চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনার ঝুঁকি এড়াতে সিদ্ধান্ত

পর্যটন-বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ মার্চ, ২০২০ | ২:৪৫ পূর্বাহ্ণ

  • কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, কুয়াকাটা
    ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাসহ বন্ধ হলো নগরী
    ও উপজেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোও

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে চট্টগ্রামে সব ধরনের পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
এদিকে কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও কুয়াকাটা ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা ও নিরুৎসাহিত করেছে প্রশাসন। করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে পর্যটন শহর কক্সবাজারে পর্যটক আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
করোনাভাইরাসের কারণে খাগড়াছড়ির সব পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার রাতে জেলা প্রশাসনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। এর আগে খাগড়াছড়িতে বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল প্রশাসন। একই সাথে খাগড়াছড়ি ভ্রমণে দেশি পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এবং স্থানীয়দের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে নগরীর সবগুলো বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ বৃহস্পতিবার চিঠি দেয়া হবে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া এবং জনসমাগম হয় এমন এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এছাড়া, গতকাল বিকেলে সিএমপির পক্ষ থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় মাইকিং করে পর্যটকদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন এলাকায় জনসমাগম না করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ছুটি পেয়ে গত ১৭ মার্চ নগরীর সবগুলো বিনোদনকেন্দ্রে ভিড় জমান শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বিনোদনকেন্দ্রের এ দৃশ্য প্রশাসনের নজরে এলে গতকাল বুধবার সিএমপি থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসাথে নগরীর সবগুলো বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক।
এ সম্পর্কে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, ডিসি হিল, কাজির দেউরি শিশু পার্ক, কর্ণফুলী শিশু পার্ক, জাম্বুরি পার্ক, সিআরবি, ফয়’স লেক, স্বাধীনতা পার্ক, জাম্বুরি পার্কসহ সব ধরনের বিনোদন কেন্দ্রও বন্ধ থাকবে। সব বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার জন্য আজ বৃহস্পতিবার চিঠি পৌঁছে যাবে। প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের না হয় অনুরোধ করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময়টাতে শিক্ষার্থীরা যাতে বাসায় অবস্থান করে তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। কেউ যাতে কোচিং সেন্টার বা কোথাও ঘুরতে না যায়, সে ব্যাপারে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। কোন কোচিং সেন্টার খোলা থাকলে জেলে প্রেরণসহ কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।
আমাদের সীতাকু- সংবাদদাতা জানান, করোনা প্রতিরোধে সীতাকু-ে তিন পর্যটন স্পট বন্ধ
ঘোষণা করেছেন ইউএনও। গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় এক ঘোষণায় করোনা ঝুঁকি এড়াতে জনস্বার্থে উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটন স্পট গুলিয়াখালী ও বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত এবং কুমিরা জেটিতে ভ্রমণ ও বিনোদন নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানান।
আমাদের আনোয়ারা সংবাদদাতা জানান, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গতকাল রাত ৮টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এছাড়া সকালে তিনি স্থানীয় কোচিং সেন্টারে অভিযান চালিয়ে কোচিং বন্ধ করে দেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত ১৬ মার্চ দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এই সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা যেন বাসায় অবস্থান করে, তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের অনুরোধ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে সে ঘোষণা অমান্য করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কোচিং সেন্টার চালু রাখা হয়। সে কারণে গতকাল বুধবার (১৮ মার্চ) নতুন করে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বিশ^জুড়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গতকাল বুধবার করোনাভাইরাসে (কোভিড ১৯) বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা আট হাজারের বেশি এবং আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখের বেশি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট