চট্টগ্রাম রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডিজেলের জন্য ফিলিং স্টেশনে ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ জুন, ২০২৩ | ১২:০৬ অপরাহ্ণ

চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। এই কারণে বেড়েছে জেনারেটরের ব্যবহার। জেনারেটর চালাতে বেড়ে গেছে ডিজেলের চাহিদাও। নগরীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে ডিজেলের জন্য ভিড় করছেন গ্রাহকরা। ড্রাম ও নানা ধরনের পাত্র নিয়ে ফিলিং স্টেশনগুলোতে লাইন ধরছেন তারা। গতকাল রবিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকার ফিলিং স্টেশন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। বিকালে গণি বেকারি এলাকার কিউসি ফিলিং স্টেশনে কথা হয় আব্দুর রহিম নামের একজনের সঙ্গে। তিনি রহমতগঞ্জ এলাকা থেকে এসেছেন। রহিম জানান, দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর চালাতে তিনি ডিজেল কিনতে এসেছেন। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর তিনি ডিজেল পেয়েছেন। দেবপাহাড় এলাকা থেকে আসা সুভাষ বোস বলেন, তিনিও জেনারেটরের জন্য ডিজেল কিনেছেন। তাকেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।

 

জাকির হোসেন রোডের শাহ আমিনুল্লাহ ফিলিং স্টেশনে ডিজেল কিনতে আসা দক্ষিণ খুলশী এলাকার বহুতল ভবন ‘মনরোভিয়া’র তত্ত্বাবধায়ক শাহ আলম পূর্বকোণকে বলেন, ওই ভবনের ১১০ কিলোওয়াট সক্ষমতার জেনারেটর চালাতে স্বাভাবিক সময়ে গড়ে ২-৩ লিটার ডিজেল প্রয়োজন হয়। তবে এখন লোডশেডিং বাড়ায় গড়ে ৮-১০ লিটার ডিজেল প্রয়োজন হচ্ছে। ডিজেলের জন্য ফিলিং স্টেশনে গিয়ে লম্বা লাইন ধরতে হচ্ছে। সন্ধ্যার দিকে দামপাড়া এলাকার চট্টগ্রাম পুলিশ ইনস্টিটিউট ফিলিং স্টেশনে ডিজেলের জন্য অপেক্ষমাণ ব্যক্তিদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। এই ফিলিং স্টেশন ছাড়াও ডিজেলের জন্য রবিবার ভিড় ছিল ২ নম্বর গেট এলাকার সেনা কল্যাণ ফিলিং স্টেশন, টেক্সটাইল এলাকার এস আলম ফিলিং স্টেশনেও। ডিজেলের ক্রেতাদের জন্য এদিন ছোট ছোট গণপরিবহন চালকদের ডিজেল পেতে বেগ পেতে হয়। একাধিক ফিলিং স্টেশনে ছুটতে হয়। লোডশেডিং বাড়ায় ডিজেলের বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন নগরীর বন্দর এলাকার মেসার্স সিরাজুল হক এন্ড সন্স’র ডিলার মুনতাসিরুল হক।

 

তিনি পূর্বকোণকে বলেন, আশপাশে কারখানা বেশি। এসব কারখানায় জেনারেটর বেশি ব্যবহৃত হয়। লোডশেডিং বাড়ায় ডিজেল কিনতে ক্রেতারা ভিড় বেশি করছেন। শনিবার ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকায় রবিবার বাড়তি ভিড় তৈরি হয়। এখন গড়ে ২৫-৩০ হাজার লিটার ডিজেল বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রাম পুলিশ ইনস্টিটিউট ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবুল হাসনাত পূর্বকোণকে বলেন, লোডশেডিং বাড়ায় ডিজেলের বাড়তি চাহিদা যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। স্বাভাবিক সময়ে ৩ হাজার লিটার বিক্রি হলেও এখন ৪-৫ হাজার লিটার ডিজেল বিক্রি হচ্ছে। জেনারেটরের ব্যবহার বাড়ায় ডিজেল কিনতে ভিড় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জাকির হোসেন রোডের শাহ আমিনুল্লাহ ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার কবিরুল ইসলামও। সহসা লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি দেখছেন না পিডিবির কর্মকর্তারা। জানতে চাইলে পিডিবি দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম পূর্বকোণকে বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে চট্টগ্রামে রবিবার বিদ্যুতের চাহিদা দেড় হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়। তবে উৎপাদন কম থাকায় জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যায়নি। এই কারণে রবিবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ৩৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং দিতে হয়েছে।

 

চাহিদা বাড়লেও দেশে ডিজেলের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিপিসির কর্মকর্তারা। বিপিসির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে পূর্বকোণকে বলেন, রবিবার পর্যন্ত দেশে ৪ লাখ ৫২ হাজার ৯০২ মেট্রিক টন ডিজেল মজুদ রয়েছে। এই পরিমাণ ডিজেল দিয়ে সারাদেশে প্রায় এক মাস নিরবচ্ছিন্ন ডিজেল সরবরাহ করা সম্ভব।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট