একেতো পুরোনো লাইব্রেরি ভবন সরাতেই সময় ক্ষেপণ হয়েছিল পুরো এক বছর। তবু কাজ শুরু হলেও মাঝপথে এসে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় মহামারী করোনা। পরিস্থিতি কিছুটা কেটে ওঠে কাজের গতি পেতে শুরু করলেও নতুন আপদ বাধে শহীদ মিনার অংশ নিয়ে। সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। তাতে এ অংশের কাজে গতি আটকে যায় বেশ কিছুদিন। সবশেষ সে জটিলতাও কাটিয়ে জনবহুল এলাকা হওয়ায় বেগ পেতে হচ্ছে কার্যক্রমে। উল্লেখযোগ্য এ চার কারণেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাচ্ছে না চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের।
এমন বাস্তবতার মধ্যেই ইতোমধ্যে দুই দফায় মেয়াদ বাড়াতে হয়েছে এ প্রকল্পের। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বশেষ মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। ইতোমধ্যে সবমিলিয়ে কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৬৫ ভাগ। কিন্তু বাকি ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও দৃঢ়ভাবে বলছেন আগামী বছর জুনের মধ্যেই কাজ শেষ করার কথা।
এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বরে একনেকে পাস হয় চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স বা সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প। ২৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকার এ প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ১৬৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার কাজ চলমান আছে। যেখানে মুসলিম ইনস্টিটিউট ভেঙে ফেলে মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ১৫ তলা বিশিষ্ট একটি গ্রন্থাগার, ৮ তলা বিশিষ্ট মিলনায়তন ভবন ও একটি মাল্টিপারপাস হল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া থাকবে রাস্তার এপার-ওপারকে সংযুক্ত করার জন্য পাবলিক প্লাজা, ওপেন এয়ার থিয়েটার, মিউজিয়াম, পাবলিক প্লাজা। পাবলিক প্লাজার ওপর অংশেই নির্মাণ হবে নতুন শহীদ মিনার। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফা মেয়াদকাল বাড়াতে হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩ মাচ মেয়াদকাল বাড়লেও বাড়ানো হয়নি কোন ব্যয়।
গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ পূর্বকোণকে বলেন, ‘একাধিক কারণেই প্রকল্পের কাজে ধীর হয়েছিল। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ চারটি। তাতে করে কাজের মেয়াদকাল বাড়াতে হয়েছে। তবে ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কাজের গতি পূর্বের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। লাইব্রেরি ভবন ও অডিটরিয়াম ভবনের কাজ প্রায় শেষ, শুধুমাত্র শহীদ মিনারের অংশের কাজ চলমান। সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। কাজ শেষ হলে এই এলাকাটি একটি দৃষ্টি নন্দন হিসেবে স্থান পাবে বলেও আশাবাদি’।
এদিকে, চট্টগ্রামের বৃহৎ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের বই এবং তথ্যের চাহিদা যেমন পূরণ হবে, তেমনি নগরে সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে নতুন গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার তাদিগ সংস্কৃতিপ্রেমীদের।