে লক্ষ্য করে গুলি করে। মাসুদ তখন পাশের বিল দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মাসুদ তার পরনের কাপড় পাল্টাতে বাসায় যাবার পথে হাটহাজারী পশ্চিম কুয়াইশ ফারুকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে সাবেরের দোকানের সামনে পৌঁছালে একই যুবকরা মাসুদকেও গুলি করে হত্যা করে।

 

কে এই সাজ্জাদ: বহদ্দারহাট আট হত্যা মামলার আসামি ভারতে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী হিসেবে এই সাজ্জাদ অপরাধজগতে পা রাখেন। এরপর দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। গত ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।

 

স্থানীয় লোকজন জানান, বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন অনন্যা, শীতলঝর্ণা, কালারপুল, হাটহাজারীর কুয়াইশ, চান্দগাঁও হাজীরপুল ও পাঁচলাইশ এলাকায় ১৫ থেকে ২০ জনের বাহিনী নিয়ে দাপিয়ে বেড়ান সাজ্জাদ।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট