চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দৃশ্যমান সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স

ইমাম হোসাইন রাজু

১৩ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:০২ অপরাহ্ণ

মহামারি করোনার কারণে কাজে গতি কিছুটা স্থবির হলেও গেল এক বছরে গতি বেড়েছে চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণকাজের। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পুনঃসংস্কারের কাজ। মূল সড়কের দু’পাশের যাতায়াতে প্রস্তুত হয়েছে টানেল। এছাড়া কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও মুসলিম ইনস্টিটিউটের কাজও শেষ প্রায় ৮৫ শতাংশ। যা গেল এক বছরের মধ্যে কাজ হয়েছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ। বহু আগেই মূল ভবন দাঁড়িয়ে গেলেও এখন অনেকটাই দৃশ্যমান সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র ‘চট্টগ্রাম সংস্কৃতিক কমেপ্লক্স’।

 

নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত বিভাগ বলছে, সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের মধ্যেই পুরোপুরি কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি আগামী ডিসেম্বরে বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাও নিবেদন করা সম্ভব হবে নতুন রূপে সজ্জিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনারের পুনঃসংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে বহু আগেই। টাইলস গাঁথুনি থেকে শুরু করে সবকিছুই এখন প্রায় শেষ। মূল সড়কের দু’পাশে যাতায়াতে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে টানেল। টানেলের উপর দিয়েই মূলত শহীদ মিনার ও লাইব্রেরি ভবন এবং অডিটরিয়ামে যাতায়াত করা হবে। তাও এখন দৃশ্যমান। এছাড়াও লাইব্রেরি ভবন ও অডিটোরিয়াম অংশে টাইল্ধসঢ়;স ও ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে।

 

কাজের বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ পূর্বকোণকে বলেন, ‘সংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের শহীদ মিনার ও টানেলের অংশের কাজ শেষ। সেটি এখন দৃশ্যমান। পাশাপাশি মুসলিম ইনস্টিটিউটের প্রধান লাইব্রেরি ভবন থেকে শুরু মূল ভবনের কাজও এখন প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ করতে চাই। মোট কথা চলতি বছরের মধ্যে কাজটি শেষ করার তোড়জোড় চলছে। ইতোমধ্যে ভবনের টাইলস বসানোর কাজ চলমান। শুধুমাত্র লিফ্ধসঢ়;ট ও ইলেকট্রিক্যাল বা মেকানিক্যাল কিছু কাজ বাকি রয়েছে।’

 

২০১৭ সালের নভেম্বরে একনেকে পাস হয় চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স বা সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প। ২৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকার এ প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ১৬৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার কাজ চলমান আছে যেখানে মুসলিম ইনস্টিটিউট ভেঙে ফেলে মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় ১৫ তলা বিশিষ্ট একটি গ্রন্থাগার, ৮ তলা বিশিষ্ট মিলনায়তন ভবন ও একটি মাল্টিপারপাস হল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া রাস্তার এপার-ওপারকে সংযুক্ত করার জন্য হবে পাবলিক প্লাজা, ওপেন এয়ার থিয়েটার, মিউজিয়াম। পাবলিক প্লাজার ওপর অংশেই নির্মাণ হবে নতুন শহীদ মিনার।

 

সম্প্রতি সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসে কাজের গুণগত মান নিয়ে ভুয়সী প্রশংসা করে গেছেন গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। পাশাপাশি গেল মার্চ মাসে জেলা প্রশাসকও শহীদ মিনারের কাজে গতি ও মান নিয়ে প্রশংসা করেছেন বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগ।

 

এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ বলেন, ‘ইতোমধ্যে যারাই পরিদর্শনে এসেছিলেন, সকলেই কাজের মান নিয়ে প্রশংসা করেছেন। আমরাও কাজের মান নিয়ে কোন ধরনের ছাড় দিচ্ছি না। দিনরাতেই শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন। গুণগত মানও যেন ঠিক থাকে, সেজন্য তদারকিও করা হচ্ছে।’ কাজের মান নিয়ে গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মুস্তফা বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়মিত তদারকি ছিল। কাজের গুণগত মানও খুবই ভালো। অত্যন্ত ভালোভাবেই কাজগুলো সম্পন্ন হচ্ছে।’

 

এদিকে, চট্টগ্রামের বৃহৎ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের বই এবং তথ্যের চাহিদা যেমন পূরণ হবে, তেমনি নগরে সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে নতুন গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট