চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

চট্টগ্রামে ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুমিল্লায় গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৪:১৬ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. সবুজকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে তার প্রকৃত নাম সুপন চন্দ্র দেব নাথ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টায় কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানাধীন ছাতিপট্টি এলাকার একটি স্বর্ণের দোকান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে নগরীর লালখান বাজার এলাকায় স্যানিটারির কাজের সূত্রে সবুজের সাথে পরিচয় হয় বাদীর পরিবারের সাথে। এরমধ্যে কোন এক সময় ভুক্তভোগী কিশোরী সাথে সবুজকে কথা বলতে দেখলে তার মা বিষয়টি মেয়ের বাবাকে জানায়। এরপর ভুক্তভোগীর বাবা সবুজকে ডেকে শাসাতে গেলে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে কিশোরীর বাবা সবুজকে থাপ্পরও দেয়। এতে সবুজ ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বছরের ২৮ জুলাই রাতে তার বাসায় নিয়ে গিয়ে কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় পরদিন ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিন পুলিশ সবুজকে গ্রেপ্তার করে প্রতিবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করে। পরে সবুজ জামিনে এসে পালিয়ে যায়। এ মামলায় ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর আদালত সবুজকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়।

 

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, আদালত থেকে ওয়ারেন্টের কপি পাওয়ার পর তাকে ধরতে অভিযান শুরু করি। অভিযানে আসামির ঠিকানা ফেনীর দাগনভূঞা থানায় গিয়ে দেখা যায় তার ঠিকানা সঠিক নয়। এরপর তার আসল নাম-ঠিকানা ও এনআইডি সংগ্রহ করে তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানাধীন ছাতিপট্টি এলাকার একটি স্বর্ণের দোকান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

জিজ্ঞাসাবাদে সবুজ জানায়, সবুজ নামে সে ছয়মাস জেলখানায় ছিল। পরে হাইকোর্ট থেকে জামিন পায়। সে স্বর্ণের দোকানে প্রকৃত নাম সুপন চন্দ্র দেবনাথ গোপন করে নারায়ণ পরিচয় দিয়ে চাকরি নেয়। দোকান মালিকও তাকে নারায়ণ নামে চিনেন। একপর্যায়ে সে তার প্রকৃত এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দেখায়। এনআইডি অনুযায়ী তার প্রকৃত নাম সুপন চন্দ্র নেবনাথ। সে কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার হেসাখাল এলাকার রাধাকৃষ্ণ দেবনাথের ছেলে।

 

সুপন চন্দ্র দেবনাথ আরও জানায়, সে পেশায় একজন স্বর্ণের কারিগর। নোয়াখালীর শহরে স্বর্ণের দোকানে কাজ করার সময় পরিবারের সাথে রাগারাগি করে সে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসে। এরপর খুলশী এলাকায় ভুয়া নাম-ঠিকানা ও ভিন্নধর্ম পরিচয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে পরিচিত হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলা থেকে রেহায় পেয়ে সে পুলিশকে ভুয়া নাম-ঠিকানা দেয়। পরে ওই নামে সে জামিনপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকে এবং যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেয়। পরে মামলার বাদি গ্রেপ্তার সবুজকে শনাক্ত করে। তার সাজা পরোয়ানায় উল্লেখিত নাম-ঠিকানা ও ধর্মের সাথে তার প্রকৃত নাম-ঠিকানা ও ধর্ম ভিন্ন হওয়ায় এই সংক্রান্তে প্রতিবেদনসহ আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট