চট্টগ্রাম রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

নিম্ন মানের প্যাচওয়ার্ক ঝুঁকিতে ভারী গাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ জুলাই, ২০২২ | ১২:০৬ অপরাহ্ণ

নগরীর মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাটের দিকে যেতে এন মোহাম্মদের সামনের সড়কের অংশ ভেঙে যায় বর্ষার শুরুতেই। তাতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হলে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। এ কারণে ওই অংশে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে।

 

সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সেখানে প্যাচওয়ার্ক করে গর্ত ভরাট করে দেয়। দুই দিন না যেতেই সেই আগের অবস্থায় ফিরে গেছে সড়কের ওই অংশটি। ভারী যানবাহন গর্তে পড়ে যেকোন সময় উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া এই সামান্য অংশের জন্য প্রতিনিয়ত যানজট লেগে যায়।

 

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, নগরীর অক্সিজেন মোড়ে যুক্ত হয়েছে উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী সড়ক, কুয়াইশ থেকে বঙ্গবন্ধু এভেনিউ, মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন এবং ষোলশহর ২ নম্বর গেইট থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত সড়ক। চারদিক থেকে যানবাহন আসার কারণে এটি শহরের অন্যতম ব্যস্ততম একটি এলাকা। এই মোড়ের বড় একটি অংশ ভাঙ্গা। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ইট দিয়ে গর্তগুলো ভরাটের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তা ভারী যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ফের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে শহরের আরো বিভিন্ন সড়কের প্যাচওয়ার্ক উঠে ফের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

 

এছাড়া সিডিএ’র নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি বড় সড়ক চলাচল অযোগ্য বললে অত্যুক্তি হবে না। এর একটি হল নগরীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ (অক্সিজেন-কুয়াইশ)। এই সড়কে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। চার লেইনের এই সড়কে সৃষ্টি হওয়া বড় বড় গর্তের কারণে যানবাহন চলাচল করে দুই লেইন দিয়ে। এ কারণে একপাশ দিয়ে দুই দিকের গাড়ি চলতে গিয়ে প্রায়শঃ মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। গর্তে পড়ে গাড়ি উল্টে যাওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটে। সড়কটি নির্মাণের অর্ধযুগ পরেও সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করেনি সিডিএ।

 

অপরদিকে, রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বরাদ্দ না থাকায় ঠিকমত রক্ষণাবেক্ষণও করে না সিডিএ। অথচ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয় এভারকেয়ার হাসপাতালের রোগীদের। এছাড়া রয়েছে ফ্র্রোবেল একাডেমি, লিবারেল আর্টস, হলি চাইল্ড, অরবিট, অক্সিজেন স্কুলসহ প্রায় ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই সড়কের অনন্যা আবাসিক এলাকা সংলগ্ন ১৪ নং শিকারপুর ইউনিয়ন, কুয়াইশ, হাটহাজারী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের চলাচলের একমাত্র সড়কটির বর্তমানে বেহাল দশা।

 

এছাড়া সড়ক দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই, রাউজান, রাঙ্গুনিয়ার হাজার হাজার মানুষ ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা চলাচল করেন। তবে সিডিএ’র সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দু’বার ওয়াসা পাইপ লাইন নিতে রাস্তার দু’পাশেই কাটা হয়েছে। ফের মেরামতও করা হয়। তবে এখন সড়কটি মেরামতের জন্য সাত কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। কার্পেটিং কাজ শেষে সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করা হবে।

 

অপর একটি সড়ক হল লালখান বাজার হতে বিমান বন্দর পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কারণে সড়কটির কোন কোন অংশ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, বৃষ্টির পর পুরো শহরে একযোগে প্যাচওয়ার্ক শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন খুঁজে খুঁজে যেখানে গর্ত পাওয়া যাচ্ছে তা ভরাট করা হচ্ছে। অনেকসময় প্যাচওয়ার্ক করার সাথে সাথে বৃষ্টির পানি জমে গেলে তা উঠে যায়। তবে শহরের প্রধান সড়কের বড় একটি অংশ লালখান বাজার হতে বিমান বন্দর পর্যন্ত অংশে সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে। যে কারণে সড়কটির বেহাল দশা। সড়কটি চলাচলের যোগ্য করে দেয়ার জন্য সিডিএ’কে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। একইভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে অক্সিজেন থেকে কুয়াইশ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এভেনিউ’র। এই সড়কটিও সিডিএ’র আওতায় রয়েছে। তাই সেখানে সিটি কর্পোরেশন কাজ করতে পারছে না।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট