চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

চলতি সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের বিআরটিসি বাস চালু

প্রাথমিকভাবে দুই রুটে চলবে গাড়ি

ইমরান বিন ছবুর

২৩ জুন, ২০১৯ | ১:৫৯ পূর্বাহ্ণ

চলতি সপ্তাহে চালু হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বাস। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ১০টি বাস নগরীর বিআরটিসি’র বাস ডিপোতে এসে পৌঁছেছে। এরমধ্যে পাঁচটি ডাবল ডেকার (দোতলা) এবং পাঁচটি সিংগেল ডেকার (একতলা) বাস। এই ১০টি বাস একসাথে ৫৯০ জন শিক্ষার্থী যাতায়াত করতে পারবে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য দুটি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। কিছুদিন যাতায়াতের পর প্রয়োজনে রুট বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ। গতবছর নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি তোলেন। আন্দোলন শেষে ঢাকার নয় দাবি ছাড়াও চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা আরো কয়েকটি দাবি তোলেন প্রশাসনের কাছে। শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে সাবেক নগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুল আজিম রনি জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। নয় দাবি ছাড়াও এরমধ্যে ছিল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা এবং রাস্তা পারাপারের স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড রাখা।
এ সম্পর্কে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য ১০টি বিআরটিসির বাস ঈদের আগে এসে পৌঁছেছে। কোন কোন রুটে গাড়ি চলবে এবং কিভাবে চলবে সে ব্যাপারে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। কাজ শেষ হলে তারা আমাদের জানিয়ে দেবে এবং আমরা তাদের সাথে বসে কখন থেকে বাস চালু করা যায় তা সিদ্ধান্ত নিব। তবে প্রাথমিকভাবে দুটি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। ২নং গেট থেকে আগ্রাবাদ পর্যন্ত দুটি রুটে গাড়ি চলাচল করবে। পরে প্রয়োজন হলে রুট পরিবর্তন বা বৃদ্ধি করা হবে।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু ১০টি বাস চলবে, বাসগুলোর ড্রাইভারের বেতন, তেল ও মেরামত খরচ কিভাবে বহন করবে তার জন্য আমরা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিব। বিআরটিসি এবং স্কুল প্রধানদের নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন শীঘ্রই মিটিং করা হবে। মিটিং এ যাবতীয় বিষয় আলাপ-আলোচনা করে কখন থেকে বাস চালু করতে পারি সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। গত বছর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর নগরীর বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাদের একটি স্মারকলীপি দেন। স্মারকলিপিতে বাসের কথা উল্লেখ ছিল।
এ সম্পর্কে বিআরটিসি’র বাস ডিপোর ম্যানেজার (অপারেশন) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঈদের আগেই স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য বিআরটিসি’র ১০টি বাস আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। এরমধ্যে পাঁচটি ডাবল ডেকার (দৌতলা) এবং পাঁচটি সিংগেল ডেকার (একতলা)। প্রতিটি দোতলা বাসে ৭৩টি এবং একতলা বাসে ৪৫ টি সিট রয়েছে। চলতি সপ্তাহের বুধবার নাগাদ প্রাথমিকভাবে দুটি বাস শিক্ষার্থীদের নিয়ে চলাচল করবে আশা করছি। এক সপ্তাহ দেখার পর প্রয়োজন হলে আমরা রুট পরিবর্তন করবো।
মুস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে বাস যাতায়াতের জন্য দুটি রুট সিলেক্ট করেছি। পরে প্রয়োজন হলে রুট আরো বাড়ানো হবে। একটি রুট হচ্ছে নগরীর ২নং গেট হয়ে জিইসি-টাইগারপাস হয়ে আগ্রাবাদ। আর অন্য রুটটি হচ্ছে ২নং গেট হয়ে চকবাজার- কোতোয়ালী- নিউমার্কেট-টাইগারপাস-আগ্রাবাদ। এই দুটি রুটে কতগুলো স্কুল এবং কতজন শিক্ষার্থী রয়েছে ইতোমধ্যে আমরা সে বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। স্কুল প্রধান এবং ডিসি অফিস মিলে সিদ্ধান্ত নিবে গাড়ির খরচ কিভাবে মেনটেইন করবে। এটি সরকারের একটি বিশেষ প্রকল্প। এই প্রকল্প থেকে সরকার লাভ করবে না। কিন্তু ডাইভার ও তেল খরচ কিভাবে দেবে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানান বিআরটিসি’র এই কর্মকর্তা।
এ সম্পর্কে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নরুল আজিম রনি বলেন, গত বছর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। জেলা প্রশাসক আমাদের আশ^স্ত করেছিলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু পরিবহনের ব্যবস্থা করবেন। অবশেষে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও বিআরটিসি সূত্রে জানতে পারলাম ঈদের আগে ১০টি গাড়িগুলো এসেছে। এই গাড়িগুলো আনার ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও জেলা প্রশাসকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট