চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

পাহাড় কেটে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণ কক্সবাজারে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কক্সবাজার

১০ জুন, ২০২১ | ২:৫৪ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের কলাতলী চন্দ্রিমা এলাকায় রাস্তার পাশে পাহাড় কেটে পাহাড়ের উঁচুতে সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে একতলা ভবন। ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা রয়েছে আতঙ্কে। ভারি বৃষ্টিপাতে যেকোন সময় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

জানা গেছে, নেজাম উদ্দিন নামের একব্যক্তির কাছ থেকে পাহাড়ের উপর সরকারি জমিটি ক্রয় করেন মাহাফুজুর রহমান। এরপর গত দুই মাস ধরে পাহাড়ের উপরে পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে পাহাড়ের চারপাশে পলিথিনের আড়ালও দেওয়া হয়েছে। পলিথিনের আড়ালে পাহাড় কাটা ও ভবন নির্মাণ চলছে তড়িগড়ি করে।

পাহাড়ের নিচে জাফর আলম নামে এক দোকানদার বলেন, আসলেই পাহাড়টি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতি বর্ষায় পাহাড়টির বিভিন্ন অংশ ধসে পড়ে। এখন পাহাড়ের উপরের একপাশে ভবন নির্মাণ করেছে মাহাফুজ। খুব ঝুঁকিতে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখনো নির্মাণকাজ চলছে। প্রতিবছর যেভাবে পাহাড়টি ধসে পড়ে, সেভাবে এবারও পড়লে পুরো বিল্ডিংটি মানুষের বসতবাড়ি ও দোকানের উপর পড়বে। তাছাড়া পাহাড়ের পানির ¯্রােতেও ভবনটি ধসে পড়তে পারে। বর্তমানে সেখানে পাহাড়ও কাটা হচ্ছে। বর্ষার পানির সাথে পাহাড়ি মাটি এসে বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ছে। এমনকি ওই ভবনে উঠার জন্য পাহাড় কেটে সিঁড়িও তৈরি করা হয়েছে। সিঁড়ি দেখতেও ঝুঁকিপূর্ণ। এমনভাবে পাহাড়ের উপরে ভবন করা হয়েছে, নিচে বসবাসকারীরা আতঙ্কে রয়েছে।

চন্দ্রিমা এলাকার একজন সমাজসেবক বলেন, পাহাড় কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণের সময় বনবিভাগের লোকজন গিয়ে বাধা দিয়েছিল বলে শুনেছিলাম। কিন্তু পরে ঠিকই ভবন নির্মাণ করছে। এখন কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে। এমনকি এক সপ্তাহ আগে নোহা গাড়ি নিয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)’র কয়েকজন লোক এসেছিল। এ সময় মাহাফুজের ভবনটি পরিদর্শন করে উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। তিনিও ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান।

মাহাফুজুর রহমান বলেন, নেজাম উদ্দিনের কাছ থেকে পাহাড়ি জমিটি ক্রয় করেছি অনেক আগে। এখন ঘর তৈরি করছি। প্রথমে বনবিভাগের লোকজন এসেছিল। বাধাও দিয়েছিল। পরে কোনরকম তাদের সাথে যোগাযোগ করে কাজ করছি। কিছুদিন আগে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কয়েকজন লোক তার ভবন পরিদর্শন করে বলে তিনি জানান। তারা ভবন উচ্ছেদ করবে বলেও জানিয়েছিল। সবকিছু স্বীকার করে একপর্যায়ে সংবাদপ্রকাশ না করার অনুরোধ করেন তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মইনুল হক বলেন, পাহাড় কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণের বিষয়টি আমি শুনেছি বিভিন্ন মাধ্যমে। দ্রুতসময়ে সেখানে পরিদর্শন করে পাহাড় কর্তনকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নু-এমং মারমা মং বলেন, পাহাড় কেটে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন উচ্ছেদ করা হবে। একই সাথে মামলাও দায়ের করা হবে। বিষয়টি দেখে শুনে দ্রুতসময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব (উপ-সচিব) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর রাশেদ।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট