অবশেষে জটিলতা কাটলো বিদেশি জাহাজের ওয়েভার সনদ প্রাপ্যতায়। এখন থেকে শিপিং এজেন্টদের আবেদনের ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ তিন দিনের মধ্যেই ওয়েভার সনদ ইস্যু করা হবে এবং বাংলাদেশি জাহাজের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন ব্যয় বিদেশি জাহাজের ব্যয়ের ন্যায় সমতা করা হবে বলে জানিয়েছে নৌপরিবহন অধিদপ্তর।

গত বুধবার নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মো. নিজামুল হকের সভাপতিত্বে মেইন লাইন অপারেটর, শিপিং এজেন্ট এসাসিয়েশন, ফিডার ভেসেল অপারেটর, বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপস্ ওনার এসোসিয়েশন ও এইচ আর লাইনের প্রতিনিধির সাথে এক জরুরী বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

সভায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) আইন ২০১৯ এর বিধি যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মো. নিজামুল হক ও চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ইকবাল আলি (শিমুল), পরিচালক মুনতারি রুবাইয়্যাত ও তানজিল আহমেদ।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশীয় পণ্যের নূন্যতম ৫০ শতাংশ বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ দিয়ে পরিবহন করা হবে। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্টরা নৌবাণিজ্য দপ্তরের কাছে ১৫ দিন আগে পণ্য বোবাইয়ের জন্য ওয়েভার সনদের আবেদন করবেন। শিপিং এজেন্টের আবেদনের প্রেক্ষিতে নৌবাণিজ্য কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপস্ ওনার এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের কাছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজের প্রাপ্ত্যতা নিশ্চিতের জন্য অনুরোধ করবেন। সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ওই দুই সংস্থা সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাহাদের মতামত জানাবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজের প্রাপ্যতার নিশ্চয়তা প্রদানে ব্যর্থ হলে নৌবাণিজ্য দপ্তর বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ নেই ধরে নিয়েই বিদেশি জাহাজের জন্য ওয়েভার সনদ জারি করবেন।

এছাড়া আগের ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট বন্দরে ও তারিখে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজের উপস্থিতি নিশ্চিত করিতে ব্যর্থ হলে অথবা নির্দিষ্ট বন্দরে ও তারিখের মধ্যে পণ্য বোঝাই করিতে ব্যর্থ হলে দায়ী পক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষকে বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণে বাধ্য থাকবে। বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ বন্দরে আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অথবা সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান অনুযায়ী পণ্য বোবাইয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

উল্লেখ্য বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ তার ধারণক্ষমতা বা অবশিষ্ট ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী পণ্য বোবাইয়ের অগ্রাধিকার পাবে। পণ্য পরিবহনের ব্যয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে পরিসেবার মান অনুযায়ী প্রতিযোগিতামূলক পরিবহন খরচ নির্ধারণ করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

পূর্বকোণ/জেইউ