চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

পলিথিনমুক্ত করার কঠিন চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ জুন, ২০২৩ | ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী নদী এখন পলিথিনের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নদী ড্রেজিং করতে গিয়ে উঠে আসে পলিথিনের ভয়াবহতা। নগরীর নালা-খাল বেয়ে পলিথিনের বিশাল স্তূপ পড়েছে নদীতে। পলিথিনের কারণে নদী ড্রেজিং করতে গিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে। তবে সুখবর হচ্ছে, আগামী ১ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসক। এ জন্য ১২ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রাকিব হাসান বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন বা পলিথিনসামগ্রী ব্যবহারের ফলে মহানগরীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমে এ ভয়াবহ অবস্থা ব্যাপক আকার ধারণ করে। তাই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা আমরা পলিথিনমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, চট্টগ্রামবাসী পলিথিনের ক্ষতি অনুধাবন করে এ বিষয়ে এগিয়ে আসবেন।

 

গত বুধবার ‘পলিথিনমুক্ত চট্টগ্রাম বাস্তবায়ন’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যবসায়ী, চট্টগ্রাম চেম্বারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

 

সভায় চট্টগ্রামকে পলিথিনমুক্ত করার জন্য ১২টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তা হল : পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পাটজাতপণ্যের উৎপাদন, ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে পাঠ্য বইয়ে লিপিবদ্ধ করার বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আনতে হবে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে কর্মশালার আয়োজন করে ছাত্র-ছাত্রীকে সচেতন করতে হবে। পলিথিন বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধে জনসাধারণ-ভোক্তা পর্যায়ে সচেতন করার লক্ষ্যে সভা-সেমিনারের আয়োজন করতে হবে।   পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানা বন্ধে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা গোয়ান্দা সংস্থা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। পলিথিন তৈরির কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। পলিথিনের বিকল্প পণ্য হিসেবে পচনশীল পাটজাত, কাগজের অথবা কাপড়ের পণ্য ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। পলিথিনের বিকল্প পণ্য উৎপাদনে উদ্যোক্তাকে এগিয়ে আসতে হবে। উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আইনের ব্যবহার (যার কাছে পলিথিন ব্যাগ থাকবে তার উপর) যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা (চেম্বার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, পাট উন্নয়ন সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা) সঙ্গে যৌথভাবে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পলিথিন উৎপাদন, ব্যবহার, মজুদ ও বাজারজাতকারীর উপর সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগের (মোবাইল কোর্টের) মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।    পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ এ বর্ণিত ১৯টি পণ্য (ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুষ-খুদ-কুড়া, পোলট্রি ও ফিস ফিড) পাটের মোড়ক ব্যবহারের জন্য নির্দেশনা রয়েছে। উক্ত পণ্য সমূহে যে সকল উৎপাদনকারী পলিথিন জাতীয় পণ্য ব্যবহার করেন, তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। আগামী ১ জুলাই হতে পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট