চট্টগ্রাম রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সের খড়গ, নাসিবের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ জুলাই, ২০২২ | ২:৩২ অপরাহ্ণ

করোনার কারণে গত দুই বছর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ ছিল। দীর্ঘ সময় দোকানপাট বন্ধ থাকায় চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বড় ব্যবসায়ীরা নানান সহায়তা প্যাকেজ পেলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত থেকে গেছেন। এর মধ্যে আবার সরকারের নতুন পদক্ষেপ ক্ষুদ্র প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের ঝুঁকির মুখে ফেলছে। ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে প্রস্তুত করা খসড়ায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ছাড়া তামাক ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্দেশ অমান্যে প্রথমবার ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং পরে দ্বিগুণ হারে জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাব ও পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সমিতি বাংলাদেশ (নাসিব) চট্টগ্রাম মহানগর শাখা।

রবিবার (৩১ জুলাই) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে নাসিব আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠের সময় এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেন নাসিব চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি এএসএম আবদুল গফফার মিয়াজী।

তিনি বলেন, অধিকাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দোকান চালানো কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই। কিছু দিন পরপর জায়গা পরিবর্তন করতে হয়। আবার বহু বিক্রেতা ভাসমান। তাদের পক্ষে হোল্ডিং নম্বর দিয়ে লাইসেন্স নেওয়া অবাস্তব। দেশে প্রায় ১৫ লাখ নিম্ন আয়ের খুচরা বিক্রেতা আছে, যার অধিকাংশই প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভাসমান দোকানি। ফলে এই ধারা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, অযৌক্তিক কোনো নির্দেশনা ছাপিয়ে দিয়ে ক্ষুদ্র প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের বিতাড়িত করা যাবে না। যৌক্তিক নির্দেশনা দিতে হবে। যিনি কোরোসিন বিক্রি করেন খুচরা পর্যায়ে তাকে কী বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স নিতে হয়? যিনি দোকানে স্যালাইন বিক্রি করেন তাকে কী ওষুধ প্রশাসনের লাইসেন্স নিতে হয়? তাহলে খুচরা সিগারেট বিক্রির বেলায় কেন আলাদা লাইসেন্স প্রসঙ্গ আসবে? লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হলে নিম্ন আয়ের খুচরা বিক্রেতাদের ব্যবসায় খড়গ পড়বে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে এবং দৈনিক জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি আইনের অপপ্রয়োগ ও মাঠপর্যায়ে হয়রানির সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর এমনিতেই নানা বোঝা আছে জানিয়ে আবদুল গফ্ফার মিয়াজী বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ওপর করের বোঝা ব্যাপকভাবে চাপানো হয়েছে। এমনভাবে কর ও ভ্যাটের জাল বাড়ানো হয়েছে যাতে দেশের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও করের আওতায় চলে আসছেন। একইসঙ্গে ব্যবসার জন্য বিভিন্ন কাগজপত্র সংগ্রহের কার্যক্রমেও নানা ধরনের করের পরিমাণ ও আওতা বাড়ানো হয়েছে। এভাবে নানা করের বোঝাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি নুরুল আজম খান, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সেলিম,পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, এম এ হোসেন প্রমুখ ।

পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট