চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর আবু জাফর চৌধুরী

সামশুদ্দিন আহম্মদকে জিম্মি করে আমাদের অস্ত্র নিয়ে নেয় ক্যাপ্টেন করিম

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া

৯ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১:১৬ অপরাহ্ণ

বীর মুক্তিযোদ্ধা চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু জাফর চৌধুরী পটিয়া পৌরসদরের গোবিন্দারখীল গ্রামের চৌধুরী বাড়ির বাসিন্দা। ১৯৭০ সালে তিনি পটিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

এ বছরই চবি ইউওটিসির অধীনে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের তত্ত্বাবধানে তিন মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ২৭ মার্চ থেকে পটিয়া আবদুছ সোবাহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থানরত ইপিআরদের সাথে সংযুক্ত হন।

এপ্রিল মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পটিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে পটিয়া দখল করার পর ইপিআর কৌশলগত কারণে অবস্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন দিকে চলে যায়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর চৌধুরী এতথ্য জানান। তিনি বলেন, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ধলঘাটের প্রফেসর সামশুল ইসলামের অধীনে পটিয়ার সামশুদ্দিন আহমদসহ ৩২ জনের একটি গ্রুপ ভারতের ট্রেনিং শেষে পটিয়া আসে।

পরে মুক্তিযোদ্ধা সামশুদ্দিন আহমদ আমাকে সাথে নিয়ে চন্দনাইশের বরকল গ্রামের মরহুম মনিরুজ্জমান ইসলামাবাদীর বাড়িতে যাই। সেখানে তাঁর সন্তান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহজাহান ইসলামাবাদী একটি মুক্তিবাহিনী গড়ে তুলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে আমি ও সামশুদ্দিন আহমদ পটিয়া এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে হামলার পরিকল্পনা করি।

পটিয়ার বাহুলি গ্রামের এয়ার ফোর্সের সদস্য ফ্লাইট সার্জেন্ট সামশুল আলমকে অপারেশন করার জন্য খুঁজে নিই। তিনি পটিয়া আবদুছ সোবাহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। এরপর হাবিলদার আবুর নেতৃত্বে একটি রাজাকার ক্যাম্পে অপারেশন করলে সেখানে ৩/৪জন রাজাকার নিহত হন।

প্রফেসর আবু জাফর চৌধুরী জানান, এর কয়েকদিন পর সামশুদ্দিন আহম্মদ পটিয়ায় একটি বড় অপারেশন করার জন্য বোয়ালখালী কানুনগো পাড়ায় অবস্থানরত ক্যাপ্টেন করিমের কাছে যান। সেখানে ক্যাপ্টেন করিম কৌশলে সামশুদ্দিন আহমদকে আটকে রাখে এবং সামশুদ্দিন আহমদকে আমার কাছে একটি চিঠি দিতে বাধ্য করে।

চিঠিটি নিয়ে আসেন কেলিশহরের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা গনি। চিঠিতে লিখা ছিল আমাদের অস্ত্রগুলো ক্যাপ্টেন করিমের পাঠানো লোকের হাতে তুলে দিতে। তাঁর কথামত আমাদের অস্ত্রগুলো তাঁর হাতে তুলে দিই। পরে সামশুদ্দিন আহমদ ক্যাপ্টেন করিমের আটক অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসেন। আমি পরে নভেম্বর মাসে করল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার মৃনাল বড়–য়ার মাধ্যমে আবুল বশর, আবুল কালাম, বাহুলির মাহবুব রহমান, বুধপুরা গ্রামের হাবিলদার সুলতান গ্রুপের সাথে সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় অপারেশনে অংশগ্রহণ করি। তিনি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন সরকারি কলেজে প্রভাষক উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট