চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চসিকের আবেদনে মন্ত্রণালয়ের না

ইফতেখারুল ইসলাম 

২৩ অক্টোবর, ২০২১ | ১২:৫৭ অপরাহ্ণ

শুল্ক দিয়েই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) মেডিকেল বর্জ্য ধ্বংসে মেডিকেল ইনসিনারেটর মেশিন আমদানি করতে হবে। এই মেশিন আমদানিতে সম্প্রতি চসিক নির্ধারিত শুল্ক ও কর মওকুফের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। তাতে মন্ত্রণালয়ের সায় মিলেনি।

মেডিকেল বর্জ্যরে মধ্যে অন্যতম হল, ব্যবহৃত সুঁচ, সিরিঞ্জ, রক্ত ও পুঁজযুক্ত তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, টিউমার, ওষুধের শিশি, রক্তের ব্যাগ, স্যালাইনের ব্যাগ, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রভৃতি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চসিকের আবেদনের বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গ্রহণ করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে পাঠায়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ইনসিনারেটরের সকল যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ও কর বাবদ সকল ব্যয় চসিককে নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদানের জন্য বলেছে। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের নগর উন্নয়ন বিভাগ থেকে গত ১৯ অক্টোবর চসিককে একটি চিঠি দেয়।

জানা যায়, চসিক জাইকার কারিগরি সহযোগিতা প্রকল্প ‘ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইন ঢাকা নর্থ সিটি, ঢাকা সাউথ সিটি এন্ড চিটাগাং সিটি কর্পোরেশন’ এর আওতায় মেডিকেল ইনসিনারেটর আমদানির উদ্যোগ নেয়। প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ইনসিনারেটর মেশিনটি আমদানি করা হবে জাপান থেকে। তবে জাইকার সঙ্গে চসিকের শর্ত ছিল যে, আমদানিতে শুল্ক ও কর চসিক পরিশোধ করবে। তাই চসিক সরকার টু সরকার (জি টু জি) পদ্ধতিতে শুল্ক ও করমুক্ত আমদানি করতে গত ২৭ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। চিঠির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন শাখার এক চিঠিতে বলা হয় ‘বিষয়টি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এখতিয়ারাধীন। বিধায় শুল্ক ও কর মওকুফ করার সংশ্লিষ্ট বিষয়টি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছিল। বিভাগটি উপযুক্ত বিষয়ে শুল্ক ও কর মওকুফের বিষয়ে বিধিগত সুযোগ নেই বলে জানায়।

জানতে চাইলে চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক বলেন, মেডিকেল বর্জ্যগুলো পৃথকভাবে ধ্বংস করতে জাইকার একটি প্রকল্পের অধীনে ইনসিনারেটর ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি মেডিকেল বর্জ্য ধ্বংস করার সর্বশেষ অত্যাধুনিক পদ্ধতি। প্রকল্পে শর্ত ছিল যে, মেশিনটি আমদানিতে শুল্ক ও কর চসিক বহন করবে। তবে আমরা চেয়েছিলাম, জি টু জি পদ্ধতিতে শুল্ক ও কর মওকুফ করতে। এখন মন্ত্রণালয় থেকে মওকুফ করা না হলে চসিককেই তা বহন করতে। এ ক্ষেত্রে হয়তো চসিকের প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মেডিকেল বর্জ্যগুলো অত্যন্ত সংক্রামক ও বিপজ্জনক। এগুলো মারাত্মক রোগসমূহের জীবাণু বহন করে। এরমধ্যে আছে হেপাটাইটিস বি, সি এবং এইচআইভি/এইডস ইত্যাদি। মেডিকেল বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনা না হলে সেটি সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে মিশে সম্পূর্ণ বর্জ্যকেই বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলে। অভিযোগ আছে, চসিকের সঙ্গে সেবা সংস্থা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মেডিকেল বর্জ্য অপসারণের চুক্তি আছে। কিন্তু সংস্থাটি মেডিকেল ও সাধারণ বর্জ্য পৃথক না করে বর্জ্যগারে গিয়ে সেগুলো আবার নিলামে বিক্রি করে। ফলে অপরিশোধিত মেডিকেল বর্জ্য আবারও দূষিত অবস্থায়ই ফিরে আসে। এই অপরাধে ম্যাজিস্ট্রেট ওই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করে। কিন্তু তাতেও তাদের সেবার মান বাড়েনি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট