চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চালু হচ্ছে থাইরয়েড-হরমোন পরীক্ষা

ইমাম হোসাইন রাজু

১১ এপ্রিল, ২০২৩ | ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে চালু হতে যাচ্ছে থাইরয়েড ও হরমোনের সকল ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম। চলতি সপ্তাহ থেকেই এ সেবা পাবেন রোগীরা। বেসরকারি ল্যাবগুলোর তুলনায় অন্তত এক পঞ্চমাংশ খরচে চমেকের প্যাথলজি বিভাগে থাইরয়েড ও হরমোনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে।  এতদিন এ হাসপাতালের রোগীদের এসব পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ছুটতে হতো বেসরকারি ল্যাবগুলোতে। এতে করে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ও ভোগান্তিতে পড়তে হতো সাধারণ রোগীদের। তবে প্রতিষ্ঠার ৬৩ বছর পর এসে এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চালু হওয়ায় একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয় হবে রোগীদের, তেমনি ভোগান্তিও কমবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। জানা যায়, চমেক হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে চালু হতে যাওয়া থাইরয়েড-হরমোনের পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো বেসরকারি হাসপাতালের পাঁচ থেকে ছয় ভাগ মূল্যে করতে পারবেন রোগীরা। এরমধ্যে টিএসএইচ যেখানে বেসরকারি পর্যায়ে প্রকারভেদে ৮৫০ থেকে ১ হাজার টাকায় করা হয়, সেখানে চমেক হাসপাতালে করা যাবে মাত্র ২০০ টাকায়। টি-৩ ও টি-৪ বেসরকারিতে ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা করা হলেও একই পরীক্ষা চমেক হাসপাতালে করা যাবে মাত্র ২০০ টাকায়। আর এফটি-৩ ও এফটি-৪ বেসরকারিতে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় করা হলেও চমেক হাসপাতালে করা যাবে মাত্র ২৫০ টাকায়। প্রোলেকটিন পরীক্ষা মাত্র ২৫০ টাকায় করা যাবে চমেক হাসপাতালে। যদিও এ পরীক্ষা বেসরকারি ল্যাবে প্রকারভেদে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়।

 

চমেক হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ শুভাশীষ বড়ুয়া রাজু বলেন, ‘প্যাথলজি বিভাগ চালু হওয়ার পর কখনোই থাইরয়েড-হরমোন সংক্রান্ত কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা হাসপাতালে হয়নি। যার কারণে রোগীরা বাইরে গিয়ে অধিক দামে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হতো। বিষয়টি বর্তমান পরিচালক অনুধাবন করেছেন, যার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা চালুর ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে আধুনিক মেশিন, রিএজেন্ট সব কিছুই চলে এসেছে। চলতি সপ্তাহে থাইরয়েড-হরমোনের সকল পরীক্ষা সম্ভব হবে। চালু হলেই রোগীরা স্বল্পমূল্যে এসব পরীক্ষা করাতে পারবেন।’

 

তথ্য অনুসারে, ১৯৬০ সালে মাত্র ১২০ শয্যা ও অল্প কিছু রোগী নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র টার্শিয়াল পর্যায়ের এ হাসপাতাল। এরপর শয্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা নিরীক্ষার অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পেতে থাকলেও হরমনের পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়নি হাসপাতালটিতে। পৃথক হরমোন রোগ বিভাগ থাকলেও রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বেসরকারি ল্যাব কিংবা পাশর্^বর্তী নিউক্লিয়ার মেডিসন ইনস্টিটিউটে যেতে হতো। এ কারণে রোগীদের পরীক্ষার রিপোর্ট পেতেও যেমন অধিক সময়ের প্রয়োজন হতো, তেমনি অর্থও বেশি খরচ হতো। তবে হাসপাতালের নিজস্ব প্যাথলজি বিভাগে এ পরীক্ষা চালু হলে সাধারণ রোগীদের অর্থ যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনি ভোগান্তিও কমবে।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেই তার সব পরীক্ষা নিরীক্ষা এখানেই কম খরচে করা যায়, সে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা চালু করা হবে, পাশাপাশি নতুন নতুন যন্ত্রপাতিও স্থাপনের চেষ্টা চলছে। আমরা চাই একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ হাসপাতাল হিসেবে চমেক হাসপাতাল সারা দেশের মধ্যেই পরিচিত হবে।’

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট