চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আনসার সদস্যদের দৌরাত্ম্য কমেনি

চমেক হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ জুন, ২০১৯ | ২:২২ পূর্বাহ্ণ

‘আনসার কমান্ডারকে ডেকে
একাধিকবার বলা হয়েছে।
তবে তিনি কোন ব্যবস্থা না
নেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে’

কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের। দীর্ঘদিন থেকেই তাদের বিরুদ্ধে রোগীদের কাছ থেকে নামে-বেনামে অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগ থাকলেও এ বিষয়ে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না হাসপাতাল ও সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ। যদিও চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব বিষয়ে সংস্থাটির কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার নজরে দেওয়া হয়েছে। চাইলেও তাদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া যাবে না। তবুও আমরা বিষয়টি বিশেষ নজরে রেখেছি।
একাধিক আনসার সদস্যের অর্থ আদায়, রোগী ও তার স্বজনদের মারধরের বিষয়টি নজরে আসার পর এসব দাগ মুছতে শক্ত অবস্থান নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে হাসপাতাল প্রশাসন থেকে একটি কমিটিও করা হয়। যার মধ্যে সম্প্রতি কয়েকজন আনসারকে টাকাসহ হাতেনাতেও আটক করেছে ওই কমিটি। এত কিছুর পরও থেমে নেই তাদের অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম।
সম্প্রতি হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাসেল নামে এক আনসার সদস্য ওয়ার্ডে প্রবেশের নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বয়ং আনসার কমান্ডারের নজরে আসলেও এ বিষয়ে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। অভিযোগ রয়েছে, এই আনসার সদস্য ওয়ার্ডে প্রবেশের নামে প্রতিবার রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করেন। আর কেউ টাকা দিতে অনিহা প্রকাশ করলে তাকে ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে দেন না তিনি। বরং স্বজনের সাথে অসদাচরণ ও দুর্ব্যবহার করেন এ সদস্য।
অজ্ঞাত রোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী নাঈম পূর্বকোণকে বলেন, ‘একজন অজ্ঞাত রোগীকে ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ঔষধ ও চিকিৎসার প্রয়োজনে ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে চাইলে ওই আনসার সদস্য টাকা ছাড়া প্রবেশে বাধা দেন। যতবার প্রবেশ করতে হয়, ততবার তাকে ২০ টাকা করে দিতে হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার কারণে কিছুই বলতে পারিনি’।
বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে এতদিন অভিযোগ ছিল স্পেশাল আয়া-বয় ও দালালদের বিরুদ্ধে। তবে এখন নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বিপাকে পড়তে হয়েছে। যার কারণে হাসপাতালের পরিচালক একাধিকবার আনসার কমান্ডারকে ডেকে এসব বিষয়ে কড়া নির্দেশনাও দিয়েছেন। তবুও কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না আনসার সদস্যদের এমন অনিয়মগুলো। হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, সার্বিক ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তারা বারবার এমন ঘটনা করে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ‘বিষয়গুলো আমাদের জানা আছে। এই বিষয়ে আনসার কমান্ডারকে ডেকে একাধিকবার বলা হয়েছে। তবে তিনি কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এমন ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। আমরাও সরাসরি কোন ব্যবস্থা এবং তাদের বের করে দিতে পারছিনা। তা না হলে বহু আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হতো’।
জানতে চাইলে হাসপাতালের আনসার কমান্ডার আবুল কাশেম পূর্বকোণকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়াদের মধ্যে সম্প্রতি একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এর পর থেকে আমাদের কোন সদস্য এমন কাজে জড়িত নেই। তবুও যদি কোন অভিযোগ পাওয়া যায়, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট