চট্টগ্রাম শনিবার, ১১ মে, ২০২৪

আলোচনায় এমপি মোস্তাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২৭ জানুয়ারি, ২০২২ | ১:২৫ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা করে সমালোচনায় আসেন বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। এখন পৌর মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরীকে হেনস্তা করে ফের সমালোচনায় আসেন এমপি মোস্তাফিজুর রহমান। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, জামায়াত-বিএনপির লোক দিয়ে সংগঠন চালাচ্ছেন বাঁশখালীর এমপি। আওয়ামী লীগের লোকজন তার সঙ্গে নেই। তাই তিনি নিজস্ব বাহিনী ও জামায়াত-বিএনপির লোক দিয়ে সংগঠন চালাচ্ছেন। এমপি বাঁশখালীতে একক রাজত্ব কায়েম করতে চান। সে কারণে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে মুক্তিযোদ্ধারা যখন নানাভাবে সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন সেখানে বাঁশখালীর মুক্তিযোদ্ধারা অসহায় দিনযাপন করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। যার নমুনা গত ১৮ জানুয়ারি আমি একটি দাওয়াতে থাকাকালীন আমাকে পেটানো হয়েছে। তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তার ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি করে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুতি জানিয়েছেন।
পৌর মেয়র শেখ সেলিমুল হক বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, আমার বয়স এখন ৭৫। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। সেদিন হামলাকারীরা একজন মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, আমাকে প্রাণে মারতে না পেরে সেদিনের ঘটনার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমার চরিত্রহননের প্রয়াস চালিয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, সেদিন আমি ও পৌর যুবলীগ আহ্বায়ক হামিদ উল্লাহ উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হীরা মনির বাসায় সোফায় বসে নাস্তা করছিলাম। এসময় বাইরে থেকে কয়েকজন ব্যক্তি দরজা তালাবদ্ধ করে দেন। পরে সংঘবদ্ধ হয়ে ঘরে ঢুকে সিরাজ বলতে থাকে, এমপিকে গালি দিয়ে এখানে কি? আপনি এমপির বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলেছেন। এসময় ইলিয়াছ বলেন, ‘আপনি নৌকার বিরুদ্ধে, মোবাইল মার্কায় ভোট দিয়েছেন।’ শার্টের কলার ধরে আমাকে সোফায় বসা অবস্থা থেকে টেনে হিঁচড়ে নিচে নামিয়ে ফেলে। একপর্যায়ে মারধর করতে থাকে। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছে দেয়। ঘটনার পর থেকে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চলেছে এমপির লোকজন।
তিনি বলেন, বাঁশখালীর এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী আগে থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ক্ষুব্ধ। তিনি বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি বলে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধারা তার ডাকে সাড়া দেন না। নানা কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এমপির দূরত্ব আছে। এমপি প্রায় সময় মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ওপর হামলা করতে অনুসারীদের উৎসাহ দেন। যার কারণে গত দুই বছরে এমপির কোনও অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলার সহকারী কমান্ডার (অর্থ) আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম নগরের আহ্বায়ক শাহেদ মুরাদ শাকু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাবেল।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট