চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

কোটিপাতি কিশোর জালালকে খুঁজছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ জুন, ২০১৯ | ৬:৫১ অপরাহ্ণ

টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে জালাল। এই কিশোর বয়সেই নিজ অর্থে রীতিমত আলিশান জীবন-যাপন করছে সে।

টেকনাফ, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় তার অবাধ বিচরণ। নিয়মিত কক্সবাজারের বিভিন্ন নামীদামি হোটেলেও তার অবস্থান। অল্প বয়সে জালালের হঠাৎ এই উত্থানের পেছনে রয়েছে ইয়াবা ট্যাবলেটের কারিশমা। তার এমন উত্থানে অবাক তার এলাকাবাসী ও স্কুল-বন্ধুরাও।

কিশোর কোটিপতি জালাল উদ্দিন (১৭) হ্নীলা ইউনিয়নের বড় লেচুয়াপ্রাং এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই কোটি কোটি টাকার মালিক সে। তবে স্কুলজীবনেই ইয়াবা নিয়ে দু’বার কারাগারে যায় জালাল। রয়েছে মামলাও। কিন্তু চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে কৌশলে আত্মগোপনে রয়েছে সে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সর্বশেষ গত শনিবার র‌্যাবের একটি দল তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ইয়াবা ব্যবসা ও সিন্ডিকেট সম্পর্কে সব তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে বলে টেকনাফ থানা পুলিশসূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) এম এস দোহা বলেন, জালালের ব্যাপারে পুলিশের অবস্থান পরিষ্কার ও সুস্পষ্ট। ইতিমধ্যে তার বাড়িতে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছি। সে বর্তমানে আত্মগোপনে থাকায় তাকে আটক করতে সক্ষম হতে পারিনি। তাকে আটক করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ জালাল পড়াশোনার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। ড্রেস পরিহিত অবস্থায় স্কুল ব্যাগে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে নির্বিঘ্নে ইয়াবা পাচার করেছে । অল্প বয়স এবং অল্প সময়ে বিপুল অর্থের মালিক হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে সে। অবৈধ অর্থ তাকে বেপরোয়া করে তুলেছে।

এম এস দোহা বলেন, জালালের ইয়াবা ব্যবসা এবং পাচারের অন্যতম ‘মাধ্যম’ ছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্প-কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের রোহিঙ্গা সদস্যদের সকল নগদ টাকা ও সম্পদ জমা থাকে তার কাছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইয়াবা ব্যবসায়ী আলম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। রোহিঙ্গা আলম ছিল তার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য। তার সমস্ত সম্পত্তি, টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার জমা আছে ইয়াবা ব্যবসায়ী জালালের কাছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করলে নিহত রোহিঙ্গা ইয়াবা আলমের সকল সম্পদের সন্ধান ও পুরো সিন্ডিকেটের নাগাল পেতে পারে বলে ধারণা তাদের।

এসব বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন বলেন, আমি হ্নীলা উচ্চ বিদালয় থেকে সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। স্কুলের শিক্ষকসহ সবাই আমাকে চেনেন। তবে আমি এখন ইয়াবা ব্যবসা করি না। একসময় বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতাম। তবে ইয়াবা আমার না হলেও আমি ইয়াবাসহ আটকের ঘটনায় হয়রানির শিকার হয়ে জেল খেটেছি।

বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে জালাল বলেন, ইয়াবা কারবারে আমার কোনো সহযোগী নেই।

 পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট