চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

এন্টিজেন টেস্ট: নগরীতে শুরু, শীঘ্রই গ্রামে

ইমাম হোসাইন রাজু 

৫ এপ্রিল, ২০২১ | ১২:১৫ অপরাহ্ণ

অবশেষে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে কোভিড পরীক্ষার বহুল কাঙ্খিত এন্টিজেন টেস্ট। আর এতে করে অল্প সময়ের মধ্যেই ফলাফল জানতে পারছেন রোগীরা। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এ কার্যক্রম চালু হয়েছে গেল কিছুদিন আগেই। নতুন করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও এমন কার্যক্রম চালু করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার জন্য গতকাল (রবিবার) ২০ হাজার কিট পেতে একটি চাহিদা পত্রও পাঠানো হয়েছে। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।

এদিকে, শহুরের প্রধান এ দুই হাসপাতাল ছাড়াও গ্রাম পর্যায়ে এমন সেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। চট্টগ্রামের উপজেলা পর্যায়েও এ পরীক্ষা ছড়িয়ে দিতে এরইমধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে প্রায় ৪৫ স্বাস্থ্যকর্মীকে। বাকি সকল কার্যক্রম শেষ হলে খুব দ্রুতই গ্রাম পর্যায়েও এমন পরীক্ষা শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

এর আগে গত ২৩ মার্চ স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতালে কোভিড ১৯ র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট চালু করতে নির্দেশনা দেয়া হয়।  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের  অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে পুনরায় কোভিড ১৯ সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এমতাবস্থায় কোভিড ১৯ আক্রান্ত রোগীর দ্রুত শনাক্তকরণ ও আইসোলেশন করার নিমিত্তে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতালে কোভিড ১৯ র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট চালু করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিতরণের জন্য সকল বিভাগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে এন্টিজেন কিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  বিষয়সমূহ বিবেচনা করে বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় হতে কোভিড ১৯ র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট কিট সংগ্রহপূর্বক এর ব্যবহার কার্যক্রম জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কার্যক্রম চালু করার জন্য অনুরোধ করা হলো। বিষয়টি অতীব জরুরি।

যদিও এমন নির্দেশনা আসার তিনদিন আগে তথা গেল ২০ মার্চ থেকে এন্টিজেন টেস্ট কার্যক্রম শুরু করে দেয় চট্টগ্রামের প্রথম ডেডিকেটেড জেনারেল হাসপাতাল। ইতোমধ্যে এ হাসপাতালটিতে এক হাজারেরও বেশি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ টেস্টে যাদের ফলাফল নেগেটিভ আসছে, তাদের আবার পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. আবদুর রব পূর্বকোণকে বলেন, এন্টিজেন টেস্টের জন্য প্রথমে যাদের উপসর্গ আছে, তাদের নমুনা সংগ্রহ করে নির্ধারিত কিটে দেয়া হয়। ওই কিটে যাদের দু’টি দাগ দৃশ্যমান দেখা যাচ্ছে তাদের পজেটিভ আর একটি দাগ যাদের দেখা যায় তাদের নেগেটিভ ধরা হয়। তবে পরীক্ষায় যাদের নেগেটিভ আসছে, তাদের আবারও পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হচ্ছে।

এদিকে, উপজেলা পর্যায়েও এ পরীক্ষা ছড়িয়ে দিতে এরিমধ্যেই প্রতি উপজেলায় ৩ জন করে এবং মহানগরে তিনজনসহ মোট এখন পর্যন্ত মোট ৪৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ পরীক্ষার ফলে দ্রুত রোগ শনাক্ত হওয়ায় সুফল পাওয়া যাবে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। আর জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এ কার্যক্রম শুরু হলে দ্রুতই রোগীদের শনাক্ত করে পৃথক করা যাবে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির পূর্বকোণকে বলেন, ‘চমেক হাসপাতালে কার্যক্রম চালু করতে ইতোমধ্যে ২০ হাজার কিট চেয়ে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়েও শীঘ্রই কার্যক্রম শুরু করা হবে। অন্তত প্রথম দিকে ফটিকছড়ি, লোহাগাড়া ও সীতাকুণ্ড দিয়ে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা উপকূলীয় সন্দ্বীপ, হাতিয়াসহ অন্য উপজেলাগুলোতেও শুরু করা হবে’। পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ হলেই তা শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট