চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

পটিয়ায় চলতি বছরে স্মৃতিসৌধ হবে

পটিয়া সংবাদদাতা

১২ মার্চ, ২০২১ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ

পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নের মুজাফফরাবাদে যুদ্ধকালীন ৩শতাধিক শহীদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মাণাধীন বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ অর্ধনির্মিত অবস্থায় একবছর ধরে পড়ে আছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এটি বৃহত্তর পরিসরে নির্মাণ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রাণালয়ের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ২রা মে পাকবাহিনী ও এদেশের রাজাকার, আলবদরের সহযোগিতায় আক্রমণ চালিয়ে মুজাফফরাবাদ হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে এলাকার প্রায় ৩ শতাধিক নারী-পুরুষ শহীদ হন। প্রতিবছর ঐদিন তাদের স্মরণে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এই নিয়ে মুজাফফরাবাদ শহীদ স্মৃতি প্রাইমারি স্কুলের পাশে সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ কর্তৃক মুজাফফরাবাদ গ্রামে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের বরাদ্দ দেয়। এক বছরের মধ্যে ঠিকাদার পূর্ণাঙ্গ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ না করে অর্ধসমাপ্ত করে রাখে। ইতোমধ্যে স্থানীয় মুজাফফরাবাদ বধ্যভূমি স্মৃতিসংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে আরো বৃহত্তর পরিসরে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রাণালয়ের বরাবরে আবেদন করে। এতে ২০১৯ সালে ৯ শতক জায়গার উপর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রাণালয় থেকে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু জায়গা জটিলতার কারণে তা এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি।

এব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ দেয়া নির্মিত স্মৃতিসৌধ অর্ধসমাপ্ত হওয়ায় স্থানীয় লোকজন তা বৃহত্তর পরিসরে নির্মাণের জন্য তদবির শুরু করে। সে থেকে জেলাপরিষদ থেকে দেয়া বরাদ্দ কাজ বন্ধ রাখা হয়। এব্যাপারে মুজাফফরাবাদ বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপিকা ড. তাপসী ঘোষ রায় ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সেন জানিয়েছেন, জেলা পরিষদ থেকে দেয়া বরাদ্দ দিয়ে নির্মিত স্মৃতিসৌধ খুব ছোট হওয়ায় পরিষদের পক্ষ থেকে বৃহত্তর আকারে করার জন্য মুক্তিযোদ্ধার মন্ত্রাণালয়ের নিকট দাবি জানায়। ২০১৯ সালে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রাণালয় থেকে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু জায়গা জটিলতার কারণে তা এখনো বাস্তাবায়ন করা যাচ্ছে না। এব্যাপারে পটিয়ার হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি জানান, বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণে জেলা পরিষদের দেয়া বরাদ্দ ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রাণালয় থেকে দেয়া বরাদ্দ খুবই নগণ্য। সেই বরাদ্দ দিয়ে একটি বৃহত্তর পরিসরে দৃষ্টিনন্দন বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা যাবে না। তাই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রাণালয়ের ১০ গন্ডা জায়গার উপর প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নান্দনিক বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য তার পক্ষ থেকে ডিও লেটার দেয়া হয়েছে বলে জানান। আশা করি চলতি অর্থ বছরে সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এতে ৩ শতাধিক শহীদের নামফলকসহ আরো মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন ইতিহাস সম্বলিত স্মৃতিচিহ্ন লেখা থাকবে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট