চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা পলাতক

বাঁশখালীতে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে পিটিয়ে খুন

নিজস্ব সংবাদদাতা , বাঁশখালী

২ আগস্ট, ২০১৯ | ২:২২ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালী উপজেলার শিলকুপে যৌতুকের জন্য ৫ সন্তানের জননী গৃহবধূ সামমা বেগম সাজু (৩৩) কে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে স্বামীর পরিবারের লোকজন পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহবধূর খুনের সংবাদ পেয়ে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার, পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল উদ্দীন ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। বাঁশখালী থানার এস. আই. আব্দুল কুদ্দুছ নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের পর সুরতাহাল তৈরী করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করেছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে স্বামীর পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুল কাদের বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আসামি করে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গ-ামারা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাহেবুরা বাড়ি নজির আহমদের কন্যা সামমা বেগম প্রকাশ সাজুর (৩৩) সাথে ২০০৪ সালে পার্শ্ববর্তী শিলকুপ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মনকিরচর গ্রামের পেয়ারজান বাড়ির মো. ইছমাইলের ছেলে মোস্তাক আহমদের (৪০) সামাজিকভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের কয়েক বছর পর তার স্বামী মোস্তাক আহমদ তার ভাই আবুল কাশেমসহ পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময় তাকে (সাজুকে) শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। এ নিয়ে গৃহবধূ সামমা বেগম সাজু (৩৩) নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়ি গ-ামারায় কয়েকবার চলে যান। সামাজিক বৈঠকের পর ছেলে সন্তানদের দিকে তাকিয়ে সাজু পুনরায় স্বামীর ঘরে ফিরে আসেন। তবুও স্বামীর পরিবার দফায় দফায় নির্যাতন বাড়াতেই থাকে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল ৮-৯ টার দিকে দেবর, স্বামী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে মারধর ও শ্বাসরোধের মাধ্যমে নির্যাতন করে। এতে সামমা বেগম সাজু (৩৩) মৃত্যুরকোলে ঢলে পড়লে পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা চৌকিদার দফাদারের মাধ্যমে পুলিশকে খবর দেয়।
বাঁশখালী থানার এস. আই. আব্দুল কুদ্দুছ ঘটনা স্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেন।
গ-ামারা ইউনিয়নের সদস্য আলী নবি বলেন, গ-ামারার সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে ছিল সামমা বেগম (সাজু), ৪ ভাই ৩ বোনের মধ্যে আদরের ছিল সে। সামাজিকভাবে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই শুনা যাচ্ছিল নির্যাতনের কাহিনী। স্বামী সাগরে মাছ ধরার কাজে মাঝি হিসাবে কাজ করে।
নিহতের ভাই আব্দুল কাদের, আবদুল মতিন, ভাগিনা শহিদুল ওয়ারেছ বলেন, ‘সংসার টিকানোর জন্য অনেক সহায়তা করা হয়েছে। নির্যাতনের ধারাবাহিকতা ছিলনা। অনেকবার সাজুকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত মারধর করে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে’।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত গৃহবধূর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খুনের ব্যাপারটি অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট